বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে চাচার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম। আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট নগরের সিআরবি এলাকায় সে গুলিবিদ্ধ হয়। এর পর থেকে চিকিৎসাধীন ছিল। অবশেষে ৫৭ দিন পর গতকাল সোমবার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সাইফুলের মৃত্যু হয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে কান্না থামছে না মা-বাবার।
এদিকে, ঢাকায় আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৫৬ দিন হাসপাতালে থাকার পর মারা গেছেন কারিমুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবক। গতকাল বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
সাইফুল ইসলামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কৌশল্যা এলাকায়। কৃষক আলতাফ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সাইফুল সবার বড়।
তাঁর চাচা আমজাদ হোসেন বলেন, মা-বাবার একমাত্র ছেলে সাইফুল চট্টগ্রামে বড় চাচা আবুল কাশেমের বাসায় বেড়াতে গিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়। ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে তাকে বেধড়ক মারধর করে আওয়ামী লীগের লোকজন। একপর্যায়ে তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে এক মাস সাত দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তাকে নেওয়া হয় ঢাকার সিএমএইচে। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
কারিমুল ইসলামের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার পশ্চিম রুহিতনশী গ্রামে। তাঁর বাবার নাম শাহাব উদ্দিন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় কারিমুল যাত্রাবাড়ী এলাকার এক আড়তের কর্মচারী ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ময়না বেগম অন্তঃসত্ত্বা।
কারিমুলের নানা জিল্লুর রহমান জানান, শুরু থেকেই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন কারিমুল। ৫ আগস্ট দুপুরে যাত্রাবাড়ী মোড়ে থানার সামনে তাঁর বুকে, ডান হাতে ও থুতনিতে গুলি লাগে। সেদিনই তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক দিন অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে রাখা হয়। গতকাল ভোরে সেখানে কারিমুল মারা যান।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ও ফেনী সংবাদদাতা)
samakal