আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা মিলে আওয়ামী লীগ আমলে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল

logo

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(৭ মিনিট আগে) ১৯ মে ২০২৫, সোমবার, ১:৩৬ অপরাহ্ন

mzamin

facebook sharing button

দেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আমলা, ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবিদরা মিলে আওয়ামী লীগের আমলে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখন রাজনীতিবিদরা পালিয়ে গেছেন, ব্যবসায়ীরা ম্রিয়মাণ আর আমলারা পুরো শক্তি নিয়ে পুনরুজ্জীবিত।’

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক বহুপাক্ষিক অংশীজনের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। সিপিডি ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এ আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বাংলাদেশের গত ১৫ বছরের অর্থনীতির চালচিত্র নিয়ে শ্বেতপত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করার পরামর্শ ছিল বলে জানান দেবপ্রিয়। তবে যে প্রক্রিয়ায় এনবিআর দুইভাগ হয়েছে তা সঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

এনবিআর দুইভাগ করার বিষয়ে তিনি বলেন, এনবিআর নিয়ে এখন যে আলোচনা চলছে আমরা মনে করি যে দুইভাগ করাটা ঠিক হয়েছে। এটা উচিত এবং আমাদের শ্বেতপত্রের সুপারিশেও এটা ছিল। কিন্তু যেভাবে করা হয়েছে এটা ঠিক হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে আলোচনা ব্যাতিরেকে এটা করা হয়েছে এবং পেশাজীবীদের জায়গাকে সংকুচিত করে এবং অন্যান্য স্বায়ত্তশাসনের জায়গাকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে এই পদ্ধতি ঠিক হয়নি এবং এটাকে ঠিকমতো করাটা এখন বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের বেকারত্ব বেড়েছে ১৪ শতাংশ। একই সময়ে মূল্যস্ফীতির তুলনায় শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির হার অনেক নিচে। দেশের অর্থনীতি এখনো ঘুরে দাঁড়ায়নি।’

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কিনা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার বিনিয়োগ উপাদানগুলেকে খুব বেশি উৎসাহিত করতে পারছে না। আগামীর প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগতাড়িত নাও হতে পারে। সেটি হবে ভোগতাড়িত।’ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার দুর্বলতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতি এখনও প্রতিফলিত হয়নি। ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে এলে আমরা একটা সিগনাল পাবো।’

রাপিডের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, ‘এবার একটা ভিন্নধর্মী বাজেট হবে বলে আমরা আশা করি। কারণ বাজেট নিয়ে আগে যারা কথা বলেছে তারা এখন বাজেট প্রণয়ন করছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে যতগুলো কমিটি করেছে শ্বেতপত্র, টাস্কফোর্স ও কমিশন এসবের প্রতিফলন বাজেটে থাকা উচিত। কিছু প্রতিফলন এর মধ্যে দেখা গেছে, যেমন এবারের বাজেটের আকার কমছে, এডিপির আকার ও প্রকল্পের সংখ্যা কমানো হয়েছে।’

বাজেটে কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা, সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো থাকবে। ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই।’

কর জিডিপি রেশিও বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘২০৩৫ সাল পর্যন্ত আমার লক্ষ্যই যদি থাকে ১০ দশমিক ৫ সেটি অনেক কম। এটা হওয়া উচিত ১৪ বা ১৫। ১ কোটি ১৪ লাখ টিনধারী আছেন। তার মধ্যে ফাংশনাল কত সেটা বের করতে হবে। কর অব্যাহতি যৌক্তিক করতে হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here