I will not spare TIB (Transparency International Bangladesh)

আইবিকে আমি ছাড়ব না : সাক্ষাৎকারে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

suranjit

টিআইবিকে (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ) আমি ছাড়ব না। ওদের আমি ক্ষমা চাইবার জন্য ৩ দিন সময় দিলাম। কিন্তু ওরা তাতে কর্ণপাত করল না। সে কারণে আমি ‘ফরেন ডোনেশন বিল’ সংশোধন করে টিআইবিকে শায়েস্তা করব। টিআইবি কীভাবে বাংলাদেশে কাজ করে তা আমি দেখে নেব। গতকাল মঙ্গলবার তিনি এমন মন্তব্য করেন। গত ২৫ অক্টোবর এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে টিআইবি

জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ বলে আখ্যায়িত করে। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে জাতীয় সংসদ। গত ৯ অক্টোবর জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন বিশিষ্ট পার্লামেন্টেরিয়ান, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত টিআইবিকে তিন দিন সময় বেঁধে দেন ক্ষমা চাইবার জন্য। এ দিন তিনি জাতীয় সংসদ কলুষিত হচ্ছে এমন মন্তব্য করেন এবং এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান। গত ১২ নভেম্বর সে সময়সীমা পার হয়েছে। কিন্তু টিআইবি ক্ষমা চায়নি, কোনো ধরনের বিবৃতিও দেয়নি।

তিন দিনের মধ্যে টিআইবিকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে এখন আপনার প্রতিক্রিয়া কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ভোরের কাগজকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমি ওদের ছেড়ে দেব না। তাদের সংসদের প্রিভিলেজ কমিটিতে ডাকার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আমার হাতে (স্থায়ী কমিটিতে) পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অপেক্ষমাণ ‘ফরেন ডোনেশন বিল’ এ বিধান সংশোধন করে সংসদে আইন পাস করে টিআইবিকে সাসপেন্ড করার কথাও চিন্তা করছি। এ নিয়ে আমি স্থায়ী কমিটিতে আলাপ-আলোচনা করব। তিনি বলেন, আইনের বলে সংসদ যদি তাদের সাসপেন্ড করে তাহলে প্রধানমন্ত্রীরও কিছু করার থাকবে না। তাই এখনো ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তাদের এ বক্তব্যে জাতীয় সংসদ কলুষিত হয়েছে, তারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, টিআইবি কি সমস্ত আইনের ঊর্ধ্বে? দেশের পার্লামেন্ট সরকার সবকিছুর ঊর্ধ্বে? তাহলে রাষ্ট্র-সরকার কি টিআইবির কাছে এতই অসহায়? টিআইবিও আইনের অধীন, সংবিধানের অধীন, পার্লামেন্টের অধীন। এর এক ইঞ্চি বাইরে যাওয়ার অধিকার নেই। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক সংসদীয় কমিটিতে এসে বক্তব্য দিয়েছেন, আর সংসদকে বলেছেন ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’। তাহলে আপনারা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা কি ‘বাঁদর নাচের অন্তর্গত’? আপনারা যেই হোন যদি সংবিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে অপরাধী হবেন। সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালা বলে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন। অচিরে ক্ষমা চান। নইলে খবর আছে।

তিনি টিইইবির নির্বাহী পরিচালককে ‘জীবনেও কোনোদিন সংবিধান ও পার্লামেন্ট সম্পর্কে এমন কথা বলবেন না’ মর্মে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দের। তা না হলে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতে ফরেন ডোনেশন আইন রয়েছে। তা না হলে একটি বাক্য লিখে দেব। তাদের
স্বাধীনতা এইটুকু নয়। যদি সংবিধান ও পার্লামেন্টকে কটাক্ষ করে কথা বলেন তাহলে সেই টিআইবি এনজিওর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।

সুরঞ্জিত বলেন, পার্লামেন্টের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি, বিল পাস ইদ্যাদি নিয়ে কথা বলতে পারনে কিন্তু হঠাৎ করে সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালা বলে বসলেন তারা। এনজিওদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো অপরাধ করা হয় তাহলে এই অপরাধে সংসদ; সংবিধান যদি সাসপেন্ড করে দেয় আমার বলার কিছু নেই, প্রধানমন্ত্রীরও কিছু বলার থাকবে না।

এদিকে গাইবান্ধা-১ আসনের সাংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন এক শিশুর পায়ে গুলি করে আসামি হয়েছেন, আবার টাঙ্গাইল-৩ আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানার বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়েছে- এসব বিষয়ে জাতীয় সংসদকে তারা কলুষিত করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সুরঞ্জিত বলেন, এমপিদের দায়িত্ব অনেক। তাদের কাজকর্ম যেন কোনোভাবেই পার্লামেন্টের ভাবমূর্তি ক্ষতি না করে সেদিকে নজর রাখা দরকার। কিন্তু কোনো কোনো এমপি তাদের ব্যক্তিগত অপকর্ম দ্বারা জাতীয় সংসদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তাদের মনে রাখতে হবে জনগণের ভোটে তারা এমপি হয়ে মহান সংসদে এসে আইন প্রণেতা হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাই তাদের কাজকর্ম যাতে কোনোভাবে সংসদ ও এলাকার জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।

Source: BhorerKagoj