অলাভজনক ৩ স্থলবন্দর বন্ধের সুপারিশ

Kalerkantho
নিজস্ব প্রতিবেদক

অলাভজনক ৩ স্থলবন্দর বন্ধের সুপারিশ
সংগৃহীত ছবি
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তিনটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি স্থলবন্দর কার্যকর বা অকার্যকরের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত যাচাই কমিটি এ সুপারিশ করেছে।

কমিটি কর্তৃক বর্ণিত আটটি স্থলবন্দর সরেজমিনে পরিদর্শন, প্রাপ্ত তথ্যাদি, আনুষঙ্গিক সুবিধা ও অসুবিধা, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কি না এসব বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বাণিজ্য সম্ভাবনা বিবেচনায় নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর,  চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার তেগামুখ স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই মর্মে সুপারিশ প্রদান করেছে।

 

এ ছাড়া কমিটি হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কেদারকোটে নির্মিত স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে কোনো অবকাঠামো ও সড়ক না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা যেতে পারে মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কমিটি ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের দুটি স্থানের পরিবর্তে একটি স্থানে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু রাখার সুপারিশ করেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরে বন্দরকেন্দ্রিক গতিশীল অর্থনৈতিক কার্যক্রম চলমান আছে। বিগত সময়ের আয়-ব্যয় অনুপাত তুলনায় লাভজনক বিবেচনায় স্থলবন্দরটির কার্যক্রম আরো গতিশীল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং পূর্বে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল ছিল ও বন্দরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম দৃশ্যমান। এ বিনিয়োগ বিবেচনায় ন্যূনতম জনবল দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

আরো বলা হয়েছে, দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দরে বিদ্যমান ব্যবস্থায় রেলপথে আমদানি-রপ্তানি চালু রাখা যেতে পারে।

এ ছাড়া ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর জন্য ভারতকে অনুরোধ করা যেতে পারে। বিওটিভিত্তিক পরিচালনার চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এ স্থলবন্দরে অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে ভারত কর্তৃক সড়ক নির্মাণ এবং স্থলরুট হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পোর্ট অপারেটরকে বলা যেতে পারে। 

উল্লেখ্য, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বিগত সরকারের আমলে নির্মিত দেশের অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন বিভিন্ন স্থলবন্দরসমূহের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত বছরের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৮টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর (১. নাকুগাঁও স্থলবন্দর, নালিতাবাড়ি, শেরপুর; ২. গোবড়াকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দর, হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ; ৩. ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর, বকশিগঞ্জ, জামালপুর; ৪. বাল্লা স্থলবন্দর, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ; ৫. বিরল স্থলবন্দর, বিরল, দিনাজপুর; ৬. চিলাহাটি স্থলবন্দর, ডোমার, নীলফামারী; ৭. দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা; ৮. তেগামুখ স্থলবন্দর, বরকল, রাঙ্গামাটি) কতটা কার্যকর বা অকার্যকর এ বিষয়ে যাচাইয়ের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here