অর্থনীতি-রাজনীতি নিয়ে মানুষের হতাশা বেড়েছে

অর্থনীতি-রাজনীতি নিয়ে  মানুষের হতাশা বেড়েছে 

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন মানুষের আশা আরও কমেছে বলে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ‘সিটিজেনস প্রোটেকশন সার্ভে অন দ্য গভর্ন্যান্স, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি’ শিরোনামে এ সমীক্ষা চালানো হয়। প্রতি জেলা থেকে ১০৬ জন উত্তরদাতা নির্বাচনের মাধ্যমে ৬৪ জেলার ৬ হাজার ৭৮৪ জনের উত্তরের ভিত্তিতে সমীক্ষা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ২০১৫, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২২ সালেও একই ধরনের সমীক্ষা করে প্রতিষ্ঠান দুটি।
সমীক্ষা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের সব শ্রেণির আয়ের মানুষের মধ্যে অর্থনীতি সম্পর্কে আশাবাদ কমছে। যাদের আয় মাসে ৫ হাজার টাকা বা এর কম, অর্থনীতি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০১৯ সালে নিম্ন আয়ের এমন ৮৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছিলেন, অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে। ২০২৪ সালে তা উল্লেখযোগ্য কমে ৪২ শতাংশে নেমেছে। শুধু নিম্ন আয়ের মানুষের নয়, দেশের সব আয়ভিত্তিক শ্রেণির উত্তরদাতার মধ্যেই অর্থনীতি-রাজনীতি নিয়ে প্রত্যাশা কমছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।

সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দেশ সঠিক পথে চলছে কিনা– এমন তিনটি বিষয়ে জিজ্ঞাসায় ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ভুল পথে এগোচ্ছে।’ ২০১৭ সালে এমন ধারণা পোষণ করতেন মাত্র ১৭ শতাংশ নাগরিক। অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৫২ শতাংশ উত্তরদাতা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিকে দেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উত্তরদাতাদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধি তাদের জীবন ও জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সরকারের সঙ্গে সম্পর্ককে কীভাবে মূল্যায়ন করেন– এমন প্রশ্নের উত্তরে ৪০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে ‘প্রধানমন্ত্রী বনাম নাগরিক সম্পর্ক’ হিসেবে দেখে থাকেন, যেখানে ২৯ শতাংশ উত্তরদাতা সরকারকে কল্যাণকারী পৃষ্ঠপোষক এবং রক্ষাকর্তা হিসেবে বিবেচনা করছেন। ১৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, যেখানে ২০২২ সালে এ মনোভাব ছিল ৯ শতাংশের মধ্যে।

জরিপে সংবাদ ও গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের ধারণা কেমন, তাও বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে উঠে এসেছে, মূলধারার গণমাধ্যমের চেয়ে মানুষ ফেসবুক, ইউটিউবের মতো ইন্টারনেটভিত্তিক প্ল্যাটফর্মকে খবরের উৎস হিসেবে বেছে নিচ্ছে।

সমকাল