বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে গতকাল ১ এপ্রিল। বাঙালিরে এপ্রিল ফুল বানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১২ হাজার কোটি বের করে নেয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে সরকারের এক মিটীং এ। যার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন শেয়ার মার্কেটের দরবেশ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন ঋনখেলাপী সালমান এফ রহমান। আমার কথা না। স্বয়ং অর্থমন্ত্রী নিজে সাংবাদিকদের বলেছেন এই পরিকল্পনা সালমানের। ১২ হাজার কোটি টাকার গন্ধ পেয়ে শেয়ার মার্কেট এমন জাম্প করছে যে ২০১৫ সালের পর প্রথম এমন জাম্প করলো। পার্ফেক্ট সেটআপ বাই দরবেশ। ইলেকশনের এই বছরেই সবচেয়ে বড় দূর্নীতিটা হতে যাচ্ছে।
যেভাবে সংকটের সুযোগ থেকে এই হাজার কোটি টাকার খেলাটা সামনে আনলো সালমান এফ রহমান
১. ব্যাপকমাত্রায় ঋণখেলাপি। নতুন ব্যাংকগুলিতে শুরু থেকেই ব্যাপকমাত্রায় ঋন দূর্নীতি করে টাকা সরানো হয়েছে। সোনালী, জনতা, বেসিক, ফার্মারস (মখা) কোনটার কথা বলবেন। এমন কোন ব্যাংক নাই যেটা মাত্রাতরিক্ত খেলাপী ঋণের ভারে জর্জরিত না। এই ব্যাপক টাকা সরায়ে সুইস ব্যাংকে জমা হচ্ছে। দুনিয়ার নানান দেশে ইনভেস্ট হচ্ছে। সিংগাপুরের শপিং মল থেকে শুরু করে ইউক্রেনের পাওয়ার প্লান্ট- এমন কিছু নাই বাংলাদেশের এই ঋণের টাকায় কেনা হয় নাই।
২. এইসব ব্যাংকের গ্রাহকরা যখন টাকা চায়, তারা পায় না। কারন মূল্ধনসহ খেয়ে ফেলছে ব্যাংক। এই টাকা কে জোগাবে? বাংলাদেশ ব্যাংক।
৩. ব্যাপক মাত্রার লিকুইডিটি ক্রাইসিসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টাকা চেয়ে চেয়ে হয়রান ছোট ব্যাংকগুলি। সমস্যার সমাধান করতে ১২হাজার কোটি টাকা ইকোনমিকে ইঞ্জেক্ট করার পরিকল্পনা দেয় সালমান সাব। ব্যাংক যাতে সবটাকা ঋন না দিয়ে ফেলে ও গ্রাহককের কিছু টাকা হাতে রাখতে পারে তাই বাংলাদেশের ব্যাংক সব ব্যাংকের ৬.৫% করে হাতে রাখতো। এইটারে বলে সিআরআর রেইট। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন গভর্নর থাকা স্বত্ত্বেও ব্যাংকের এই রেইট কমানোর জন্য ব্যাংকাররা অর্থমন্ত্রী ও সালমানের সহায়তায় চাপ দিয়ে এই রেইট ১% কমাইলো। মানে ব্যাংকের এখন গ্রাহকের ৫.৫% টাকা বাংলাদেশের ব্যাংকের কাছে রেখে বাকি টাকা (মোট ১২হাজার কোটী) তুলে নিয়ে তারল্য সংকট মেটাবে। এখন কথা হইলো, এই ১২হাজার কোটি কোন পাত্রে গেল। সুপাত্রে নাকি কুপাত্রে?
৪. কারা টাকা পেলঃ ১২ হাজার কোটি টাকা পেল যারা এই ঋনদূর্নীতি বছরের পর বছর চলতে দিয়েছেন, সম্মতি দিয়েছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই করেছেন। এই সমস্যার যারা স্রষ্টা, তাদের কেউ গ্রেফতার হন নাই, তিরস্কৃত হন নাই। বরং তাদের হাতেই আরো ১২ হাজার কোটী টাকা তুলে দিলো সরকার।
৫. এরসাথে আরো ভয়াবহ খবর, সরকার আগে বেসরকারি ব্যাংকে ২৫% টাকা রাখতো, এখন ৫০% রাখবে। মানে সরকারি ব্যাংকে আধা, বেসরকারি ব্যাংকে আধা। মানে বেসরকারি ব্যাংকে সরকারের নিজের টাকা ডাবল দিয়ে ক্যাশ ফ্লো বাড়াচ্ছে।
পুরা ব্যাপারটা যা হচ্ছে, সেইটা এক কথায় হরিলুট। সরকার শুরুতে যাকে তাকে রাজনৈতিক কারনে ব্যাংক খুলতে দিছে। মহামতি হাসিনার ক্যাবিনেটের মন্ত্রী নিজে ফার্মারস ব্যাংক খুলে ২ বছরের মধ্যে ঋণ তুলে ব্যাংকরে পথে বসায়ে দিছে। এখন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এদেরকে আরো বড় অংকের টাকা (যা পাব্লিকের) দিয়ে বলতেছে, দেখি পারে কিনা। না, পারবে না। পারার কথা না। কারন এদের নিয়তই খারাপ। পলিটীকাল কারন ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে জায়গা পাইছে। আপনি কি আশা করেন? এইটা ইলেকশন ইয়ার। প্রতি ইলেকশন ইয়ারে কি হয়? টাকা বিদেশে যায়। যেটাকা একবার বিদেশে যায়, তা ফেরত আসে না।
আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম ইকনমিক ডিজাস্টারের মুখোমুখী। ফেইস ইট। ডোন্ট ফেইক ইট।