![অনেক প্রশ্নের ফয়সালা চায় ১৪ দল শরিকরা অনেক প্রশ্নের ফয়সালা চায় ১৪ দল শরিকরা](https://samakal.com/media/imgAll/2024June/untitled-11-1717527630.jpg)
সমঝোতা ও ঐক্যের আগে নির্বাচনের আগে-পরে অবহেলা ও অবমূল্যায়নের পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা চাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল শরিকরা। জোট নেতারা বলেছেন, এখন জোড়াতালি দিয়ে সমঝোতা ও ঐক্য গড়ে তোলা হলেও ভবিষ্যতে আবারও একই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হবে না, তার নিশ্চয়তা কী? এসব প্রশ্নের ফয়সালা না হলে ১৪ দলীয় জোটে থাকবেন কিনা, সেটাও ভেবে দেখার হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা বলেছেন, সমতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে সংকট নিরসন করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর বাসায় জোটের বৈঠকে শরিক নেতাদের এমন কঠোর মনোভাব ফুটে উঠেছে। দুঃসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ব্যাংক সেক্টরে দুর্নীতি, লুটপাটসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষোভ দেখান তারা।
এ সময় জোটের সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঈদের আগে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং এখনই জোটগত কর্মসূচি পালনের প্রস্তাব দিলেও সেটা প্রকারান্তরে নাকচ করে দেন শরিক নেতারা।
তবে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, ১৪ দলীয় জোটে যে গোলমাল তৈরি হয়েছে, তা দ্রুতই নিরসন করা হবে। জোটের সমস্যা সমাধানে ঈদের আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। ১৪ দল সাম্প্রদায়িক শক্তি ও আন্তর্জাতিক বলয়ের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি আদর্শিক জোট।
বৈঠকে শরিক নেতারা বলেন, এই সরকার আওয়ামী লীগের সরকার, ১৪ দলের সরকার নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি তাদের আস্থা আছে। কিন্তু যেভাবে দুর্নীতি-লুটপাট ও সংকট বাড়ছে, তাতে শেখ হাসিনার মর্যাদা ও দেশের উন্নয়ন ম্লান হচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের সঙ্গে শরিকদের দূরত্ব কমানো, মান-অভিমানের অবসান এবং জোটকে সক্রিয় করার লক্ষ্য নিয়ে ১৪ দলের এই বৈঠকটি বসেছিল। এর আগে গত ২৩ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বৈঠকেও নিজেদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুলে ধরেন তারা। জোটের শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৪ দল আছে, থাকবে। জোটকে সক্রিয় করা হবে। সেই সঙ্গে শরিকদেরও নিজেদের সুসংগঠিত ও জনপ্রিয় করার তাগিদ দেন।
গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের ইঙ্গিত করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের দলের অবস্থান, জনসমর্থন ও ভোট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এসব জেনেই তো আমাদের জোটে নিয়েছেন। নির্বাচনে আসন সমঝোতার নামে অসম্মান ও অমর্যাদাকর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়ে দলীয় সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো কারণ নেই।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু তাঁর আসনের নির্বাচন নিয়ে কারচুপি ও ভোট কেটে নেওয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে ও সহযোগিতায় প্রশাসনই ভোট কেটে নিয়েছে।
জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগ যেখানে নিজেরাই শক্তিশালী, সেখানে জোটের কোনো প্রয়োজনই নেই। বৈঠকের এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বার্তা পাঠিয়েছেন, তিনি নিজেই ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী প্রমুখ।
সমকাল