Family rule and politics of power sharing:  পরিবারতন্র ও জোটের রাজনীতি

পরিবারতন্র ও জোটের রাজনীতি

 

Credit ThinkWorth

 

খালিদ আসাদুল্লাহ, প্রকৌশলী ও চিন্তাবিদ, ব্রিসবেন                     ২১/০৯/১৮

পাকিস্তান আমেরিকার জোটে কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধেয় গুরু আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন  ০+০+০…=০, কিন্তু ১+০+০+…=১। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জোটের নৃত্য চলছে  বিশ বছরের অধিক কাল। আওয়ামী ১৪ দল, বিএনপি ১৮ দল ছাড়াও, আছে বাম জোট ,ডান জোট, ইসলামি জোট, আছে হরেক রকম জোট। দেখে মনে হচ্ছে এরা পাটীগণিতের প্রথম ভাগ ভুলে গেছেন। বেশীর ভাগ দলের গ্রামে, গঞ্জে, ঘাটে, মাঠে কোন শাখা প্রশাখা নেই,, নেই তৃনমূলে কোন প্রভাব।  ছোট দুই চারটি দল ছাড়া বাকী সবাইকে শূন্য বলা যায়।

আসলে থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়। আছে দুটি পরিবার। জনগণ কোন পরিবারকে সিংহাসনে বসাবে তাই নিয়ে নির্বাচন। বিএনপির ব্যানারে  জিয়াউর রহমান সাথে পুত্র তারেক ও  স্ত্রী খালেদা। আওয়ামী ব্যানারে শেখ হাসিনা সাথে পুত্র জয়।  জাতির পিতার  আশীর্বাদে তাঁদের একছত্র আধিপত্য।ঢোল পেটাবার ঢুলীর অভাব নেই। সাষ্টাঙ্গে প্রণামে উপনেতা, পাতিনেতার সাথে আছে সুভিদাবাদী বুদ্ধিজীবী, টাকার বস্তা হাতে ব্যবসায়ী, গুণ্ডা পাণ্ডা সবাই ।প্রয়োজনে সিংহাসনে পরিবারের নেতা বা নেত্রীর অবর্তমানে তাঁর পাদুকা রাখতে তাদের আপত্তি নেই। ১৯৯২ সাল থেকে এই পরিবারতন্রের কাছে বন্দী দেশের জনগণ।

দেশে শক্তিশালী তৃতীয় শক্তি নেই।  ৫২ সালের যুক্তফ্রন্টে প্রভাবশালী দল ছিল।বর্তমানে এর অভাব লক্ষণীয়, যদিও এরশাদ-রওশনের জাতীয় পার্টি এবং জামাতে ইসলামের কিছু এলাকায়  প্রভাব আছে। বাপ দাদার এলাকায় কিছু প্রতিযোগী উত্তরাধিকারসূত্রে দু একটা আসন পেতে পারেন।  ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখার জন্য প্রগতিশীল দলের প্রতি  জনগণের শ্রদ্ধা ছিল । বর্তমানে মার্কস, লেনিন , মাওবাদীরা  বিভিন্ন স্বার্থে বিভক্ত। শতকরা একভাগ ভোট যদি মেলে। মতিঝিলের বায়তুল মোকাররমের উল্টো দিকে হলুদ একতালা বিল্ডিংটার কথা এখনো মনে পড়ে। ওখানে  এখন বহুতলবিশিষ্ট  একটি দালান। প্রয়াত মনি সিংয়ের উত্তরসূরিরা মুক্ত বাজারে ভালই আছেন।কিন্তু ভোটের ব্যাংক শূন্য।  এককালীন বৈজ্ঞানিক সমাজ তন্ত্রের  ধ্বজাধারী  বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে জড়িত জাসদ শেখ হাসিনার জোটে। তাদের অপর কমরেডরা পুরানোপল্টনের এক অন্ধকার এপার্টমেন্টে দেয়ালে টাঙ্গানো মার্কস ,লেনিন ও মাওসেতুংর পূজায় মগ্ন।ন্যাপ ভাসানী বা ন্যাপ মুজাফ্ফরদের কেও চেনে না। শূন্য দলগুলোকে থালা  হাতে জোট বা মহাজোটের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। নাহলে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট।

