আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের উপর হুমকি এসেছে জানিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হামলা এসেছে, হুমকি এসেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে। কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান। বুধবার সকালে ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) আওয়ামী লীগ, দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর, ঢাকার দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কেন রাস্তাঘাট দখল করতে যাবে? সহিংসতায় জড়াবে? এই আন্দোলনের নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে অশুভ শক্তির হাতে চলে গেছে। সেই অবস্থায় আমরা নিশ্চুপ থাকতে পারি না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সারা দেশের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে আমাদের নেত্রীর পক্ষ থেকে নির্দেশ দিচ্ছি, সারা দেশে সতর্ক হয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে এই অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি, লালন করি, বিশ্বাস করি সেই চেতনায় বিশ্বাসীরা, আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে। কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এখানে শুধু পুলিশের শক্তি নয়, দলের যে শক্তি, যে শক্তি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ করেছে, যে শক্তি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছে, সেই শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই শক্তিকে আজ কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির এক নেতার ফোনালাপের ‘অডিও ক্লিপ’ থেকে বোঝা গেছে, ছাত্রদলের ক্যাডারদের সংঘর্ষ-হামলার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
এতে প্রমাণ হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত আবারও সহিংসতার পদে হাঁটছে। তারা তাদের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী সারা বাংলাদেশ থেকে এনে ঢাকা শহরে গুপ্তহত্যা করা শুরু করেছে। আরও অনেক বাজে পরিস্থিতি, ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির আহ্বান জানাচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে।
বিএনপি সারা দেশ থেকে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের ঢাকায় এনেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তারা নাশকতা ও নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে ৫-৬ বোতল পেট্রোল, বিপুলসংখ্যক লাঠিসোঁটা, ৬০টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র, শতাধিক ককটেল জড়ো করেছিল, যা পুলিশের তল্লাশিতে উদ্ধার করা হয়।
শিক্ষার্থীদের মা–বাবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের প্রাণপ্রিয় সন্তানদের এই ধরনের আত্মবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখুন। কারণ, বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা চরিতার্থ করার জন্য হত্যা, গুপ্তহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকদের অনুরোধ করব তাদের সন্তানদের বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বাহিনীর এই আন্দোলন থেকে দূরে রাখার।
ছাত্রসমাজের দাবির প্রতি সরকার সহনশীল উল্লেখ করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের রাষ্ট্রের অভিভাবক। সবার যৌক্তিক দাবি তার বিবেচনায় রয়েছে। আমরা আন্দোলনকারীদের বলব, আইনের পাশে থাকুন। সর্বোচ্চ আদালতের নির্ধারিত তারিখের শুনানির জন্য অপেক্ষা করুন। ধৈর্য ধারণ করুন। কোনো অপশক্তির উসকানি বা ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না। তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করি।
manabzamin