Madam Prime Minister; are you ready?

শারমিন শামস

blogger

আমি কোনদিন কোন লেখায় বিচার চাইনি। আমি মুখেও বিচার চাই না। বিচার চাইবো কেন? চাইতে হবেই বা কেন? রাষ্ট্র স্বাভাবিক নিয়মে বিচার করবে, অপরাধীকে শাস্তি দেবে। আমি সাধারণ মানুষ। প্রত্যেকবার একেকটা বিভৎস হত্যাকাণ্ডের পর কেন আমাদের তীব্র স্বরে বিচার চেয়ে চেয়ে লুটিয়ে পড়তে হবে?
এবং এর পরেও যখন বিচার হবে না, দিনের পর দিন অপরাধী থাকবে ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং একসময় আরেকটি ঘটনা পূর্বেরটাকে আড়াল করে দেবে- এই সংস্কৃতিতে আমি কেনই বা আর কথা বলবো? বরং আমি মাথা পেতে রাখি। বরং আমি অপেক্ষায় থাকি- কবে চাপাতিওয়ালা আসবেন, ড্রয়িংরুমে পিঁড়ি পেতে বসে দুটো ভালোমন্দ বলে, ঘাড় থেকে ধড়টা আলাদা করে চলে যাবেন।
এই হবে। আমি জানি। যতবার লিখেছি, আমি এইটাই বলে এসেছি। আমাদের নিয়তি নির্ধারিত। আমরা শরীরের উপড়ে ধড়টা নিয়ে এখনো চলছি-ফিরছি, এই আমাদের বাড়তি পাওনা। ধড় আলাদা হবে। সময় সমাগত। সরকার আমাদের ধড় আলাদা করার লাইসেন্স ওদের দিয়ে রেখেছে। ওরা লাইসেন্স হাতে নেমে পড়েছে মাঠে। পুলিশের মহা পরিদর্শক তো বলেই দিয়েছেন, সীমানা লঙ্ঘন না করতে। এই সীমানার সীমা যে কতটুকু, তাতো বলে দিলেন না। তাহলে আমরা জানবো কি করে যে, কাঁটাতার পেরিয়ে যাচ্ছি, কি যাচ্ছি না! আর সীমা লঙ্ঘন করাই আমার অন্যায় হচ্ছে, অথচ আমার ঘরে এসে কেউ কুপিয়ে মেরে যাচ্ছে, এটা কি তাদের সীমার মধ্যে পড়ে?
একটি চিন্তা চেতনাহীন বর্বর সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের মাঠে সহী যোদ্ধার দল। আপনারা ভালোই এগুচ্ছেন। জয় মনে হয় আপনাদেরই হবে। তবে আমরা খড়কুটো। আমরা সামান্য। ফাইনাল ভিক্টরি পেতে হলে আপনাদের যেতে হবে সরকার পর্যন্ত। সরকারের ধড় আলাদা করার পরই আপনাদের চূড়ান্ত বিজয় ঘোষণা করতে পারবেন। ঠিক যেমন পেরেছিলেন ৭৫-এ।
আমি কোন লেখা লিখবো না ভেবেছিলাম। তার চেয়ে ফুল-পাখি-নদী-নালা-খাল-বিলের সৌন্দর্য্য দেখে সময় কাটানো ভালো।
অনলাইনে নানারকম নিউজ ফিচার আসে। বেছে বেছে পড়ি। মা্ত্র আট ঘণ্টায় কীভাবে ফর্সা হবেন। স্বামীকে বশ করার সাতটি নিয়ম। কীভাবে বুঝবেন ‘বস’ আপনাকে ভালো পায় কী না- ইত্যাদি।
কিন্তু নিউজফিড ভেসে যাচ্ছে নানান ‘নিউজে’, নানান বর্ণিল লেখায়। কেন নিলয়ের স্ত্রী আশামণি গেলেন না শেষকৃত্যে? নিলয়ের বৌ নিয়ে আত্মীয়রা যা বললেন। পড়ি সবই।
আশামণি সাদামাটা চেহারার সাধারণ একটা মেয়ে। খুব ফর্সা রূপসী হলে এতদিনে কেচ্ছাকাহিনী আরো অনেকদূর ছড়াতো। এইবেলা তার শ্যামলা রঙ আর সাদামাটা চেহারা তাকে কিছুটা বাঁচিয়েছে। তবে নিলয়কে ছাড়েনি। নিলয় হিন্দু। নিলয় নাস্তিক। নিলয় লিভ টুগেদার করতো। নিলয় বেয়াদপ।
তো নিলয় ধড়খানা রেখে গেছে আপনাদের চরণে। নিলয় নাস্তিক, তবু তার হিন্দুত্ব ঘোচেনি আপনাদের চোখে।
হ্যাঁ, আপনাদেরই বলছি। যারা বুড়ো আঙ্গুল মুখে পুরে চুষতে চুষতে বলছেন, ‘নাস্তিকতা নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে’। বেশ, হচ্ছে। কিন্তু আমি জানতে চাই, এই কি তা বলবার সময়? এই কি নিলয়ের সমালোচনার সময়? এই কি সমস্ত ব্লগারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সময়? এই কি নাস্তিক-আস্তিকের লড়াইয়ের সময়?
ধিক আমাদের! ধিক ধিক ধিক! সহস্রবার! একটার পর একটা বীভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটছে, অথচ বিচার হচ্ছে না। দিনের পর দিন তদন্ত শেষ হচ্ছে না। অপরাধী ধরা পড়ছে না। এ নিয়ে যেখানে ক্ষোভে ফেটে পড়ে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে দেবার কথা আমাদের, আজ আমরা বসেছি হিসাব নিকাশে। বসেছি কে নাস্তিক, কে বাড়াবাড়ি করছে, কে উসকে দিচ্ছে, কে খারাপ, কে নষ্ট, কে বেয়াদপ সেই মাত্রা পরিমাপে। আর তা নয়ই বা কেন? আমরা তো সেই জাত, যারা যৌনকর্মীকে ধর্ষণ যৌক্তিক, আর ন্যায়সঙ্গত মনে করি।
জাতিগতভাবে আমাদের নৈতিক অবস্থান নিচে নেমে গেছে, নাকি আগাগোড়াই আমরা এরকম, আমার জানা নাই। এর জন্য একজন নৃতত্ত্ববিদের সাথে কথা বলতে হবে। তবে গত ৪৪ বছরে আমাদের সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগ এমনই হীন ও কদাকার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং তা পরীক্ষিত। তাই আমি আর বিচার চাই না। কারণ বিচার হবে না।
তবে আমি নিশ্চিত, এভাবে চলতে দেয়া হলে সরকারের ধড়ও আলাদা হবে। রক্তে ভেসে যাবে। আমি দিব্য চোখে দেখতে পাই। আমি এক সাধারণ নাগরিক। ভোট দিয়ে একটা সরকার এনেছি। সে আমাদের নিরাপত্তা দেবে। আইনের শাসন দেবে।
কিন্তু দিতে পারে নাই। আমি হা-হুতাশ করে বসে আছি ধড় পেতে দিয়ে। এই ধড়ের হিসাব একদিন শেষ হবে। তখন গণভবন-বঙ্গভবন-সচিবালয় প্রশাসকের কার্যালয়-থানা- মিন্টুরোডে ছড়িয়ে পড়বে ওরা। হাতে উদ্যত চাপাতি। ওদের চাই চূড়ান্ত বিজয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রিয় শেখ হাসিনা, আপনি প্রস্তুত আছেন তো সেই দিনটির জন্য?

Source: WomenChapter