১৯৫৪ সালের তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের নির্বাচন দেখেছি। বার বছরের স্কুলের ছাত্র আমি।ভোট টোট বুঝতাম না। এটুকু মনে আছে , আমাদের এলাকার ভোটকেন্দ্র ছিল বকশী বজারের মোড়ে , যেখানে এখন মেডিকেল কলেজের হোষ্টেল। কেন্দ্রের কাছেই ছিল মুসলিম লীগের সামিয়ানা। ভোটারদের জন্য ছিল ফ্রি পান। আমরা দুষ্ট ছেলেরা বেশ কটা খেয়েছিলাম। বিরোধী যুক্তফ্রন্টের তাঁবু ছিল কিনা মনে নেই।  বিপুল ভোটে জয়ী হয় তাঁরা। সরকার ছিল মুসলিম লীগ, কারচুপির কোন প্রশ্নই ছিল না।।  ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়  জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মার্শাল ল’য়ের আমলে।  আওয়ামী লীগ ছয় দফার দাবীতে ১৬০ টি আসনে জয় করে কেন্দ্রীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি  আসনের মধ্যে ২৯৩টি বাগিয়ে নেয়। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় তখন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অবাধ রাজত্ব।বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন, ‘ আমি ক্রেন দিয়া মুশতাকরে তুইল্যা আনছি’। মনে আছে দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক বর্তমান মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মন্জুরের অফিসে বসেছিলাম আমার সহপাঠী ফেরদৌস কোরেশীর সাথে। আমাদের উপস্থিতে জার্মানী থেকে আগত পর্যবেক্ষণ দল  নির্বাচন সুস্থ হয়নি  বলে মন্তব্য করে।  ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্বয়ং মুক্তি যুদ্ধের প্রথম স্তম্ভ গনতন্রকে ভেঙ্গে দিয়ে বাকশালের মাধ্যমে একদলীয় রাজনীতি কায়েম করেন।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়া নতুন দল বিএনপি গঠন করেন ১৯৭৮ সালে।শ্রমিকদের সাথে নিজ হাতে খাল কেটে তিনি তখন বেশ জনপ্রিয়। বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা , দলছুট ন্যাপ ভাসানি সহ তাঁর দলে যোগ দেয় স্বাধীনতাপূর্ব মুসলিম লীগপন্থী বাংলাদেশ বিরোধীরা।এখানে মনে রাখার দরকার, ১৯৭০ সালে মোট ভোটারের ৪০% ভোট দেয়নি। যারা দিয়েছে, তাঁদের ৩০% ছয়দফার বাক্সে পড়েনি । বিএনপি যে ডানপন্থী  পরবর্তীতে জিয়ার কার্য ক্রমে তা প্রকাশ পায়।মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানের, বাংলাদেশ বিরোধী শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধান মন্ত্রী এবং কতিপয় রাজাকারকে মন্ত্রী বানানো ছিল  লাখো শহীদ ও নির্যাতিত মা বোনদের  প্রতি মারাত্মক অশ্রদ্ধা । শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় স্তম্ভ ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধান থেকে মুছে ফেলেন তিনি। ৪৭ বছর পর দলীয় পণ্ডিত ব্যক্তিরা আজকাল স্বাধীনতার সত্যিকার চেতনা কি ছিল তাই নিয়ে টকশোতে মুখের ফেনা তুলছেন। জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ছিলেন সাম্যবাদী এবং ধর্মনিরপেক্ষ। “জয় বাংলা” ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বতঃস্ফূর্ত শ্লোগান। “জয় বাংলাদেশ” হোতে পারে, কিন্তু “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” হোতে পারেনা। পাকিস্তানের সাথে আমাদের নাড়ীর সম্পর্ক কাটা হয়েছে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে অনেক রক্ত ক্ষরণের মাধ্যমে।

১৯৮২ সালে জনগণের নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে মার্শাল লয়ের মাধ্যমে গদিতে বসেন তৎকালীন আর্মী চীফ লেঃজেনারেল এরশাদ। মজার কথা তাঁকে অভিনন্দন জানান আজকালের গণতন্ত্রের বরকন্যা শেখ হাসিনা। আইয়ুব খান ও জিয়ার ভূত এরশাদকেও পেয়ে বসে।  গণতন্ত্রকে পুনর্বহাল করার জন্য নূতন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টীর জন্ম দেন তিনি।ভাত ছড়ালেই কাক। বাম ডান সবাই রং বদলে ডিগবাজী দিয়ে তাঁর তাঁবুতে হাজির।। নির্বাচনে দলের অভাব নেই। জামাতে ইসলাম, আওয়ামী লীগ ছাড়াও ছিল ফ্রীডম পার্টি,  যার নেতা ছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যার নায়ক কর্নেলফারুক। অবিশ্বাস্য হোলেও সত্য, শেখ হাসিনা আপত্তি করেননি। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জয়ী হয়। বিএনপির অবর্তমানে কারচুপির কথা তুললেও সরকার আমল দেয়নি। কট্টর ডানপন্থী এরশাদ ইসলামকে জাতীয় ধর্ম করে  সংবিধান পরিবর্তন করেন। যেমন কিছুদিন আগে নেতানেহু তাঁর দেশের আরবদের উপেক্ষা করে ইহুদি ধর্মকে ইসরাইলের জাতীয় ধর্ম করেন।  মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি পাকিস্তান ফেরত এরশাদের কোন শ্রদ্ধা থাকার কথা নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা এরশাদকে বর্জন করেননি বরং আট বছর সংসদের বিরোধী আসন আলোকিত করে স্বৈরশাসনকে বৈধতা দেন। ১৯৯০ সালে  এক দূর্বার ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদের পতন ঘটে। ১৯৯১ সালে সবার সন্মতিতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে  নির্বাচন হয়। বিএনপি জয়ী হয় যদিও আওয়ামী লীগ কারচুপির প্রশ্ন তোলে।

