চীন-পাকিস্তান আর্থিক করিডর এবার আফগানিস্তানেও, উদ্বিগ্ন ভারত

logo

মানবজমিন ডিজিটাল

(১৮ সেকেন্ড আগে) ২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১:৩৮ অপরাহ্ন

তিন দেশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও গভীর করার লক্ষ্যে  চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) আফগানিস্তান পর্যন্ত সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও চীন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) দিয়ে নির্মাণকাজ জড়িত থাকায় ভারত এই পদক্ষেপের ধারাবাহিকভাবে বিরোধিতা করে আসছে। পাকিস্তানে সন্ত্রাসী অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে  ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পর  এটি তিন দেশের মধ্যে প্রথম ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হতে চলেছে । ভারতের সাথে সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া তিনটি দেশ (চীন, পাকিস্তান, আফগানিস্তান)  আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের  প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তিন দিনের চীন সফরে থাকা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন -‘পাকিস্তান, চীন এবং আফগানিস্তান আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করবে।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের (এফও) বিবৃতি উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে -‘তারা কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, যোগাযোগ জোরদার করা এবং বাণিজ্য, অবকাঠামো ও  উন্নয়নকে  সমৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেছে। তারা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহযোগিতা আরও গভীর করতে এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) আফগানিস্তানে সম্প্রসারণ করতে সম্মত হয়েছে।’

কেন এটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
ভারত ও পাকিস্তান সম্প্রতি প্রায় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছিলো, দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ শুরু করে ।নয়াদিল্লি সর্বদা পাকিস্তানের অর্থায়নে সন্ত্রাসী পরিকাঠামো, বিশেষ করে পাক অধিকৃত কাশ্মীর  নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর  ভারত প্রতিবেশী দেশ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে অভিযান সিঁদুর  শুরু করে।এদিকে, চীন অভিযানের সময় তার “কাছের  বন্ধু”-এর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে এবং তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাছাড়া, পাকিস্তানের প্রতিশোধ হিসেবে চীনা অস্ত্র ব্যবহার অবাক করার মতো কিছু বিষয় ছিল না, কারণ ইসলামাবাদের প্রতিরক্ষা আমদানির ৮২% চীন থেকে আসে।

আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তি কি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়?

ভারত অতীতে সিপিইসি প্রকল্পে তৃতীয় দেশগুলোর  অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য চীন ও পাকিস্তানের তীব্র নিন্দা করেছে।২০২২ সালের ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছিলো -‘আমরা তথাকথিত সিপিইসি প্রকল্পগুলোতে  তৃতীয় দেশগুলোর  প্রস্তাবিত অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার প্রতিবেদন দেখেছি। যে কোনও পক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ সরাসরি ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে  লঙ্ঘন করে। ভারত দৃঢ়ভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে তথাকথিত সিপিইসি-এর প্রকল্পগুলোর  বিরোধিতা করে, যেগুলি ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত এবং পাকিস্তান কর্তৃক অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে।’ এদিকে, আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তি এমন এক সময়ে এসেছে যখন তালেবান সরকার পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে যে ভারত আফগান ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর ফলে ভারত এবং তালেবানের মধ্যে প্রথম রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয়, কারণ কাবুল  ২২শে এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় দ্ব্যর্থহীনভাবে  নিন্দা জানিয়েছিল। যেহেতু চীন এবং পাকিস্তানের সাথে ভারতের ইতিমধ্যেই সীমান্ত সমস্যা রয়েছে, তাই আফগানিস্তানের সাথে তাদের সংহতি বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে।

সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here