আওয়ামী লীগ দিশাহারা হয়ে বিশৃঙ্খলা করতে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে: বিএনপি

Transparent Newspaper Clipping Clipart - Prothom Alo Logo ...

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা

গতকাল শনিবার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি এই কর্মসূচি পালন করে। একই সময়ে সারা দেশে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। পদযাত্রা কর্মসূচিতে ‘হামলা, বাধা ও নেতা-কর্মীদের আটকের’ প্রতিবাদে আজ সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যেকোনো কর্মসূচি দিলেই সরকার বলে, তারা (বিএনপি) বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস করছে। গতকাল পর্যন্ত যত কর্মসূচি হয়েছে, তার কোথায় বিএনপি সন্ত্রাস করেছে, তা দেখাতে বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, পাল্টা কর্মসূচি যখন একটা রাজনৈতিক দল দেয়, তখন বুঝতে হবে, সেই দল একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা ভীত হয়ে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা যেদিন কর্মসূচি দেব, সেদিনই তাদের (আওয়ামী লীগ) কর্মসূচি দিতে হবে! এর মাধ্যমেই তো প্রমাণ হয়, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের অর্থনৈতিক ব্যর্থতা, গণতন্ত্র হত্যা, সামাজিক অব্যবস্থা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সবকিছুতে দিশাহারা হয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা করার জন্য পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে বর্তমান আওয়ামী সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা বানচাল করতে দলীয় সন্ত্রাসী ও কিছুসংখ্যক পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছিল। গতকাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হামলা করেছে, গুলি চালিয়েছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, গতকাল পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় সারা দেশে বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে, লুটপাট চালানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের দাবি নিয়ে তাঁরা যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে একই স্থানে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সন্ত্রাসকে উসকে দিচ্ছে। তারা দেশে নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। জনগণের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে পুলিশি পাহারায় তারা শান্তি সমাবেশের নামে সন্ত্রাস করছে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, হামলা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকামী জনতা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে এসে কর্মসূচি সফল করেছে। জনতা প্রমাণ করেছে, এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন। যুগে যুগে কোনো সরকার জুলুম-নির্যাতন করে টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না।

গত ১৪ বছরে বিএনপির ৫০ লাখ নেতা-কর্মীর নামে বানোয়াট মামলা করা হয়েছে বলে দাবি খন্দকার মোশাররফ হোসেনের। তিনি বলেন, মামলা, খুন-গুম করেও বিএনপির নেতা-কর্মীসহ দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে এই সরকার দমাতে পারেনি। তাই ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে, সরকারের বিদায়ঘণ্টা ততই ত্বরান্বিত হবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ করে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনারা বলেছেন, নির্বাচনের আগপর্যন্ত কর্মসূচি দিয়ে যাবেন। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি, কোন দিন কোন কর্মসূচি হবে, তা এখনই ঘোষণা দিয়ে দেন। তাহলে আমরা আমাদের কর্মসূচিগুলো পরবর্তী নিরাপদ স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারি। কিন্তু আমরা কর্মসূচি ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগ যদি কর্মসূচি ঘোষণা দেয়, তাহলে বুঝে নিতে হবে, ইচ্ছাকৃতভাবে তারা দেশে একটা গন্ডগোল লাগানোর চেষ্টা করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রমুখ।