- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:০৮
আওয়ামী লীগ সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে বিএনপি সহায়তা করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর জানান, জঙ্গিবাদের তকমায় বিদেশীদের আর ভোলানো যাবে না।
তিনি আরো বলেন, বিদেশীদের তকমা দিয়েছেন জঙ্গিবাদের আর মৌলবাদের। বিদেশীদের চোখ পরিষ্কার হয়ে গেছে। এগুলো শুধু নাটক আর নাটক। আজকে এসব তকমা চলে না। একটা তকমা চলে, গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য আপনি (প্রধানমন্ত্রী) জাতিকে সহযোগিতা করুন এবং বিএনপি বলেনি, আপনি নামেন, আমি ক্ষমতায় যাব। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ভোট আমাকে না-ই বা দিলেন, আপনার ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছি, আমাকে সমর্থন করুন।
‘স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে আন্দোলন নয়’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, আমাদের ১০ দফা বহু কথা। আমরা আপনার পতন ঘটাতে চাই। তবে এর আগে যদি আপনি পদত্যাগ করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুজ্জীবিত করেন তাহলে পতনের আন্দোলন করার দরকার নেই আমাদের। আর না করলে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাবে। তখন আমাদের পেছনে হটার সময় থাকবে না। সামনে আমরা গুলি খেতে পারি। এছাড়া আপনার পতন রোধ করার শক্তি বাংলাদেশে নেই, বিদেশেও নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা বলতে চাই জনগণের দাবির কাছে যদি আপনি নত স্বীকার করে পদত্যাগ করেন, গণতন্ত্রের পরিবেশ সৃষ্টি করেন অবশ্যই বিএনপি একটি সহনশীল দল। খালেদা জিয়া একজন অত্যন্ত মহানুভব, তিনি ক্ষমা করতে জানেন। তিনি মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন না এবং জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ক্ষমাশীল ব্যক্তি। সুতরাং সেই দলের নেতাকর্মীরা অবশ্যই আপনাদের নিরাপদ জীবনের জন্য ভবিষ্যতে সহযোগিতা করবে শুধু গণতন্ত্রের বন্ধ দুয়ার খোলার জন্য। তাই রক্তপাত ঘটাবেন না, কথায় কথায় গুলি করবেন না। পুলিশকে জনগণের শত্রু বানাবেন না।
‘বিদেশীরা শুধু নয়, জনগণও সেনশন দিয়েছে’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিদেশীরা সেনশন আর কত দেবে। জনগণ সেনশন দিয়ে বসে আছে। সুতরাং জনগণের সেনশন মোকাবেলা করা কঠিন কাজ, এটা কখনো কেউ পারেনি। সে জন্য আবার বলছি, এনাফ ইজ এনাফ। ১৫ বছরে বহু লুট করেছেন, বহু মায়ের বুক খালি করেছেন, অনেক গুম করেছেন। বাকি সময়টা নিরাপদে শান্তিতে আল্লাহতায়ালা যে কয়দিন হায়াত দিয়েছেন, ততদিন বেঁচে থাকুন—দোয়া করি।
তিনি বলেন, জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেন। স্বেচ্ছায় যদি আপনি পদত্যাগ করে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেন, জনগণ আপনাকে ক্ষমা করলে করতেও তো পারে। কিন্তু সর্বশেষ পর্যন্ত আপনি যদি আপনার ইগো নিয়ে থাকেন, আপনি ওমুকের কন্যা, আমি ওমুক এসব বলে থাকেন, তাহলে ক্ষমা তো দূরের কথা; অনেক কিছু ভাগ্যে জুটবে না।
১০ ডিসেম্বরের ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতেই সরকার দলের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করাকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ অভিহিত করে গয়েশ্বর বলেন, এসব করে ১০ তারিখের সমাবেশ সরকার বন্ধ করতে পারেনি। অবিলম্বে বিএনপি মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ নেতাকর্মীদের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) উদ্যোগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে পেশাজীবী নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক রফিকুল কবির লাবু, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ড.নজরুল ইসলাম,
রফিকুল ইসলাম,ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান চুন্নু, সাংবাদিক রাশেদুল হক, বিপ্লব-উজ জামান বিপ্লব, মির্জা লিটন, ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার এবিএম রুহুল আমিন, ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম, অধ্যাপক আবু জাফর খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।