
হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ে শুরুর পর শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে সুপার ফোরে ওঠার পথটা কঠিন করে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। সমীকরণের কঠিন লড়াইয়ে আগে বাংলাদেশকে এখন লড়তে হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। লঙ্কানদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে জাকের আলী অনিক বলেছিলেন, আফগানদের বিপক্ষে জয়ের জন্যই নামবে বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচে লিটন দাস-জাকেররা কেমন করেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। আজ রাত সাড়ে ৮টায় আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সারা বছর ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলে বেড়ায় আফগান ক্রিকেটাররা। সেই সুবাদে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একরকম পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান। সেই প্রভাব স্পষ্ট দুই দলের পরিসংখ্যানেও। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের ১২ লড়াইয়ে বাংলাদেশের ৫ জয়ের বিপরীতে আফগানরা জয়ের হাসি হেসেছে ৭ ম্যাচে। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট বাংলাদেশের জন্য আফগানিস্তান হয়ে উঠবে কঠিন প্রতিপক্ষ। পাশাপাশি বাংলাদেশ যেখানে গ্রুপপর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে, সেখানে রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীদের এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচের পর পাঁচ দিনের বিরতির পর মাঠে নামবে তারা।
হংকংয়ের বিপক্ষে বড় জয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামবে আফগানিস্তান। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও জয় পেয়েছে দলটি। শেষ পাঁচ দেখায় দুই দলের লড়াইয়ে এগিয়ে আছে আফগানরা। বাংলাদেশের দুই জয়ের বিপরীতে তাদের জয় তিন ম্যাচে। সাম্প্রতিক সমীকরণে আফগানদের এগিয়ে থাকাই প্রমাণ করে মাঠের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরানোর সামর্থ্য রাখে দলটি। তবে এশিয়া কাপের মতো বড় মঞ্চে শক্তিমত্তায় হয়তো একটু এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশকে খেলতে হবে রানরেটের বিষয়টি মাথায় রেখে। বর্তমানে ‘বি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে অবস্থান করা বাংলাদেশের রানরেট ঋণাত্মক। আফগানদের হারিয়ে রানরেট শুধু ধনাত্মক করলেই হবে না। নিতে হবে বেশ উপরে। কারণ, আফগানরা নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেলে তখন চলে আসবে রানরেটের হিসাব। সেই চিন্তা মাথায় রেখে আফগানদের বিপক্ষে আগ্রাসী খেলার কোনো বিকল্প নেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের সামনে।
এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে রান ১৪০-এর ওপারে নিতে না পারা বাংলাদেশ দলের জন্য রানরেটের এই চ্যালেঞ্জ উতরে যাওয়া কঠিন। তবে ব্যাটারদের স্বর্গ আবুধাবিতে সেই কাজটাই করতে হবে বাংলাদেশকে। শুধু ব্যাটারদের জন্যই চ্যালেঞ্জ নয়, বোলারদের জন্যও থাকবে কঠিন পরীক্ষা। কারণ, রানরেটে এগিয়ে থাকতে প্রতিপক্ষকে অল্পরানে আটকে রাখার দায়িত্ব যে বোলারদের। বাড়তি এই দায়িত্বের জন্য আজকের ম্যাচে একাদশে শরিফুল ইসলামের জায়গায় সুযোগ পেতে পারেন তাসকিন আহমেদ। আর ব্যাটিং ইউনিটে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তে বদল আসলে হয়তো সুযোগ মিলতে পারে সাইফ হাসানের। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিং করায় তাকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দল এই বাঁচা-মরার লড়াই উতরে কীভাবে সুপার ফোরে ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।