ভারতের বিপক্ষে সিরিজের অনেকটা জুড়ে আলোচনায় থাকলেন দু’জন সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দু’জনই বিদায়ের গল্প নিয়ে সিরিজ খেলতে এসেছিলেন। সাকিব টেস্ট সিরিজ শেষ করে পরিবারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলে বিদায় নেবেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ আজ টি২০ থেকে বিদায় নিচ্ছেন।
জাতীয় দলের এই সিনিয়র ক্রিকেটার বিদেশকেই বেছে নিয়েছেন বিদায়ের মঞ্চ হিসেবে। টেস্ট ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলেছেন জিম্বাবুয়েতে। সেঞ্চুরি করে, সতীর্থদের কাছ থেকে গার্ড অব অনার পেয়ে, ম্যাচ জিতে টেস্ট ক্যাপ খুলে রেখেছেন ২০২১ সালে। টি২০ ক্রিকেট থেকে সে রকম গৌরবের বিদায় না হলেও কিছুটা আনুষ্ঠানিকতা থাকবে বলে জানা গেছে। ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে পারলে আনুষ্ঠানিকতাটুকু আরও বর্ণিল হবে। সেটা হওয়া বেশ কঠিন। কারণ, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ দল একেবারেই ছন্দে নেই।
টেস্টের মতো ভারতে টি২০তেও ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। টানা দুই পরাজয়ে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে। শেষ চেষ্টা হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। নাজমুল হোসেন শান্তরা সমন্বিত পারফরম্যান্স দিয়ে ‘আউট অব দ্য বক্স’ ক্রিকেট খেলতে পারলে ভালো কিছু করার সুযোগ থাকবে। মাহমুদউল্লাহও হাসিমুখে বিদায় নিতে পারবেন। খেলার বাইরের আনুষ্ঠানিকতা বলতে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগে বা পরে গার্ড অব অনার এবং ক্রেস্ট দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা থেকে ফোনে বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ভারতেই মাহমুদউল্লাহর জন্য বিদায়ী ক্রেস্ট বানানো হয়েছে। তবে এসবের চেয়েও বড় সম্মান দেওয়া হবে ম্যাচটি জিততে পারলে। মাহমুদউল্লাহ কি নিজের শেষ ম্যাচের ব্যাটিংয়ে ছাপ রেখে যেতে পারবেন? নাকি দিল্লির মতো ৩৯ বলে ৪১ রান করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন! এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মাহমুদউল্লাহকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। অবশ্য জয় দিয়ে শেষ করার ইচ্ছার কথা দিল্লির সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ টি২০ দলে পঞ্চপাণ্ডব অধ্যায় শেষ হবে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের পর মাহমুদউল্লাহ বিদায় নিচ্ছেন। আজকের পর থেকে ২০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের পতাকা পুরোপুরি নতুন প্রজন্মের হাতে। মাশরাফি, তামিম, মুশফিকের শূন্যতা পূরণ করা গেলেও মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের জায়গায় নতুন কাউকে পাওয়া যায়নি। মেহেদী হাসান মিরাজকে সাকিবের বিকল্প মনে করা হলেও ভারতের বিপক্ষে ভালো করতে পারেননি। ব্যাটিং ও বোলিং কোথাও অলরাউন্ডারের ছাপ রাখতে পারেননি। সে যাই হোক, নতুন প্রজন্মের মহড়া শুরু হয়ে গেছে।
বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, লিটন বা মিরাজদের যে কোনো এক-দু’জনকে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট খেলতে হবে। তাদের দেখে বাকিরা ভালো খেলার প্রেরণা পাবে। সেই বিস্ফোরক শুরু হায়দরাবাদে হলে মন্দ হয় না। এই শহরেই তো মোহাম্মদ রফিকরা জিতেছিলেন আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ। কেনিয়াকে হারিয়েছিলেন ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে। টি২০ ক্রিকেটে নতুন পথচলা নতুনভাবে শুরু হলে দারুণ হয়।
samakal