কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটর: আয়হীন সাড়ে তিন লাখ মানুষ

আশীষ-উর-রহমান, ঢাকা
১২ আগস্ট ২০২০
আনন্দ ভবনে নিরানন্দ পরিবেশ। রাজধানীর পুরানা পল্টনের ভিআইপি রোডের এই কমিউনিটি সেন্টারের ফটকে ফুল ও রঙিন বাতির সজ্জা ছিল প্রায় নিত্যদিনের চেনা ছবি। এখন ফটক বন্ধ। নিঃশব্দ পরিবেশ। প্রায় পাঁচ মাস ধরে এ অবস্থা।

করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ। এতে ঢাকাসহ সারা দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটরের ব্যবসাও পুরোপুরি বন্ধ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে তাঁদের প্রতি মাসে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে জড়িত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের পরিবারে নেমে এসেছে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। অনেকের বাজার করার টাকাও নেই।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কমিউনিটি সেন্টার আছে ৪৯টি। এর মধ্যে ব্যবহারের উপযোগী মাত্র ২৭টি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীতে বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার ও কনভেনশন সেন্টারের সংখ্যা ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দেড় শ। সারা দেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান প্রায় চার হাজার। গড়ে ১০ জন করে স্থায়ী কর্মচারী ধরলে দেশে ৪০ হাজার লোক এখানে কাজ করেন। অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রতি মাসে চার হাজার প্রতিষ্ঠানের লোকসান হচ্ছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ডেকোরেটরের ক্ষতি আরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা। গত পাঁচ মাসে তাদের ক্ষতির অঙ্ক ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কের হোয়াইট হল কনভেনশন সেন্টারে কথা হলো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহ জাকির হোসাইনের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লালবাগের সাগুন কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মনির হোসেন। তাঁরা জানালেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে অন্য সব ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে। কেবল তাঁরাই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। কমিউনিটি সেন্টারগুলোর আয়তনের ওপর ভিত্তি করে অতিথির সংখ্যা নির্ধারণ করে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিলে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে অনুষ্ঠান করতে পারবেন। তাতে সবারই উপকার হবে।

ডেকোরেটরের তিন লক্ষাধিক লোক বেকার
ঢাকায় ডেকোরেটরের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। সারা দেশে ডেকোরেটর প্রায় পাঁচ হাজার। বাংলাদেশ ডেকোরেটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিউ ইস্কাটনের লাভলি ডেকোরেটরের মালিক জাকির হোসেন দিলেন এই তথ্য।

জাকির হোসেন বলেন, সারা দেশে অন্তত দেড় লাখ লোক স্থায়ীভাবে কাজ করতেন এসব ডেকোরেটরে। এ ছাড়া দিন চুক্তিতে কাজ করতেন এমন লোক আরও প্রায় দেড় লাখ হবে। এখন স্থায়ী-অস্থায়ী কারোরই কোনো কাজ নেই। সমিতির তহবিল থেকে খুবই খারাপ অবস্থায় থাকা প্রায় ৩৫০ জন মালিককে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে আর কদিন চলবে?