কত টাকা হলে নদীভাঙ্গন মুক্ত হবে দেশ ? বশে আসবে পদ্মা মেঘনা যমুনা !

Defence Research Forum

প্রতি বছর নদীভাঙ্গনে আমরা ৬ হাজার হেক্টর জমি হারাচ্ছি!

নদী ভাঙ্গন মুক্ত দেশ চাইলে প্রথমেই বশে আনতে হবে দেশের প্রধান ৩ নদী । অন্য নদী গুলাও ভাঙ্গন প্রবন কিন্তু এই প্রধান ৩ নদী বশে আনতে পারলে দেশে নদী ভাঙ্গনের যে তীব্র প্রভাব রয়েছে তা অনেকটাই কমে যাবে। নদী শাসন করা মানে নদীর দুই তীরে বাঁধ দেয়া। কিন্তু এই বাধ পুরাপুরি ভাঙ্গন মুক্ত রাখতে পারছেনা। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থানের বাঁধে ধস নেমে ঘরবাড়ি বিলীন হচ্ছে। ঝড় জলোচ্ছ্বাস আসলে পুরা বাঁধ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। আবার এমন ও কিছু বাঁধ আছে যা বছরের পর বছর শক্তভাবে দাঁড়িয়ে নদী থেকে জনপদ বাঁচাচ্ছে!
তো এর ভিত্তিতে বাঁধকে ২ ভাগে ভাগ করলাম। একটি ব্রান্ড এর বাঁধ আরেকটি ননব্রান্ড এর বাঁধ।ডিফ্রেস। ননব্রান্ড এর বাঁধ বলতে আমরা সল্প বাজেটে স্থানীয় ঠিকাদারদের দিয়ে প্রচলিত দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি বাঁধকে ধরে নিলাম। এই ধরনের বাঁধগুলাতে মাঝেমাঝেই ধস নামে। সল্প বাজেটের হওয়ায় নদীকে আটকে রাখতে যতটা প্রয়োজন ততটা মজবুত করা সম্ভব হয় না।

বাঁধে ধ্বস

আর ব্রান্ডের বাঁধ বলতে আমরা বড় আকারের সেতু রক্ষার জন্য তৈরি বড় বাজেটের পরিকল্পিত মজবুত বাঁধ গুলাকে ধরে নিলাম। এধরনের বাঁধগুলা সাধারণত বিদেশী কারিগরি সহায়তায় বিদেশী ঠিকাদারদের দিয়ে তৈরি হয়। যার স্থায়িত্বকাল ধরা হয় ১০০ বছর।  ননব্র‍্যান্ড এর তুলনায় কয়েকগুন বেশি বাজেট দেয়া হয় এসব প্রকল্পে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে যে বাঁধ তৈরি হচ্ছে তা এই ধরনের, বঙ্গবন্ধু সেতুর বাঁধটিও এমনি।

পদ্মানদী শাষন প্রকল্প

আমার মতে এই ব্র‍্যান্ডের বাঁধই পারবে প্রধান এই ৩ নদীকে বশে আনতে। ডিফ্রেস। আসুন এবার দেখি কত টাকা লাগতে পারে এই ৩ টি নদীর পুরা দুই তীর বেধে ফেলতে।
তার আগে দেখি পদ্মা সেতুর বাঁধ কিভাবে তৈরি হচ্ছে। নদীর ভেতর থেকে ড্রেজিং করে মাটি ফেলা হচ্ছে নদীর তীরে । এরপর   ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলতে হচ্ছে। এই ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়েই নদীর নিচ থেকে তীর পর্যন্ত বাঁধতে হচ্ছে। কিন্তু পদ্মার খরস্রোত চোখের পলকে সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। মাটির কিছু আচরণের কারণে অনেক সময় গর্ত সৃষ্টি হয়। ফলে জিও ব্যাগ ও ব্লক ভাসিয়ে নিয়ে যায় পদ্মা। দুই পাড় বাঁধার আগে পানির নিচেও সুরক্ষার কাজ করতে হচ্ছে। ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে নদীশাসনের কাজ বাস্তবায়ন করছে চীনের সিনো-হাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড।  প্রকৃতিগত কারণে নদীশাসনের মূল সময় নভেম্বর-এপ্রিল। সেজন্য অপেক্ষা করতে হয় অক্টোবর পর্যন্ত।
এই কাজে ১ কোটি ৩৩ লাখ কংক্রিটের ব্লক ও ২ কোটির বেশি বালুভর্তি জিও ব্যাগ লাগছে। মাওয়া প্রান্তে ২ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১০ কিলোমিটারসহ সব মিলিয়ে ১২ কিলোমিটার নদীর পাড় ও নদীর তলদেশের নদী শাসনের কাজ হচ্ছে। DefRes360

