Minar rashid
একজন মানুষের শরীরের মত একটি জাতির শরীরও এইডসে আক্রান্ত হতে পারে। বিভিন্ন আলামত দেখে মনে হচ্ছে আমরা তেমন ধরণের কোন এইডসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছি । আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক শক্তি বা ইম্নিউন সিষ্টেমটি অনেকটা নষ্ট হয়ে পড়েছে ।
সবাই জানেন , কেউ এইডসে আক্রান্ত হলে তার শরীরের রোগ প্রতিরোধক শক্তিটি নষ্ট হয়ে পড়ে । এমতাবস্থায় সামান্য সর্দি জ্বরেও সেই মানুষটি মারা যেতে পারে । জাতি হিসাবে আমাদের অবস্থাও অনেকটা তেমনি ।
জাতির শরীরে এইচ আইভির সেই ভাইরাসটি ঢুকেছে নি:সন্দেহে ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী তারিখে পিলখানা দিয়ে ।
এই দিনটিকে ঘিরে তাই অনেক প্রশ্ন ছড়িয়ে আছে । সেসব প্রশ্নের কোন উত্তর মিলছে না । সামরিক বা আধা সামরিক বাহিনীতে কোন ধরনের বিদ্রোহ দেখা দিলে প্রথম একশনটি হলো যত দ্রুত সম্ভব পাল্টা আক্রমণ করা । আপনি যে কোন সামরিক শাস্ত্রের বই খুলে দেখুন । বিদ্রোহ বা মিউটিনি মোকাবেলায় প্রথমেই এই নির্দেশটি দেয়া আছে ।
এখানে বিকল্প চিন্তার কোন অবকাশ নাই । এই দায়িত্বটি যার উপর অর্পিত ছিল , সেই মঈন ইউ আহমদ এখন বলছেন উল্টো কথা । তাকে নাকি এই কাজটি করতে দেয়া হয় নি । এই কথা বলেই তিনি পার পাবেন না ।
পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে প্রধান দুটি দল পরস্পরকে দোষারূপ করে । কাজেই গড় করে কিংবা নিরপেক্ষতার সূত্রানুসারে দুটি দলের ঘাড়ে ফিফটি ফিফটি দোষ চাপালেও মঈনের ঘাড়ে চাপবে ১০০ ভাগ দোষ । যে দলই এটা করুক না কেন, এই বিশ্বাস ঘাতকের মাধ্যমেই এটা করতে হয়েছে । বিশ্বাস ঘাতকতার ঐতিহাসিক স্কেলটিতে তিনি মির জাফরকেও পেছনে ফেলে দিয়েছেন । জাতির পাছায় এইচ আইভি ভাইরাসের ইনজেকশনটি তিনিই পুশ করেছেন ।
প্রধানমন্ত্রী আগের বার শুনিয়েছিলেন যে এক এগারোর প্রবক্তারা তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করতে চেয়েছিলেন । এবার আরো হৃদয়বিদারক নতুন এক ট্রাজিক বর্ণনা জাতিকে শুনিয়েছেন । অসুস্থ স্বামীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে নাকি এক এগারোর কুশীলবরা তাঁকে গ্রেফতার করেছিল । তাঁর অসুস্থ স্বামীকে যারা ধাক্কা মেরেছিলেন তাদের আসল গুরু মঈন ইউ আহমেদ পরবর্তিতে তাঁরই অধীনে অনেকদিন নকরী করেছিলেন । অনেক সুযোগ হাতে থাকলেও তখন কেন তাকে কিছুই করা হল না ?
নিজের স্বামীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া এক এগারোর অন্য এক ত্রাশ ছিলেন জেনারেল মাসুদ। তাকে দীর্ঘ সময় ধরে বার বার (অষ্ট্রেলিয়ার মত জায়গায় ) রাষ্ট্রদূতের চাকুরীটি কেন নবায়ন করা হলো ?
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন , যুদ্ধাপরাধীদের পর এক এগারোর উস্কানিদাতা সম্পাদকদেরও একে একে বিচার করা হবে । বেশ ভালো কথা । সম্পাদক প্রজাতির এই জ্ঞানপাপীরা দেশের মানুষকে এতটুকু ত্যাক্ত বিরক্ত করেছে যে এদের উপর যে কোন শাস্তি আপতিত হলে দেশের জনগণ এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করবে । সবাই বলবে , উচিত সাজা পেয়েছে ।
কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন দাঁড়ায় যে এই সব সম্পাদকগণ যাদের কথায় বা নির্দেশে এই সব জঘন্য কাজ করেছেন , তাদের বিচারের কোন উদ্যোগ কেন নেয়া হচ্ছে না ?
মনে হচ্ছে , সরকার সব কিছুতে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে , খেই হারিয়ে ফেলছে । সরকারের পলিসি হয়েছে, Shoot the messenger . যে খারাপ সংবাদ দিবে বা বহন করবে – তাদেরকেই আগে হত্যা করা হবে ।