আমাদের দোষ কোথায়, অপরাধ কোথায়: কাদের

mzamin

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল দলকে অংশ নেয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,

আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। একা নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। বিএনপি যদি মন পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে তাহলে স্বাগত জানাই। তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে।

তিনি বলেন, এখন সংলাপ করার কথা বলেন। ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা সংলাপের জন্য আহবান করেছিলেন। বহুদল গেলেও বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে সংলাপে আমন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি কি ব্যবহার করেছিলেন। আমাদের সঙ্গে এই ব্যবহার, আমাদের দোষ কোথায়, অপরাধ কোথায়।

বৃহস্পতিবার তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া ষড়যন্ত্রের পথে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্র ক্ষমতার ইতিহাস নেই।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে গণতন্ত্রের মুকুটও ছিনতাই হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করা হয়। আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল না, তখন এই ২১ বছর গণতন্ত্র ছিনতাই হয়ে যায়। এই ২১ বছর আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্র চর্চা করতে দেয়নি। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ ক্ষমতা দখল করেছিল। তারপর খালেদাও একই কায়দায় স্বৈরাচারী গণতন্ত্র কায়েম করেছিল। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উপর বার বার হামলা করা হয়েছে। এসব প্রতিরোধ করেই আওয়ামী লীগ আজ এখানে এসেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যে কাজটা করেছেন সেটা হলো দেশের মধ্যে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। এই স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কে দিলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটা সময় নির্বাচন কমিশন ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে। সেটা স্বাধীনভাবে রূপ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার মাস্টার মাইন্ড বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপির কাকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ কোনো হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশে গণতন্ত্রের নামে পদে পদে কলঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির অবরোধে তো আওয়ামী লীগ বাঁধা দেয়নি। বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ডেকে এনে আগুন সন্ত্রাস করে সরকার পতন করতে চেয়েছিল। তারা সরকারের পতনের নামে আগুন সন্ত্রাস করবে ষড়যন্ত্র করবে, আওয়ামী লীগ যা ভেবেছিল তাই তারা করছে। যখন শুনেছিলাম বিএনপি পুলিশকে হত্যা করেছে, বিচারপতির বাসায় হামলা করেছে তখনই আমরা বুঝতে পেরেছি তাদের আন্দোলনের বারোটা বেজে গেছে। আগুন সন্ত্রাস করে সরকার পতন করা যায় না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগ অলিগলি খুঁজে পাবে না। কিন্তু ২৮ তারিখে দেখলাম বিএনপি অলিগলি দিয়ে পালিয়ে গেলো। বিএনপিতে এখন আর নেতা নেই, আছে শুধু আবাসিক প্রতিনিধি। নেত্রীকে বলেছিলাম, তিনি বলেছেন এক জন বাইরে থাক। তাকে ধরার দরকার নেই। তাকে ধরার জন্য সরকার জোর কোনো চেষ্টা করেনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একা ক্ষমতায় যেতে চাই না। সবাইকে নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, সবাই ভোটে আসুক। তবে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। একা নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। সব দলকে নির্বাচনে আসার আহবান জানাই। যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। বিএনপি যদি মন পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে তাহলে স্বাগত জানাই।

এসময় ওবায়দুল কাদের জানান, আগামী শুক্রবার বিকাল ৩টায় তেজগাঁও কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক হবে। এতে অংশ নেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। মনোনয়ন ফরম বিক্রয় উদ্বোধন করবেন তিনি। উদ্বোধনের পর থেকেই একই দিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সবাই কিনতে পারবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।

মানব জমিন