পদ্মা সেতু ও শাসন

এবার খরচ হিসাব করি।  হিসাবের সুবিধার্থে প্রধান ৩ টি নদীকে গঠন ভেদে ৫ টি ভাগে ভাগ করলাম
১ / পদ্মা (রাজবাড়ি থেকে চাঁদপুর)
২/যমুনা ( কুড়িগ্রাম থেকে রাজবাড়ি)
৩/ লোয়ার মেঘনা (চাঁদপুর থেকে বঙ্গোপসাগর)
৪/গঙ্গা পদ্মা (চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজবাড়ি)
৫/ আপার মেঘনা (কিশোরগঞ্জ থেকে চাঁদপুর)

বাংলাদেশের নদ নদী

★১/পদ্মা (রাজবাড়ি থেকে চাঁদপুর)
রাজবাড়ি গোয়ালন্দ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত যমুনা ও পদ্মা মিলিত হয়ে যে পদ্মা নদী তার দৈর্ঘ্য ১২০ কি.মি.। এই ১২০ কি.মি. চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোয়ালান্দ পর্যন্ত যে ২৪৬ কি.মি. নদী রয়েছে তার থেকে তুলনামূলক বেশি ভয়ংকর ও ভিন্ন গঠনের।
তো আমাদের পদ্মাসেতু ও পদ্মানদী শাষন হচ্ছে পদ্মা ও যমুনার মিলিত  পদ্মা নদীর ওই ১২০ কি.মি. এর মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর অংশে।(ডিফ্রস)ovi. এখানে সেতু অংশের নদী শাষনে প্রতি কি.মি. তে খরচ হচ্ছে ৭২৫ কোটি এর মত। তাহলে ১২০ কি.মি. এর নদীর দুইপাড় ২৪০ কি.মি.। ২৪০ কি.মি. বাঁধে প্রতি কি.মি. ৭২৫ কোটি করে মোট লাগবে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা।