নিয়তির পরিহাস।পরিবারতন্র ও জোটের রাজনীতির খপ্পরে পড়ে বাংলাদেশ। শুরু হয় কুশাসন, দুর্নীতি ও দলীয়করণের লড়াই। শেখ হাসিনার দাবীতে ১৯৯৬ সালে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচন হয় নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে।জাতির বিবেকের  কাছে আমার প্রশ্ন ছিল তখন, যারা নির্বাচনে চুরি করে তাঁদের হাতে জনগণ দেশ চালাবার দায়িত্ব দেয় কি করে। শেখ হাসিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে তাঁর এককালীন বন্ধু এরশাদের সহায়তায় প্রধান মন্ত্রী হন। প্রশ্ন থাকে আদালতে অভিযুক্ত আসামী  প্রধানমন্ত্রীর ইশারায় কারাগার থেকে মুক্তি পায় কি করে। এতে বোঝা যায় বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের আজ্ঞাবহ ছিল এবং এখনো আছে। দেশ থেকে বিতাড়িত সাবেক বিচারপতি সিন্হা হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে এর সত্যতা প্রমান করেছেন।

২০০১ সালে নির্বাচনে জামাতের সাথে জোট করে বিএনপি জয়লাভ করে । দুই রাজাকারকে মন্ত্রী বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আরেকবার অপমান করেন জিয়ার স্ত্রী খালেদা। দুর্নীতি আর অপশাসন চলে লজ্জাহীন গতিতে। ১৯০৬ সালে আওয়ামী লীগ গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় সরকারের দাবীতে লাগাতার হরতাল করে অফিস, আদালত, দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। যানবাহন ও চট্টগ্রাম বন্দর অচল হয়ে পড়লে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রচুর ক্ষতি হয়। অবশেষে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে একটি  নির্দলীয় পুতুল সরকার তৈরি হয়।  শেখ হাসিনা এটা তাঁর আন্দোলনের ফসল হিসাবে গর্ব করলেও, বিএনপি নেত্রী খালেদার সাথে তাঁকেও “ মাইনাস টু” র ফাঁদে পড়তে হয়। পরিশেষে ২০০৮ সালের নির্বাচনে হাসিনা জয়লাভ করেন।  শুরু হয় এবার আওয়ামী লীগের অপশাসন ও লুটের পালা। দলীয়করণের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয় ”নির্দলীয় সরকারের”  জননী হাসিনা, তাঁর ক্ষমতা দীর্ঘায়িত এবং নিশ্চিত করার জন্য নিজের সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে সংবিধান বদলে দেন। ফলে ২০১৩ সালে বিএনপি জোটের  জ্বালাও পোড়াও ও লাগাতার হরতালে জনজীবন দুঃসহ হয়ে উঠলেও হাসিনার জিদ বজায় থাকে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়। এরশাদ বলেছিলেন নির্বাচনে যাবেন না, গেলে লোকে তাঁর মুখে থুথু ফেলবে। কিন্তু জেলের জুজুর ভয় এবং মন্ত্রিত্বের গদির লোভে তিনি তাঁর পুরানো সাথী শেখ হাসিনার মহাজোটে যোগ দেন। তথাকথিত সংসদে তাঁর দল সরকার ও বিরোধী আসন অলংকৃত করে,  তাঁরই ভাষায় হাসিনার গৃহপালিত দলে পরিণত হয়। এটা বেহায়ার বোকামি বা হাসির ব্যপার নয় । এটা গোটা জাতির অসহায়তা ও দূর্বলতার পরিচয়।

