প্রবাসীর পিতার দোয়া মাহফিলের খাবার ফেলে দিলো বিএনপি নেতার অনুসারীরা

logo

স্টাফ রিপোর্টার

(১ মিনিট আগে) ২০ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬:২২ অপরাহ্ন

mzamin

facebook sharing button

২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে গ্রিস প্রবাসীর অসুস্থ পিতার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলের রান্না করা খাবার ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা কাজী খাইরুজ্জামান শিপনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার মোড়েলগঞ্জের ব্যাবোইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুরলরী গ্রামের নূর আলী হাওলাদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শিপনের অনুসারীদের ভয়ে দেশে ফিরেও গ্রামের বাড়িতে যেতে পারছেন না ওই প্রবাসী। এমন কি অসুস্থ পিতা-মাতাকেও দেখতে পারেননি তিনি। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি। উপায় না পেয়ে এনসিপির দুই শীর্ষ নেতার দ্বারস্থ হয়েও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না ওই প্রবাসী।

জানা গেছে, শতবর্ষী অসুস্থ পিতা-মাতাকে দেখতে সম্প্রতি  গ্রিস থেকে দেশে ফিরেন প্রবাসী জাহিদ ইসলাম। উঠেন ঢাকার একটি হোটেলে। অসুস্থ পিতা-মাতার রোগমুক্তি কামনায় গত শুক্রবার গ্রামের বাড়িতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন স্থানীয় বিএনপি নেতাদেরও। এ খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রবাসী জাহিদের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বিএনপি নেতা কাজী খাইরুজ্জামান শিপনের চাচাতো ভাই কাজী সাইফুজ্জামান রাসেল। চাঁদা না দিতে অস্বীকার করায় রাসেল তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে জাহিদের বাড়িতে গিয়ে দোয়া মাহফিলের রান্না করা খাবার ফেলে দেন। এসময় রাসেলের সঙ্গে ছিলেন শিপনের অনুসারী লোকমান হোসেন খান, মহিউদ্দিন জিলান, মাসুদ খান (চুন্নু), নজরুল ইসলাম ব্যাপারীসহ ১০-১২ জন।
প্রবাসী জাহিদ বলেন, আমি দুই দশকের বেশি সময় ধরে গ্রিসে থাকি। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। তবে গ্রিসের একটি বাঙালি কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া ‘জাহিদ ইসলাম’ নামে একটি ফাউন্ডেশন রয়েছে আমার। সেই ফাউডেশনের ব্যানারে দেশের বিভিন্ন জেলায় সামাজিক কর্মকাণ্ড ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ দিয়েছি। এছাড়া গ্রিসের বাঙালি কমিউনিটিতে নানা অনুষ্ঠান করেছি। সেইসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে শিপনের অনুসারীরা। ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় গ্রামের বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না তারা। দেশে ফিরেও অসুস্থ পিতা মাতাকে দেখতে গ্রামে যেতে পারছি না। সর্বশেষ আব্বা-আম্মার দোয়া মাহফিলের খাবারও ফেলে দিয়েছে। ঘটনাটি বাগেরহাটের এসপি সাহেবকে জানিয়েও প্রতিকার পাইনি। বাধ্য হয়ে এনসিপি সভাপতি নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকে জানিয়েছি। তারা মোড়েলগঞ্জের এনসিপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বলেছেন বিষয়টি দেখার জন্য। এরপরও কাজ হয়নি।

মোড়েলগঞ্জের বিএনপি নেতা অধ্যাপক কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে বেশ কয়েকজন ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। খাইরুজ্জামান শিপনকে ছাড়া অন্য নেতাদের সঙ্গে কেউ কাজ করলেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। নানাভাবে তাদের হয়রানি করেন শিপনের অনুসারীরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে শিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী খাইরুজ্জামান শিপন বলেন, এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি মোড়েলগঞ্জে এমপি নির্বাচন করেছি। যে আমার পরিচিত সেও আমার অনুসারী, যাকে আমি চিনি না সেও আমার অনুসারী। কারা খাবার ফেলেছে সেটা আমি জানি না। তিনি আরও বলেন, জাহিদ নামে যাকে আমি চিনি তিনি আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকেই হয়তো কেউ কেউ এটা করে থাকতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here