বৃটেন থেকে নির্বাসিত করা হবে ১১ হাজার বাংলাদেশিকে

mzamin
whatsapp sharing buttonআন্তর্জাতিক ছাত্র, ওয়ার্কার বা ভিজিটর ভিসায় এসে অ্যাসাইলাম আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বড় রকমের দুঃসংবাদ দিয়েছে বৃটিশ সরকার। বাংলাদেশি  অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির মাধ্যমে দ্রুত নির্বাসিত করবে ইউকে হোম অফিস। গতকাল বৃহঃস্পতিবার হঠাৎ করে এমন ঘোষণা দিয়েছে  হোম অফিস। চলতি সপ্তাহে ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির ইউকে-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে সবগুলো বৃটিশ গণমাধ্যম ফলাও করে সংবাদ প্রচার করেছে।

হোম অফিস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ১১ হাজার বাংলাদেশির তালিকা করেছে হোম অফিস। যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসায় বৃটেনে প্রবেশ করেছেন, এর মধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী এসেই পড়াশোনা চলমান না রেখে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য অ্যাসাইলাম আবেদন করেছেন। এছাড়া ওয়ার্কার বা ভিজিটররাও অ্যাসাইলাম আবেদন করেছেন, কিন্তু তাদের আবেদন প্রত্যাখান করা হয়েছে।

গত এক বছরে এই সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। তাদেরকে একটি দ্রুত-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে অবৈধ অভিবাসন মন্ত্রণালয়।

হোম অফিস বলছে, অ্যাসাইলাম আবেদনকারীরা শুধুমাত্র স্থায়ীভাবে থাকার উদ্দেশ্যে আশ্রয়ের দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে সরকার বাংলাদেশকে ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারী বৃহত্তম দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বৃটিশ সরকার মনে করে, এসকল অভিবাসীরা  আন্তর্জাতিক ছাত্র, ওয়ার্কার বা ভিজিটর ভিসায় এসে আশ্রয় দাবি করে বৃটেনে ‘পেছনের দরজা’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। তবে এরকম বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় দাবির মাত্র ৫ শতাংশ সফল হয়েছে।

বৃটেনের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

যাতে শুধু ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীই নয়, বিদেশি অপরাধী এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া ব‌্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠানো সহজ হবে। 

রিটার্ন চুক্তিটির ফলে বাধ্যতামূলক কোনো সাক্ষাৎকার ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠনো হবে কারণ এসকল অবিভাসীদের অপসারণের জন্য সহায়ক প্রমাণ রয়েছে।

এই সপ্তাহে লন্ডনে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়। উভয় দেশই  তাদের অংশীদারিত্ব জোরদার করতে এবং অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অবৈধ-অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেছেন, অবৈধভাবে বৃটেনে আসা বা থাকা বন্ধের জন্য অপসারণের কাজ ত্বরান্বিত করা আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশ আমাদের মূল্যবান অংশীদার। আমরা তাদের সঙ্গে এই বিষয় ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি।’

ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয় – সাধারণত মাত্র কয়েক মাস। কিন্তু আশ্রয়প্রার্থীদের দাবি  অনির্দিষ্টকালের জন্য এখানে এসে থাকা। সেজন্য হোম অফিস মানবাধিকার আইনসহ তাদের নির্বাসনে বিশাল বাধার সম্মুখীন হয়।

হোম অফিসে সূত্রমতে, আশ্রয় দাবিদারদের মধ্যে পাকিস্তান বৃহত্তম দেশ, প্রায় ১৭,৪০০টি মামলা রয়েছে, এরপরে বাংলাদেশ ১১,০০০, ভারত ৭,৪০০, নাইজেরিয়া ৬,৬০০ এবং আফগানিস্তান ৬,০০০। এদের সবাইকে চুক্তি অনুযায়ী ফাস্ট ট্র্যাকে স্ব স্ব দেশে পাঠানো হবে।

manabzamin