- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৯ অক্টোবর ২০২২, ২০:১১
জাতীয় পার্টি কারো নিয়ন্ত্রণে রাজনীতি করবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। তিনি বলেন, কারো চাকর বা ক্রীতদাস হয়ে রাজনীতি করবো না আমরা। রাজনীতিতে আমরা বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে পারি, বন্ধু হয়ে রাজনীতি করতে পারি। রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি কারো গোলামি করবে না।
শনিবার দুপুরে জামালপুরের মির্জা আজম অডিটোরিয়ামে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে জামালপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মোস্তফা আল মাহমুদকে সভাপতি ও সদস্য সচিব মোঃ জাকির হোসেন খানকে সাধারণ সম্পাদক এবং কাজী খোকন খানকে সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষণা করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
এসময় জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট ও হাওয়া ভবন চাইনি বলেই ১৯৯৬ সালে আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের দলে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে। আমাদের দুর্বল করতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করিনি। আবার দেশের রাজনীতির স্বার্থে, গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং দলবাজি, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি রোধ করতে ২০০৮ সালে আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় গিয়ে ২০০৮ সালের পর থেকে প্রথমে জাতীয় পার্টিকে অঙ্গ সংগঠন বানাতে চেয়েছে। এরপর তারা আমাদের চাকর বানাতে চেয়েছে এখন রাজনীতিতে আমাদের কৃতদাস বানাতে চাচ্ছে। আমরা কারো ক্রীতদাস হতে রাজনীতি করছি না। আমরা দেশ ও দেশের মানুষের মুক্তির জন্য রাজনীতি করছি। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আমাদের সাথে আছেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টিকে আবারো দুর্বল করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। লোভ লালসা দিয়ে আমাদের মাঝে দালাল সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। অত্যাচার-অবিচার শুরু হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমরা কোন অত্যাচারে মাথা নত করব না। দেশের মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে। দেশের মানুষ আমাদের ওপর ভরসা রাখতে চায়। কোনো জুলুম-নির্যাতন আমাদের লক্ষ্যচ্যুত করতে পারবে না। দেশের মানুষ জানে শুধু জাতীয় পার্টিই দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন দিতে পারবে। যা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের মানুষকে দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে পারে না। এমন দুঃশাসন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। গণতন্ত্র নেই বলেই দেশের কোথাও জবাবদিহিতা নেই।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ অনাহারে ও অর্ধাহারে আছে। প্রতিদিন লাগামহীনভাবে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। কলকারখানা বন্ধ হয়ে বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। অন্যদিকে মানুষের আয় বাড়েনি মোটেও। দেশের মানুষের কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই।
এসময় জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করতে হবে। উন্নয়নের নামে গণতন্ত্র সঙ্কুচিত করা যাবে না। আমরা উন্নয়ন চাই এবং গণতন্ত্রও চাই। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, একটি নির্বাচনই আপনারা সুষ্ঠুভাবে করতে পারলেন না, তাহলে ৩০০ আসনে কিভাবে নির্বাচন করবেন? পুলিশ ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। ১৫ মাসের মধ্যে জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো- চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, জহিরুল ইসলাম হিরু, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নূরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, ইলিয়াস উদ্দিন, ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুর রহমান খান, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মীর সামসুল আলম লিটন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোখলেছুর রহমান বস্তু, ছাত্রনেতা আশরাফ খান ও কাজী খোকন খান।