- ২৪ ডেস্ক
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক অর্থবছরে প্রবাসী আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ডের পর এবার ডলারের বাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। প্রবাসী আয় ও রপ্তানি—এই দুই খাতের শক্তিশালী প্রবাহের ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১১ মাসের মাথায় এই অর্থনৈতিক স্বস্তি দৃশ্যমান হলো।

মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ডলারের বিনিময় হার প্রায় দুই টাকা কমে এসেছে। গত সপ্তাহের শুরুতে যেখানে প্রতি ডলারের জন্য ১২২ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছিল, সেখানে বর্তমানে ব্যাংকগুলো ১২০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ২০ পয়সায় ডলার বিনিময় করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, ডলারের সরবরাহ গত দুই বছরের মধ্যে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, যা টাকার মান বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রাখছে।
অর্থনৈতিক এই পরিবর্তনের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন, যা এর আগের অর্থবছরের (২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার) চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। এই ইতিবাচক ধারা নতুন অর্থবছরেও অব্যাহত আছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ১২ দিনেই প্রায় ১ হাজার ৭১ মিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যেখানে দৈনিক গড় প্রবাহ ছিল প্রায় ৮৯ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি খাতও অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন নীতি ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করেছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পরও ডলারের এই দরপতন একটি ইতিবাচক লক্ষণ। প্রিমিয়ার ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর মতে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে এই ধারাবাহিক রেমিট্যান্স বৃদ্ধি দেশের জন্য একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক স্বস্তি।