ভাঙ্গনের শিকার ভবন

★২/যমুনা ( কুড়িগ্রাম থেকে রাজবাড়ি) সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে ১৯৯৬ – ২০০১ সালে ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ  শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। যা ব্রিটিশ কোম্পানির কারিগরি সহায়তায় দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই কোম্পানি তৈরি করে।
এই ৩৩১ কোটি টাকা বর্তমানের সাথে মেলাতে ও হিসাবের সুবিধার্থে ১৯৯৯ সালের সাথে তুলনা করা হল।   তখন ১ ডলার সমান ৪৮ টাকার মত ছিল। যা বর্তমানে ৫৬৫ কোটি টাকার মত। অতএব বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ২২৬ কোটি টাকার মত হওয়ার কথা । কিন্তু দ্রবমুল্য এর হিসাবে খরচ আরো বেশি হবে। তখন থেকে এখন দ্রব ভেদে দাম ও মজুরী ৫ থেকে ১০ গুন বেশি। Defence research forum.  ১৯৯৯ সালে চাল ১৫/২০ টাকা কেজি ছিল সেখানে এখন ৫০/৭০ টাকা।
নির্মান শ্রমিক ছিল ৭০/১২০ টাকা সেখানে এখন ৫০০ / ১০০০ টাকা।
তখন ১ হাজার ইটের দাম ছিল ২২০০/২৫০০ টাকা এখন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
রড ২০/২২ টাকা কেজি এখন ৫৫/৬৫ টাকা কেজি।
সিমেন্ট ১০০/১১০ টাকা ব্যাগ (৫০কেজি) এখন গড়ে ৪৫০ টাকার মত প্রতিব্যাগ।
(পাথরের দামের পার্থক্য কেও জানলে জানাবেন)
অতএব ডলারের তুলনায় খরচ দুই গুনের ও কম কিন্তু বাস্তবতায় তা ৩ থেকে ১০ গুন বেশি। তো আমরা আনুমানিক ৫ গুন বেশি খরচ ধরে নেই। উল্লেখ্য সিরাজগঞ্জ থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত নদীর পাড়ের গঠন ভিন্নতায় খরচে তারতম্য থাকতে পারে। তাও আমরা আনুমানিক ৫ গুন ধরে নেই। তাহলে ১৯৯৯ সালে ১ কি:মি বাধ নির্মানে ১৩১.৪ কোটি খরচ হলে এখন খরচ হতে পারে ৬৬২ কোটি।
আমাদের ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর দৈর্ঘ্য ২৭৬ কি.মি. (যমুনা ২০৫ কি.মি.)। নদীর দুইটি পাড় হিসেবে মোট বাধ লাগবে ৫৫২ কি.মি.।  ৬৬২ কোটি প্রতি কি.মি. হিসেবে ৫৫২ কি.মি. এর মোট খরচ হতে পারে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা ovi(আনুমানিক)

হার্ড পয়েন্ট, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ

★৩/ লোয়ার মেঘনা (চাঁদপুর থেকে বঙ্গোপসাগর)
চাঁদপুর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত যে মেঘনা নদী তা লোয়ার মেঘনা নদী নামেও পরিচিত কারন এটা শুধু মেঘনা নদী নয়, এটা পদ্মা মেঘনা যমুনার মিলিত রুপ। এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে গভীর নদী এখানেই। এই অংশটুকু চাঁদপুর শরিয়তপুর বরিশাল লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলার উপর দিয়ে সমুদ্রে পতিত হয়েছে। যা ১৪৫ কি.মি. এর মত লম্বা। এই দিকে ব্রান্ডের কোন বাধ নেই । এজন্য সম্ভাব্য ব্যান্ডের বাধ দিয়ে পুরা দুই তীর বেধে দিতে  কত খরচ হবে তা অনুমান করার সুযোগ নেই।(ডিফ্রেস) তবে অন্যভাবে করা যেতে পারে। পদ্মার সর্বোচ্চ গভীরতা ১,৫৭১ ফুট (৪৭৯ মিটার) এবং গড় গভীরতা ৯৬৮ফুট (২৯৫ মিটার)। এখানে ১ কি:মি: বাঁধ  দিতে খরচ হচ্ছে ৭২৫ কোটি টাকা। এটা স্কয়ার মিটার করি,  ১ কি.মি. সমান ১০০০ মিটার আর গভীরতা ২৯৫ মিটার। অতএব ২ লক্ষ ৯৫ হাজার বর্গমিটার, তাহলে প্রতি বর্গমিটারে খরচ আসে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মত। ovi
মেঘনা নদীর সর্বোচ্চ গভীরতা ১৬২০ ফিট (৪৯০মিটার) এবং গড় গভীরতা ১০১২ ফিট (৩০৮মিটার)। তাহলে মেঘনায় ১ কি.মি. বাধ সমান ৩ লাখ ৮ হাজার বর্গমিটার। যদি পদ্মার ১ বর্গমিটারের খরচ ২ লাখ ৪৫ হাজার করে হিসাব করি তাহলে মেঘনায় ১ কি.মি. বাধ নির্মানে খরচ হবে
৭৫৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অতএব ১৪৫ কি.মি. লোয়ার মেঘনার দুই তীর ২৯০ কি.মি. বাঁধ নির্মানে খরচ হবে ২ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। ডিফেন্স রিসার্চ ফোরাম।

চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন

★৪/গঙ্গা পদ্মা (চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজবাড়ি)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোয়ালান্দ পর্যন্ত  ২৪৬ কি.মি.। এর মধ্যে আমার হিসাব অনুযায়ী আনুমানিক ২০০ কি.মি. এর মত পদ্মা পুরাপুরি বাংলাদেশের ভিতরে,  রাজশাহীতে আনুমানিক ৪৬ কি.মি. এর মত পদ্মার এক তীর আমাদের অন্যপাশ ভারতের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শুরু হওয়া পদ্মা কিছু কিছু জায়গায় পুরাপুরি ভারতে ঢুকে গেছে আবার কোথাও পুরাপুরি বাংলাদেশে। এই পুরাপুরি ভারতে ঢুকে যাওয়া অংশ ২০/২৫ কি.মি. এর মত হতে পারে। তো আমাদের এখানে দুই তীর সহ পদ্মা আমুমানিক ২০০ কি.মি., অর্থাৎ এখানে বাঁধ প্রয়োজন ৪০০ কি.মি. আর একতীর সহ পদ্মা আনুমানিক ৪৬ কি.মি.। অতএব মোট বাঁধ লাগবে ৪৪৬ কি.মি.। (স্যাটেলাইট ম্যাপ দিয়ে হিসাব করা)। ডিফ্রেস। কিন্তু হার্ডিঞ্জ ব্রীজ, লালনশাহ সেতু কিংবা রুপপুর পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্রের নদীশাষন বিষয়ক কোন তথ্য না পাওয়ায় আমাদেরকে যেতে হচ্ছে রাজশাহীতে। তো রাজশাহী শহর রক্ষায় প্রথম সরকারিভাবে বাঁধ নির্মান করা হয় ১৮৫৫ সালে। এরপর বিভিন্ন সময় মোট ১৭ কি.মি. শহর রক্ষা বাঁধ নির্মান করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ের বাঁধ নির্মানের যে ব্যয়, তার কোন তথ্য পাইনি। তবে সম্প্রীত ৪ কি.মি. বাঁধ সংস্কারে ২৬৬ কোটি টাকা খরচের একটি তথ্য পাওয়া গেছে। এখান থেকে আমরা কিছুটা অনুমান ভিত্তিক ধারণা করতে পারি।  আবারো বলছি অনুমান ভিত্তিক, এমনি খরচ হবে তা কিন্তু নয়,  কম বেশি হতে পারে। আচ্ছা এবার অনুমান করি – ২৬৬ কোটি যদি সংস্কারে খরচ হয় তাহলে নতুন করে তৈরিতে খরচ হতে পারে এর দ্বিগুণ ৫৩২ কোটি ধরে নিলান। কিন্তু রাজশাহীর বাঁধে মাঝেমাঝেই ধ্বস দেখা দেয়।  তো ধরে নিলাম ব্র‍্যান্ডের বাঁধ বানাতে ১০০০ কোটি টাকা লাগবে। তাতে প্রতিকি:মি: বাঁধে খরচ হবে ২৫০ কোটি টাকা। এবং ৪৪৬ কি.মি. বাঁধে খরচ হবে ১ লাখ ১১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

