টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে।
এর আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন, সুপার এইটে ওঠা ছিল বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণের পর সুপার এইট থেকে ‘বোনাস’টা তুলে নিতে চায় বাংলাদেশ দল। অর্থাৎ সুপার এইটে কোনো দলকে হারাতে পারলে সেটি হবে বাংলাদেশ দলের জন্য বোনাস। হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন, সুপার এইটে তিন প্রতিপক্ষকেই যতটা সম্ভব চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে বাংলাদেশ দল।
হাথুরুসিংহের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, প্রথম পর্বের লক্ষ্য পূরণের পর দ্বিতীয় পর্বে এসে কী ভাবছে বাংলাদেশ দল। হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘সুপার এইটে ওঠা ছিল এই টুর্নামেন্টে আমাদের প্রথম লক্ষ্য। আমরা সেটা অর্জন করতে পেরেছি, বোলাররা আমাদের টিকিয়ে রেখেছে। আমরা কন্ডিশন বুঝে খেলেছি, কন্ডিশনকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহারও করতে পেরেছি। এখানে আসতে (সুপার এইট) পেরে আমরা খুবই খুশি, আর এখান থেকে যেকোনো প্রাপ্তিই হবে বোনাস। তাই আমরা বেশ স্বাধীনতা নিয়েই খেলব। তিনটি দলকেই আমরা যতটা সম্ভব চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেব।’
অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সুপার এইটে বাংলাদেশের বাকি দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও আফগানিস্তান। প্রথম প্রতিপক্ষ যেহেতু অস্ট্রেলিয়া তাই মিচেল মার্শের দলের বিপক্ষে পরিকল্পনাটা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘পরিকল্পনা অন্য সব দলের মতোই, ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ে আমরা শক্তিশালী শুরু করতে চাই। তবে অনেক জায়গাতেই ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে পিচ। আর পিচের চরিত্র বোঝাও খুব কঠিন।’
হাথুরুসিংহে এরপর সেন্ট ভিনসেন্টের পিচের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম সেন্ট ভিনসেন্টের পিচ ভালো হবে। কিন্তু সেটাই খুব কঠিন হয়ে উঠল। বোলিংবান্ধব হয়ে উঠল, সেটি শুধু পেস কিংবা স্পিন নয়, দুটোতেই। তাই আমাদের পরিকল্পনা হলো ব্যাটিং বা বোলিং যেটাই হোক, শুরুটা ভালো করা।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশে সম্ভাব্য পরিবর্তন আনা প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষের ওপর নির্ভর করছে। তাদের (অস্ট্রেলিয়া) সীমাবদ্ধতাও আমরা আমলে নেব এবং অবশ্যই আমরা নিজেদের শক্তি বুঝে খেলব। (ম্যাচের আগে) এগুলোই ভাবা হবে।’
ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামের উইকেট দেখেছেন কি না, এমন জানতে চাওয়া হলে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘এখনো দেখিনি। আমরা গতকাল সেখানে ফিল্ডিং সেশন করেছি। কিন্তু সেটা ছিল রাতে ফ্লাডলাইটের আলোয়। উইকেট তখন ঢেকে রাখা ছিল। আমরা মাঠের আকার দেখার পাশাপাশি কোন দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে, সেসব বোঝার চেষ্টা করেছি। পুরো চিত্র এখনো না পেলেও ব্যাপারটা কত গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি।’
দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যদল নিউ সাউথ ওয়েলসের সঙ্গে ছিলেন হাথুরুসিংহে। অস্ট্রেলিয়া দলের তারকা ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডদের তাই ভালো করেই জানা আছে বাংলাদেশ কোচের। এ বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘বেশি দিন আগের কথা নয়, ১২ মাস আগেই তাদের সঙ্গে ছিলাম। অনেককেই চিনি। তারা খুব ভালো খেলোয়াড় এবং নিজেদের খেলাটা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তাদের শক্তি ও সীমাবদ্ধতা জানলেও সেটি খুব বেশি কাজে লাগবে না। এই ম্যাচে কন্ডিশনই বড় প্রভাবক। তাই কন্ডিশনকে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করাতেই আমাদের মূল মনোযোগ।’
২০১৭ সালে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই জয়ের আত্মবিশ্বাস এই ম্যাচে কোনো কাজে দেবে কি না, এমন জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ কোচ তখনকার সঙ্গে একটি পার্থক্য ধরিয়ে দেন, ‘ওই দলটি তখন অনেক অভিজ্ঞ ছিল। অনেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিল, কন্ডিশন ও উইকেটও নিজেদের (আমাদের) পক্ষে ছিল। বোলিং ও ব্যাটিংয়ে কীভাবে পাল্টা আক্রমণ করব, সেই পরিকল্পনাও ছিল…বড় দলকে হারাতে কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে আমরা অবশ্যই এসব নিয়ে কথা বলেছি।’
prothom alo