বগুড়া শহরে গত দুই রাত ধরে গ্রেফতার অভিযানের নামে পুলিশ ও মতাসীন দলের লোকজন মুখ বেঁধে বাড়ি বাড়ি তাণ্ডব চালাচ্ছে। বগুড়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামবাড়িয়া ও ঢাকন্তা গ্রামের ২০ বাড়িতে এ তাণ্ডব চালানো হয়েছে।
গত শনিবার রাত ১টার দিকে বিপুল পুলিশ নিশ্চিন্তপুর ও ঢাকন্তা গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় পোশাকধারী পুলিশের সাথে বহুসংখ্যক মুখোশ পরা লোক তাদের সাথে থাকে। তারা দুই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষকে আটক করে। আটককৃতরা হলেনÑ ঢাকন্তা গ্রামের আশরাফুল, মোজাফ্ফর (সাবেক মেম্বার), আবদুল খালেক, আবদুল জব্বার, শহিদুল ইসলাম, আ: মান্নান, আবদুল কাফি, আবদুল মালেক, মাহফুজ ও রায়হান এবং নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রজিব, আ: রহিম, সাইফুল, এমদাদ, রিগ্যান ও আরিফ। আটককৃতরা কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী নয় বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন। পুলিশ ও মুখোশ বাঁধা আওয়ামী ক্যাডারেরা ঢাকন্তা ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কমপে ১০টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা বাড়ির গেট, দরজা, জানালা এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। রান্নাঘর ও চুলাও রা পায়নি তাদের হাত থেকে। এ সময় তারা বলেছে, চুলা ভেঙে ভাতে মারব এবং টিউবওয়েল ভেঙে পানিতে মারব। পুলিশ পুরুষ সদস্যদের না পেয়ে মহিলা ও শিশুদের গালমন্দ করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ সময় গ্রামে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযান চলাকালে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের দু’টি বাড়ি থেকে ২০ হাজার টাকা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় দলীয় ক্যাডারেরা।
এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার শ্যামবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাথে থাকা মতাসীন দলের কর্মীরা ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপির একটি দল গতকাল শ্যামবাড়িয়া গ্রাম পরিদর্শনে যায়। তারা পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হাতে তিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পরিদর্শন এবং তিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেন।
ঢাকন্তা গ্রামের তিগ্রস্ত নাহিদা আক্তার বলেন, সন্ধ্যা নামলেই সেখানে আতঙ্ক শুরু হয়। তারা ভীতিকর অবস্থায় রাত কাটাতে থাকেনÑ কখন সকাল হবে। তাদের রাত যেন শেষ হতে চায় না।
নিশিন্তপুর গ্রামের রাজিবের স্ত্রী রয়েদা বলেন, রোববার রাতে তার বাড়ির লোহার গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ২০ হাজার টাকা ও অন্যান্য সম্পদ নিয়ে তার স্বামীকে আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ। এ সময় পোশাকধারী পুলিশের সাথে মুখবাঁধা বেশ কয়েকজন লোক ছিল। তারাও পুলিশের মতো অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও ভাঙচুর করে। এসব কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে শাজাহানপুর থানার ওসি বলেন, ঢাকন্তা গ্রামে আমার থানার পুলিশ যায়নি। কারা সেখানে গেছে জানা নেই।
Source: Naya Diganta