আগে পদত্যাগ, পরে সংলাপ: মির্জা ফখরুল

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল একটা বিবৃতি দিয়েছেন। এ বিবৃতির প্রধান কথা সংলাপ। সেটার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- আমরা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছি, যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনা আসবে। আমার প্রশ্ন, আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটা আপনাদেরকে প্রমাণ করতে হবে। সবার আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আয়োজিত যুব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। যুবদলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের বিজ্ঞপ্তির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ দলটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো প্রতিনিধি দল নয়। এ দলটি হচ্ছে সম্পূর্ণ স্বাধীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রধান দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির থিংক ট্যাঙ্ক তারা পাঠিয়েছে যে, বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে কি-না দেখতে। আর নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বড় কোনো টিম পাঠাবে কি-না, এটা দেখাও তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তারা ৫ দিন বাংলাদেশের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, সম্পাদক, নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা একটা বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা ৫টি সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে প্রধান কথা হচ্ছে সংলাপ।

ফখরুল বলেন, বিবৃতির জবাব দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, তারা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছেন, যখন বিএনপি সব শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনা আসবে। সবার আগে আওয়ামী লীগের কাছে আমার যে প্রশ্ন, আপনারা যে কথা বলছেন, ওই সরকারে যে বসে আছেন, আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটা আপনাদের প্রমাণ করতে হবে। আমি প্রমাণ করছি যে, আপনি সাংবিধানিকভাবে বৈধ নন, অবৈধ। সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চদশ সংশোধনী দিয়েছেন সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে। অবৈধভাবে আপনি ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আজকে যে বলছেন সংবিধানের ভিত্তিতে হতেই হবে, তাহলে সবার আগে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ আপনি অবৈধভাবে আছেন। ভূতের মুখে রাম নাম শোভা পায় না। আপনি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, জোর করে ক্ষমতায় আছেন। আমাদের কথা পরিষ্কার, আগে পদত্যাগ করেন, সংসদকে বিলুপ্ত করেন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন এবং একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচনে আসেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ সবকিছু দলীয়করণ করছে। পুলিশ সদস্যদের বলতে চাই, আমরা জানি আপনারা বেআইনি কাজ করতে চান না। আমরা জানি আপনারা আইনের শাসন মেনে কাজ করতে চান। এই আওয়ামী লীগ আপনাদের সংবিধানকে দূরে রেখে, আইনের শাসন দূরে রেখে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন করতে বাধ্য করে।

যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় যুব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রবকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।

সমকাল