আন্দোলনে সহিংসতা হলে কোনো ছাড় নয়

আন্দোলনে সহিংসতা হলে কোনো ছাড় নয়

দুর্নীতি, অর্থ পাচার, লুটপাট, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আন্দোলন করছেন, করেন। তবে আন্দোলনে সহিংসতা যুক্ত হলে আপনাদের খবর আছে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সভা হলেও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে তা বিশাল গণসমাবেশে পরিণত হয়। বিএনপির সমাবেশের দিনে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করে ক্ষমতাসীনরা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। লন্ডনে বসে ‘মেইড ইন লন্ডন’ কর্মসূচি দেন, নতুন নেতৃত্ব পাঠান ফরমান আকারে। মধ্যরাতে টেমস নদীর পাড় থেকে আসা ফরমানে একজন যায়, আরেকজন আসে। ফরমানে মির্জা ফখরুল ইসলাম, গয়েশ্বর বাবুরা কোথায় যান, কেউ জানে না। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের কারও ছাড় নেই। শেখের বেটি শেখ হাসিনা দেখিয়ে দেবেন– দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কত কঠোর। বিএনপি নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। কারণ দলটির শীর্ষ দুই নেতাই মহাদুর্নীতিবাজ।

সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বছরজুড়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করব; কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত হবে কর্মসূচি। অথচ আপনারা পত্রিকায় প্রকাশ করলেন– আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করছি। শুক্রবার আমরা সাইকেল র‍্যালি করেছি, বিএনপির কি কিছু ছিল? তাহলে কেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমন অপবাদ দিচ্ছেন?
তিনি বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা প্রতিষ্ঠান হলো আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম, অন্ধকার ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই; ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা ওড়াই।

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি বলে আবারও ষড়যন্ত্র করে সমাবেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর মুক্তি সরকার নয়, দেবেন আদালত। বিএনপিকে বলতে চাই, আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবে না।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, আওয়ামী লীগ সংসদ ও সরকারে আছে; রাজপথেও। তবে রাজপথে একটু বেশি থাকতে হবে। কারণ স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি মিলে আবারও ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে। সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসের পথে হাঁটে এবং দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তাহলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, ‘খালেদা জিয়া সুস্থ হোক, বিএনপি আসলে তাও চায় না। তারা এ অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে চায়।’ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে ফিনিক্স পাখি, যার কোনো ধ্বংস নেই। আঘাত এলে পাল্টা আঘাত করতে পারি।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং মহানগর নেতা সাইফুদ্দিন সাগর ও আসাদুজ্জামান আসাদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, মহানগর নেতা নুরুল আমিন রুহুল, শহীদ সেরনিয়াবাত, কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল প্রমুখ।

samakal