পাঁচ বছরে উন্নয়ন ও দুর্নীতির সাথে পাল্লা দিয়ে বুড়িগঙ্গার জল আরও নোংরা হয়েছে। এখন নির্বাচনের মওসুম।জোটের সংস্কৃতি বেশ চাঙ্গা। কিশোর কিশোরীর নিরাপদ সড়ক ও কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে পুঁজি করে ছোট বড় বিরোধী দল লাউঞ্জ রুমে মিটিং করতে ব্যস্ত। মাঠে নামবে কি নামবে না। রাস্তার মোড়ে পুলিশ , ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী, রাতের অন্ধকারে র্যব। তাছাড়াহাওয়া ভবনে এখনও লন্ডন থেকে ফাইনাল বার্তা আসেনি। একগুঁয়ে শেখ হাসিনা  ‘জোড় যার মুল্লুক তাঁর’ রাজনীতিতে বদ্ধপরিকর। কারণ নির্বাচনে হারলে  নাজিমুদ্দিন রোডের দুই স্টার হোটেলে যেতে হোতে পারে।   জনগণ পড়েছে মাইনকার প্যাঁচে। ২০১৩ সালের জ্বালাও পোড়াওর পুনরাবৃত্তির হবে কি হবে না। মাঠ পর্যায়ের বিনপির গুণ্ডারা খেতে না পেয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে অনেক আগেই। বিরোধী নেতা উপনেতারা অনেকে জেলে। নতুন ঐক্যজোটের নেতারা ভদ্রলোক। বিকল্পধারার বি চৌধুরী পঁচিশ বছর বিএনপির কুকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। গণফোরামের নেতা কামাল হোসেন নৌকায় চড়ে একবার জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু দুই নেতাই পরবর্তীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে নেমে জামানত হারান। আসম রব, আওয়ামী লীগ থেকে জাসদ, জাসদ থেকে আবার আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি হাসিনার মন্ত্রী ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত। বিবেককে ডাস্টবিনে ফেলে এরা এখন বিএনপি দুয়ারে। তারেক রহমান ভালো করে জানে ,জামাতের ভোটের ব্যাংক আছে এদের নেই।

তরুণদের মধ্যে অনেকের মেধা আছে। কিন্তু শেখ মুজিব ও জিয়ার মতন সাহস এবং কারিশমা নেই।  কিছুদিন আগে বাংলাদেশের কিশোর কিশোরীরা সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিল তাঁদের দেশে আইনের শাসন নেই। অনেক ব্যানারের মধ্যে “ দেশ মেরামতের কাজ চলছে” সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সাংসদ, আমলা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাঁতে লজ্জা পায়নি। দেশবাসীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাবার কিছু ছিল না। আমরা আইনকে অবজ্ঞা করা শুরু করেছি স্বাধীনতার পর থেকেই।  কিশোর কিশোরীদের প্রতি আমার অনুরোধ, সত্যিকার ইতিহাস জানতে হলে আর্কাইভে গিয়ে যেন তৎকালীন সংবাদপত্র পড়ে। দেখবে খুন,ধর্ষণ,গুম, ব্যংকলুটের স্বাধীনতা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধ নকল। পারিবারিকরন, দলীয়করণের রাজনীতি। দূর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়।

 ছেচল্লিশ বছরের অপশাসন ও অপকীর্তির নীরব সাক্ষী সাভারের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী হাসিনা তাঁর ক্যাডারকে একবার বলেছিলেন, “একটা লাশ ফালাইলে, দশটা লাশ ফালাই দিবা “। আইনের শাসন কোনকালেই ছিল না। ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার ছয় মাসের মধ্যেই বিবিসি একটি ডকুমেন্টরি প্রকাশ করেছিল, “ Is that what we fought for?” এটা ছিল আমাদের নৈতিক চরিত্র ও আইনের প্রতি অশ্রদ্ধার ইংগিত।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কখনো বলেছেন,” কে আছো জওয়ান, হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ ”। কখনো হুংকার দিয়ে বলেছেন, “ আগুন জ্বালা , আগুন জ্বালা, ফেল উপাড়ি “। বেঁচে থাকলে ব্রিটিশ আমলের মতো এই সরকারের আমলেও তাঁকে কারাগারে যেতে হোতো।

1 COMMENT

  1. A very balanced and well argued article. Author’s last statement, “জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কখনো বলেছেন,” কে আছো জওয়ান, হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ ”। কখনো হুংকার দিয়ে বলেছেন, “ আগুন জ্বালা , আগুন জ্বালা, ফেল উপাড়ি “। বেঁচে থাকলে ব্রিটিশ আমলের মতো এই সরকারের আমলেও তাঁকে কারাগারে যেতে হোতো।” speaks of his frustration and also of the despicable state of deficits of freedom that characterises the current governing arrangement in Bangladesh.

Comments are closed.