চীনের নেতৃত্বে রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসিইপি) যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ। সম্প্রতি এ জোটে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সম্মতিপত্র পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আরসিইপিতে যোগ দিতে যা বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিগগির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আরসিইপিতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব করবে বাংলাদেশ। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় আরসিইপিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে।
আরসিইপিতে থাকা ১৫টি দেশের যাদের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৩০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। সব মিলিয়ে এটি ২৬ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার। অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, চীন, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ আরসিইপিতে যোগদানের পক্ষে অবস্থান নেয়। অনেক বিষয় চিন্তা করেই এতে যোগদানের পক্ষে নীতিগত সিদ্ধান্ত এসেছে। কেননা একুশ শতকে বিশ্ব অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হবে আসিয়ানসহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো, যারা আরসিইপিতে অন্তর্ভুক্ত।
তারা বলেন, আরসিইপি চীনের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্যিক ব্লক বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াও এর সদস্য। এছাড়া বাংলাদেশ এখন যেসব দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করার বিষয়ে আলোচনা করছে, তার মধ্যে ছয়টি দেশ– জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন বর্তমানে এর সদস্য। এতে যোগ দিলে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার বাড়বে বলে এক সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আরসিইপিতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক ভ্যালু চেইনে বাংলাদেশের সংযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন, ভিয়েতনাম চীন থেকে কাঁচামাল আমদানি করে। দেশটিতে চীনের বিনিয়োগও প্রচুর। আবার, চীনসহ জোটভুক্ত দেশগুলোতে ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। ফলে ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই আরসিইপির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ভ্যালু চেইনের সঙ্গে সংযুক্ত। এ জোটে যোগদান করলে বাংলাদেশ প্রথম ১০ বছরের মধ্যে ৯০ শতাংশ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ট্যারিফ বা শুল্ক কমাতে হবে। বাকি ১০ শতাংশ ট্যারিফ কমানোর ক্ষেত্রে বাড়তি ১৫ বছর পাওয়া যাবে।
samakal