ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠন নিয়ে জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠন করা হবে। এতে প্রতিটি ছাত্র সংগঠনের দু’জন প্রতিনিধি থাকবেন। এই কাউন্সিলের আলোচনার মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মপরিধি নির্ধারিত হবে। তবে এটির ফরম্যাট কী হবে, আগামী এক সপ্তাহ পর আরেকটি সভায় তা চূড়ান্ত করা হবে। সোমবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ১৯টি ছাত্র সংগঠন অংশ নেয়।
এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে– গত তিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি এবং মন্ত্রীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপ দেওয়া হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্র সংগঠনগুলো বসবে। এ ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠন আগামী এক সপ্তাহ ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালন করবে। এ সময় ছাত্র সংগঠনগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তাদের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত তিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি এবং মন্ত্রীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। তা না হলে বিদেশ থেকে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজ নিচ্ছি, কালকে নিচ্ছি– এ ধরনের বিষয় যেন না হয়। তিনি বলেন, আমরা আরও নীতিগত সিদ্ধান্তে এসেছি– এ সরকার আওয়ামী লীগ আমলের প্রশাসনিক কাঠামোয় ক্ষমতায় এসেছে। এখনও সেই প্রশাসনিক কাঠামো বিদ্যমান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগের সুপারিশে নিযুক্তদের বাদ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো পরিশুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
হাসনাত আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতভেদ থাকবে। তবে বেসিক কিছু নীতির বিষয়ে সব ছাত্র সংগঠন একমত। সব ছাত্র সংগঠন একত্র হয়েছে বলেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আমরা ফ্যাসিবাদী হাসিনাকে উৎখাত করতে পেরেছি। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সব ছাত্র সংগঠন জিরো টলারেন্স। তারা কোনোভাবেই পুনর্বাসিত হবে না।’
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বলব, আপনাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হবে। পরিবেশ, সম্পদ, ঐক্য নষ্ট হয়, ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনর্বাসিত হতে পারে– এমন কাজ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা হতে দিতে পারে না। আগে আকার-ইঙ্গিতে কোনো কর্মসূচি দিলেও প্রশাসন সেটি ধরে ফেলত। অথচ দুই দিন আগে ঘোষণা দেওয়া হলেও মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন কিছু করতে পারেনি। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের টোটাল ব্যর্থতা। এ জন্য প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজানোর কথা বলছি।