ছাত্রলীগের কুকর্ম বনাম মুন্নী সাহার ‘শিনাজুরি ‘
এক অবাধ্য ছেলে তার মাকে গালি দেয়। মা তার বড় ছেলের কাছে ছোট ছেলের বিরুদ্ধে নালিশ করে। উত্তেজিত বড় ভাই ছোট ভাইকে ধমক দেয় , হারামজাদা, ফকিন্নীর পুত! তুই আমার মারে গালি দিয়েছিস ? তোর আর রক্ষা নাই।…….
সাংবাদিক মুন্নী সাহা কর্তৃক শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাক্ষাৎকারটি দেখে উক্ত গল্পটি মনে পড়ে গেলো । একজন ভিসির প্রতি উক্ত সাংবাদিকের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য, আক্রমণের ভাষা এবং তার সার্বিক বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে… অনেকেই বেদনায় কাতর হয়েছেন । প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদ সহ আরো অনেক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় মুন্নী সাহার এই ধরনের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ( শত হোক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট) অনেকেরই গতরে মারাত্মক যন্ত্রনার সৃষ্টি করেছিল।
গতকাল ছাত্রলীগ কর্তৃক কয়েকজন শিক্ষকের নিগৃহীত হওয়ার চেয়ে মুন্নী সাহা কর্তৃক এই ভিসি মহোদয়ের নিগ্রহ কোন অংশেই কম হবে না।
যার প্রতি দরদ দেখিয়ে মুন্নী সাহা এই ভিসি সাহেবকে এমন প্রক্রিয়ায় তুলোধনো করেছেন সেই জাফর ইকবাল সাহেবও একাত্তরে টগবগে তরুণ ছিলেন। যুদ্ধে যাওয়ার বয়েস হওয়ার পরেও তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন নি। কিন্তু মুন্নী সাহা ডঃ জাফর ইকবালকে কখনই এমন নোংরা ও তীর্যকভাবে আক্রমণ করেন নি।
একজন সাংবাদিক হিসাবে মুন্নী সাহার জেনে রাখা উচিত যে এবারই প্রথম ‘ জয় বাংলা’ শ্লোগানটিকে এমন জঘন্য কাজে ব্যবহার করা হয় নি । গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৬৫ জন শিক্ষকের উপর এই জয় বাংলা শ্লোগান দিয়েই আক্রমণ করা হয়েছে। এই জয় বাংলারই এক মন্ত্রী শত শত শিক্ষকদের উপর পেপার স্প্রে বা মরিচের গুড়ার পানি নিক্ষেপ করেছেন। এই জয় বাংলা শ্লোগান দিয়েই বিশ্বজিতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এই জয় বাংলা শ্লোগান দিয়েই মায়ের পেটে থাকা সন্তানকে গুলি করা হয়েছিল। এরকম লিখতে গেলে শত শত পেইজ লেখা যাবে। দেশে যত চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি হচ্ছে সেই সবগুলিই এই জয়বাংলা শ্লোগান দিয়েই সম্পন্ন করা হচ্ছে।
কাজেই জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগের কুকর্ম আর জয় বাংলার স্পিরিটে উত্তেজিত মুন্নী সাহার শিনাজুরির মধ্যে মূলতঃ কোন পার্থক্য নাই। একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ মাত্র।