When Hasina found out: Bangladesh already changed.

অমিত রহমান:

শেখ হাসিনা জানতেন শাহবাগের গণজাগরণ তাকে সাহায্য করতে আসেনি। তবুও কৌশলগত কারণে এটাকে তিনি শুধু গ্রহণই করেননি, সাজাতেও চেয়েছিলেন নিজের মতো করে। কাদের মোল্লার রায়ের পরপরই আচমকা ঝড়ের গতিতে শাহবাগে কতিপয় ব্লগার জড়ো হন। এর পেছনে একটি সুসংগঠিত শক্তি জড়িত এই খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে বিদ্যুৎগতিতে। একজন পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলে তিনি ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেন এটাকে তার কবজায় রাখার জন্য। সঙ্গে সঙ্গেই গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেন যাতে শাহবাগের নিয়ন্ত্রণ অন্যদের হাতে চলে না যায়। খোলা হয় কন্ট্রোল রুম। খানাপিনার ব্যবস্থা করা হয়। মিডিয়া আগেই নেমে পড়েছে। প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে বিরতিহীন। প্রধানমন্ত্রী তার অনুগত কতিপয় সংস্কৃতি কর্মীকে সেখানে পাঠান। ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ নেয়। যদিও শুরুর দিকে চেনা বামপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো নিয়েও বিতর্ক হয়। তখন বলা হয় যেহেতু জয় বাংলা স্লোগান দেয়া হচ্ছে তাতে করে বঙ্গবন্ধু স্লোগান না দেয়াই ভাল। হাসিনা মেনে নেন অনেক কষ্টে। যখন জাহানারা ইমামের ছবি টানানো হয় তখন ক্ষোভ সামলাতে পারেননি। এর আগে পানি ঘোলা হয়ে গেছে অনেকখানি। দলীয় নেতারা সেখানে নাজেহাল হয়েছেন। একই যুক্তি- জাগরণকে নিরপেক্ষ রাখতে হবে। কিন্তু যখন ব্লগার রাজীব খুন হলেন তখন দৃশ্যপট বদলে গেলো। ব্লগাররা আবার ফিরে এলেন নতুন শক্তিতে। তখনই চাউর হয়ে গেছে ব্লগার রাজীবের ব্লগে ইসলাম ও মহানবী(সঃ)কে অবমাননা করে লেখার কাহিনী। ইনকিলাবের হাতেও তা পৌঁছায়। তারা ছেপে দেয় যথারীতি। স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এরপর ‘আমার দেশ’ লুফে নিল। তখনই বিতর্কিত হয়ে গেল গণজাগরণ মঞ্চ। ‘নাস্তিকদের আড্ডা’ বলে প্রচার করতে থাকলো মিডিয়ার একটি অংশ। দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে গেল জাগরণ মঞ্চের চেতনা। আওয়ামী লীগেও তখন এক ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলো। গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ইমরান এইচ সরকারের কতিপয় সিদ্ধান্ত সরকার প্রধানকে বিচলিত করলো। সরকারের চেয়ে জাগরণ মঞ্চ শক্তিশালী এই বক্তৃতার পর জানার চেষ্টা করলেন এটা বাত কি বাত কিনা? পরে যখন ইমরান সরকার জাতীয় পতাকা তুলতে বললেন তখন খোলাসা হয়ে গেল সবকিছু। প্রধানমন্ত্রী গণজাগরণ মঞ্চের শুরুটা দেখে এমনভাবে আবেগতাড়িত হয়ে গেলেন, গণভবনে বসে মোমবাতি জ্বালিয়েও একাত্মতা প্রকাশ করেন। ব্লগার রাজিবের বাড়িতে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তিনি সেখানে যান এবং রাজিবকে শহীদ বলেও বর্ণনা করেন। সংসদেও একই ভাষায় বক্তৃতা করেন। বিচারকদের প্রতিও এক ধরনের ইঙ্গিত দেন- যা দেশে-বিদেশে তিরস্কৃত হয়েছে। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার প্রতি এক ধরনের চাপ সৃষ্টির আলামত ছিল সংসদের বক্তৃতায়। ব্লগার রাজিব সম্পর্কে বা তার ব্লগ নিয়ে লেখালেখি চলতে থাকায় প্রধানমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে দেখেন তাকে সঠিক পরামর্শ দেয়া হয়নি। সম্ভবত এসব কারণে একজন গোয়েন্দা প্রধানকে চাকরি হারাতে হয়। একজন আওয়ামী লীগ নেতা তো রাজিবকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বলে ফতোয়া দিয়ে বসলেন। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ কার বিরুদ্ধে? সেই নেতার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন এখন দলের ভেতরে। রোববার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে গণজাগরণ মঞ্চ গুটিয়ে নেয়ার পক্ষে মত দেন বেশির ভাগ সদস্য। সাবেক কমিউনিস্ট বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতা বিরোধিতা করেন। তাদের যুক্তি আরও কিছুদিন না চললে লোকজন ভাববে ভয়ে গুটিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই যুক্তি মানেননি। বলেছেন, সবকিছু আবেগ দিয়ে দেখলে চলবে না। আমি তো জানি, কারা ওদের বক্তৃতা-বিবৃতি লিখে দেয়। নূহ-উল আলম লেনিন আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ- আমি নাকি গণজাগরণ মঞ্চের বক্তৃতা লিখে দেই। এটা সত্য নয়। তখন পাটমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী মজা করেই বলেন, নিজের ওপর নিচ্ছেন কেন? গণজাগরণ মঞ্চ যারা তৈরি করেছিল তারা এখন চরমভাবে হতাশ। সরকারকেই তারা এ জন্য দায়ী করছেন। তারা বলছেন, সরকার নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নেয়ার জন্য জনমনে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এটা যে আওয়ামী লীগেরই একটি প্ল্যাটফর্ম তা বুঝতে কষ্ট হয়নি।
গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়েছিল সরকারের সঙ্গে জামায়াতের কথিত আঁতাতের গল্প নিয়ে। এখানে সরকার ছিল এক পক্ষ। আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করেই জাগরণ সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী জানতেন কারা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে। এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কতিপয় ব্যবসায়ীকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়। একজন ব্যবসায়ী ৮০ লাখ টাকা দেন। বিভিন্ন লিফলেট থেকে জানা যায় একজন ঈশ্বরের কথা। তিনি কিভাবে টাকা বিতরণ করছেন তারও দালিলিক প্রমাণ ছিল লিফলেটে। বিরোধী বিএনপি শুরুতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। সতর্ক অবস্থানে থেকে একটি বিবৃতি দিয়েছিল। বলেছিল, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি জাগরণ মঞ্চকে জনগণের অন্য দাবিগুলো তুলে ধরতে হবে। ধীরে ধীরে যখন তারা বুঝতে পারলো মঞ্চের কলকাঠি সরকারের হাতে, তখন তারা ভিন্ন অবস্থান নেয়। এরশাদ গোড়া থেকেই বিরুদ্ধে ছিলেন। এখন তিনি গুটিয়ে ফেলার পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। কেবলমাত্র ভারতীয় মিডিয়া এখনও রগরগে খবর দিয়ে চলেছে গণজাগরণের চেতনা নিয়ে। ভারত সরকারের মনোভাবও পক্ষে একদম খোলাখুলিভাবে। বাংলাদেশের জনগণের কাছে ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন নয়া এক বার্তা পৌঁছে দেয়। যে কারণে মঞ্চ বিতর্কিত হয় খুব দ্রুত। বিদেশী মিডিয়া বদলে গেছে। তারা এখন বলছে, গণজাগরণ মঞ্চ সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছে। আলজাজিরা প্রায় প্রতিদিনই বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট দিয়ে চলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে শেখ হাসিনা বুঝেও কেন সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বলাবলি আছে পেছনের শক্তি এতটাই শক্তিশালী- তার পক্ষে কোন অবস্থান নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতো। ঝুঁকি তিনি নিলেন ঠিকই যখন সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। ইসলাম বিরোধী হিসেবে তার সরকার পরিচিতি পেয়েছে দেশে এবং বিদেশে। এখন তার সরকারকে ব্লগ নিষিদ্ধ করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তিন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও এক ডজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। ট্রাইব্যুনাল গঠিত হচ্ছে ইসলামবিরোধী শক্তির বিচারের জন্য। হেফাজতে ইসলামের নেতাদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে সরকারকে। তাতেও কি কাজ হবে? জামায়াত-শিবির তো তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে মার খাচ্ছে। যদিও ক’দিন আগেই তারা গুলির উৎসব করেছে। গত ৩ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৭১ জনের প্রাণ গেছে। সরকার তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে প্রশাসনের ওপর থেকে। সরকার প্রধানকে গ্যারিসনে গিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলতে হচ্ছে। সংলাপের কথা সরকারই এখন বেশি করে বলছে। বিরোধীদের মন নেই সরকারের সংলাপে। যদিও বিরোধী মতকে স্তব্ধ করতে সরকার এখনও মরিয়া। যেভাবে ডান্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে তা দেখে বোঝা বড় কঠিন এটা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের আচরণ। বিরোধী বিএনপির পক্ষে সামান্যতম সৌজন্য দেখালে আজকের অবস্থা হতো না। বাংলাদেশের রূপ বদলাতো না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কতিপয় উক্তি পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করেছে। সিভিল প্রশাসনেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। পুলিশ যে কোন সময় বেঁকে বসতে পারে। এতো কিছু ঘটে যাচ্ছে সরকারের পাশে বিদেশী কোন শক্তি দাঁড়ায়নি। বরং সমালোচনামুখর রয়েছে বিদেশী মিডিয়া। ভারত শেষ পর্যন্ত কি করবে তা বলা কঠিন। তারা তাদের স্বার্থই দেখবে। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। শেখ হাসিনা এখন কি করবেন? তিনি কি তার নীতি, কর্মপরিকল্পনা বদল করবেন। নাকি অলআউট যাবেন। সেটা যে সম্ভব নয় তা কিন্তু সচেতন যে কেউ বলে দিতে পারেন।

Source: Manab Zamin

2 COMMENTS

  1. TO A BENGALI BLOGGER WHO RECKONS MODERN MUSLIMS ARE IGNORANT OF CONTEMPORARY WORLD
    Today the banner of Islam is not in the hands of “HALF-EDUCATED, POOR, VILLAGE MULLAHS, and WHO STILL BELIEVE EARTH HAS FOUR CORNERS”. But in the hands of the Muslim/Muslima who are best, the best western universities could produce. Moreover most of them are master of every known human faculties. Hence the cry of ARMAGEDDON/911/”WAR AGAINST TERROR”. As long as ( and for 2 hundred years) when the banner of Islam was in the hands of “VILLAGE MULLAHS” the adversaries of Islam had such a good time. Praise be to ALLAH, things have changed and the adversaries would not accept the reality in their vain effort to maintain the status quo, that they are so accustomed to. Please do not underestimate the genius Muslim possess how much you might detest it.

    AWAMI LEAGUE, ITS ALLIES- COMMUNISTS, ATHEISTS, AGNOSTICS, APOSTATES can infiltrate the long march as saboteurs to blame the HEFAZAT causing destruction.. This is their trade-mark.

Comments are closed.