আড়াই লাখ বীরাঙ্গনার পরিচয় রাষ্ট্রকে দিতে হবে : জাফরুল্লাহ চৌধুরী

  • অনলাইন প্রতিবেদক
  •  ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:০২

– ছবি : নয়া দিগন্ত

গনস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আড়াই লাখ বীরাঙ্গনার হিসাব, নাম, পরিচয় রাষ্ট্রকে দিতে হবে৷ তিনি বলেন, আড়াই লাখ বীরাঙ্গনার কথা বলা হয়। কিন্তু স্বীকৃতি পেয়েছেন মাত্র ৪১৬ জন। এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক আর কি হতে পারে। আড়াই লাখ বীরাঙ্গনা কেন ৪১৬
জন হলো?

মঙ্গলবার বীরাঙ্গনা জয়গুন নাহার খানমকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা যুদ্ধ করেছি একবার, একাত্তরে আট-নয় মাস। কিন্তু বীরাঙ্গনা যারা আছেন, তারা যুদ্ধ করেছেন বারবার। একাত্তরে যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধের পর যুদ্ধ করেছেন, এখন যুদ্ধ করে যাচ্ছেন।

বলা হয়, বীরাঙ্গনা উপাধিটা দিয়েছেন ববঙ্গবন্ধু। এটা সত্য নয়। ২২ ডিসেম্বর এই উপাধিটা দিয়েছিলেন সম্ভবত কামরুজ্জামান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একাত্তরের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বীরাঙ্গনাদের অবদানটা কোনো অংশে কম তো নয়ই, বরং অনেক বেশি। আমরা মুজিব শতবর্ষ পালন করছি, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি, এখন এই বীরাঙ্গনাদেরও সম্মান দিতে হবে। রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে হবে আড়াই লাখ বীরাঙ্গনার হিসাব, নাম,
পরিচয় দিতে।

বীরাঙ্গনা জয়গুন নাহার খানম গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমার এখানে বীরাঙ্গনা জয়গুন এতদিন ধরে আছে। কিন্তু আমি অনেক দিন ধরে তার সামনে গিয়ে দাড়াতে পারিনি। কারণ পাকিস্তানিরা তাদের সাথে যে ব্যবহার করেছে আমরা তার চেয়েও বেশি খারাপ আচরণ করেছি। জয়গুন যদি আমাকে বলে আপনি তো মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলাদেশে আমার জন্য কি করেছেন? তার সামনে দাঁড়িয়ে তার মতোই দু-ফোটা চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কি করতে পারতাম আমি?

মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বীরাঙ্গনা জয়গুন নাহার খানমকে সংবর্ধনা ও সম্মাননা দেয়া হয়।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক বদরুল হক। বক্তব্য রাখেন বীরাঙ্গানা মুক্তিযোদ্ধা জয়গুন নাহার খানম, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার সভানেত্রী ফরিদা আখতার, নারী পক্ষের সদস্য লিপি লিলিয়ান রোজারিও, গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের নিউরোসাইন্স বিভাগের প্রধাস অধ্যাপক এম এইচ শাহরিয়ার সাবেত।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক জেবাহ্ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আক্রাম হোসেন, অধ্যাপক শওকত আরমান, ডা: মো: সঈদ-উজ-জমান (অপু), অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, ডা: শামীম মাওলা এবং নারীপক্ষ, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার ও গণস্বাস্থের কর্মকর্তাবৃন্দ ৷