ক্ষতিগ্রস্ত রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ

★৫/ আপার মেঘনা (কিশোরগঞ্জ থেকে চাঁদপুর)
কিশোরগঞ্জ থেকে চাঁদপুর মেঘনা নদীর দৈর্ঘ্য ১৫৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩.৪ কিলোমিটার।  অতএব এখানে বাঁধ প্রয়োজন ৩১২ কি.মি.। মেঘনার এই অংশে  বাঁধ নির্মানের তেমন তথ্য পাইনি তবে পাউবো ২০১০-১১ অর্থবছরে ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের নামে নির্মাণ করে এক হাজার ৮৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের জিল্লুর রহমান ভৈরব শহর রক্ষা বাঁধ ।(Defres)অর্থাৎ ভৈরবে ১ কি:মি: বাঁধ নির্মানে খরচ হয়েছে ১১ কোটি ৩৮.৭ লাখ টাকা। যেহেতু প্রজেক্ট টি ১০ বছর আগের, তাই এখন তৈরি করলে ২গুন খরচ হবে ধরে নিলাম। তাতে প্রতিকি:মি: ২২ কোটি ৭৭.৫ লাখ টাকা খরচ হবে ধরে নিলান। আবার আপার মেঘনার শুরু ভৈরব এবং শেষ চাঁদপুর  ফলে শেষের দিকের নদী ভয়ানক বেশি এবং খরচ ও বেশি হবে ধরে নিলাম। তাতে যদি আনুমানিক পুরা নদীতে গড়ে আরো ২ গুন বেশি খরচ হয় তাহলে খরচ আসে ৪৫.৫  কোটি টাকার মত। অতএব ১ কি.মি. বাঁধ তৈরিতে ৪৫.৫ কোটি হিসাবে ৩১২ কি.মি. বাঁধ নির্মানে খরচ হবে ১৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকার মত। (পুরাপুরি আনুমানিক অংশ)।

ভৈরব শহর রক্ষা বাঁধের পেছনের অংশ

এবার আমরা নদীর এই ৫ টি অংশের বাঁধের খরচ যুক্ত করে পাই ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি + ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪২৪ কোটি +২লাখ ১৮ হাজার কোটি +১ লাখ ১১ হাজার ৫০০ কোটি +১৪ হাজার ১৯৬ কোটি = ৮ লাখ ৮৩ হাজার ১২০ কোটি টাকার মত! এই ৮ লাখ ৮৩ হাজার ১২০ কোটি টাকা হলে প্রধান ৩ নদীকে বসে এনে নদীভাঙ্গন ও বণ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কিন্তু এই পরিমান টাকা কি আদেও জোগাড় করা সম্ভব যা কিনা আমাদের দেড় বছরের পুরা বাজেট!? (ডিফ্রেস)

একবারে সম্ভব নয় কিন্তু কিছুভাবে আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি, যেমন-
★১৫/২০ বছরের একটা পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবছর বাজেটের একটা অংশ শক্তিশালী বাঁধ নির্মানে বরাদ্ধ দেয়া।
★ দুর্বল বাঁধ নির্মান বন্ধ করে সেই টাকা দিয়ে শক্তিশালী বাঁধ নির্মান করা। পরিমানে কম করে হলেও।
★বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্ধ আনার চেষ্টা করা।
★নদী খনন করে বাঁধ নির্মান করলে প্রচুর নতুন জমি তৈরি হবে। সেই জমি জনগণের কাছে বিক্রি করে দেয়া।
★বিলাস দ্রব্য এর উপর বাঁধ নির্মানের জন্য কিছুটা কর আরোপ করা।
★বাণিজ্যিক ও দামী অংশগুলার জন্য বিদেশী ঋণ নিয়ে বাঁধ তৈরি করা। যাতে আয় দিয়ে ঋণ শোধ করা যায়।
★ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সা ধারণ জনগণের দান সংগ্রহের জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করা। ডেফ্রেস।
★প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের নিয়ে টিম গঠন করে, মান ঠিক রেখে খরচ কিভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে গবেষণায় অর্থ বরাদ্ধ দেয়া। ইত্যাদি।প্রতিবছর নদীভাঙ্গনে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি সহ যে বিপুল পরিমান আর্থিক সামাজিক ক্ষতি হয় দেশের। তা প্রতিরোধে এই কষ্ট ও খরচটুকু আমারা করতেই পারি।

প্রতিবছর এরকম অসংখ্য ভবন হারাচ্ছি আমরা

(পোষ্টের ভিত্তি তথ্য গুলা দেশের বাস্তবায়িত ও চলমান প্রকল্পগুলার তথ্য, যা সঠিক। কিন্তু এই ভিত্তি তথ্যে থেকে অনুমান করে যে তথ্যগুলা দেয়া হয়েছে তা নিতান্তই অনুমান মাত্র,এর জন্য কোন জরিপ করা হয়নি।)

ধন্যবাদ

চায়না বাঁধ সিরাজগঞ্জ