সাকিবের আচরণ এবং নীতি-নৈতিকতা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন থাকলেও ক্রিকেটের প্রতি তাঁর নিবেদন বা জাতীয় দলে খেলার সামর্থ্য নিয়ে কোনো দিন কথা ওঠেনি। সাঁইত্রিশের সাকিবকে নিয়ে গতকাল সে প্রশ্নও তুলে দিলেন এক সাংবাদিক। চোখের সমস্যা এবং ব্যাটে-বলে ভালো করতে না পারা বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারকে টেস্ট দলে রাখার যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছিল, এ রকম কোনো প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। মূল উত্তরে যাওয়ার আগে ভদ্র ভাষার স্লেজিংয়ের মতো অধিনায়ক বলেন, ‘সাহসী প্রশ্ন করেছেন ভাই, মাশাআল্লাহ।’ জাতীয় নির্বাচক প্যানেল, কোচিং স্টাফ, দেশের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা যেখানে সাকিবকে এখনও ‘অটো চয়েস’ ভাবেন, সেখানে তাঁর জাতীয় দলে থাকা নিয়ে কথা ওঠা বিচলিত হওয়ার মতোই।
চেন্নাই টেস্ট শুরুর আগেও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, সাকিব থাকলে একাদশে ভারসাম্য রাখা সহজ হয়। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সাকিবকে দলে রাখা হয় মেধার ভিত্তিতে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট হারের পর সাকিবকে নিয়ে দলের অবস্থান হয়তো বদলাবেও না। তবে প্রশ্ন ওঠার অর্থ হলো, নীতিনির্ধারকদের ভাবনার খোরাক দেওয়া। পরোক্ষে সাকিবকেও বার্তা দেওয়া ভালো খেলেই জাতীয় দলে টিকে থাকতে হবে তাঁকে। নাজমুল হোসেন শান্তর উত্তর বিশ্লেষণ করা হলে সেটাই দাঁড়ায়।
তিনি বলেছেন, ‘সাকিব ভাইয়ের ক্ষেত্রে শুধু বলছি না, আমি দেখি কে কতটুকু কষ্ট করছে। ফেরার জন্য যা যা করার দরকার, সেই কাজগুলো করছে কিনা। দলের প্রতি অভিপ্রায় কী রকম। এই জিনিসগুলো আমি খেয়াল রাখি বা আমি চেষ্টা করি, ওই খেলোয়াড় দলকে ১০০ ভাগ দেওয়ার জন্য কতটা প্রস্তুত। ভাবতে পারেন, সাকিব ভাই বলে আমি এটা বলছি, জিনিসটা এ রকম না। নাহিদ রানা থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই পর্যন্ত আমি একই ভাবে দেখার চেষ্টা করি।’
সাকিব ছাপিয়ে সিরিজের ব্যাটিং ব্যর্থতা বড় হয়ে ধরা দেয়। দেশি-বিদেশি মিডিয়ায় ব্যাটারদের সমালোচনাও কম হয়নি। ১৪৯ ও ২৩৪ রানে গুটিয়ে গিয়ে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। বোলারদের হতাশ করার জন্য ব্যাটিং ব্যর্থতাই যথেষ্ট। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে শান্ত বলেন, ‘সব মিলিয়ে বলতে গেলে আমাদের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ভালো হয়নি, যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই জায়গায় টপঅর্ডারে একটি জুটি করতে পারলে আরেকটু ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম। দ্বিতীয় ইনিংসে জুটি শুরু করলেও শেষের দিকে উইকেট পড়ে গেছে। এই জায়গাতে আমাদের আরও একটু সতর্ক হওয়া উচিত। বোলিংয়ের দিক থেকে দেখলে প্রথম ইনিংসে ভালো হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ভালো হতে পারত।’
১০৮ বলে ৪৮ রানের জুটি গড়েন সাকিব-শান্ত। তাতে ইনিংস বড় না হলেও কিছু সময় লড়াই করা গেছে। ব্যর্থতার মিছিল থেকে বের হয়ে ৮২ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কানপুর যেতে পারছেন অধিনায়ক। সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টে ভালো করতে যেটা কাজে দেবে বলে মনে করেন তিনি।
samakal