মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে ওই তরুণ মারা যান। এর আগে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে আজ ভোর ৫টা পর্যন্ত চরকেওয়ার ইউনিয়নের ছোট মোল্লাকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত ওই তরুণের নাম পারভেজ খান (২০)। তিনি ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামের ফরহাদ খানের ছেলে। এ ঘটনায় মোহাম্মদ রাব্বি খাঁ (১৯) নামের আরেক তরুণ গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন।
বিবদমান পক্ষ দুটির এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী মামুন হাওলাদার, অন্য পক্ষের নেতৃত্বে আহমদ হাওলাদার। আহমদ হাওলাদারের পক্ষের নিহত পারভেজ ও আহত রাব্বি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খানকান্দি ও ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামে মামুন হাওলাদারের সঙ্গে আহমদ হাওলাদারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধকে কেন্দ্র করে এর আগেও কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়ায় পক্ষ দুটি। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রাত থেকে আবারও বিবাদে জড়ায় দুই পক্ষের সমর্থকেরা। সে সময় এক পক্ষ অন্য পক্ষের বাড়িঘর লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলা চালিয়ে উভয় পক্ষ তাদের প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আজ ভোর ৫টার দিকে মামুন হাওলাদারের ভাই সেলিম হাওলাদার, ফরিদ, আলম, মাসুদ দেওয়ানরা আহমদ হাওলাদার পক্ষের লোকজনের ওপর আবার হামলা শুরু করেন। সে সময় সেলিমদের গুলিতে পারভেজ ও রাব্বি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁদের চিকিৎসার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। ঢাকায় নেওয়ার পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান পারভেজ।
ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রাম দুটির সাধারণ মানুষ। ভাঙচুর হয়েছে ১০ থেকে ১২টি বসতবাড়ি। বর্তমানে গ্রাম দুটিতে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ ব্যাপারে আহমদ হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে মামুন হাওলাদারের ভাই সেলিম হালদার আমাদের পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় আমাদের লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাঁদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে পারভেজ মারা গেছেন।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মামুন হাওলাদার বলেন, ‘গতকাল বিকেল থেকে আমাদের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল আহমদ পক্ষের সন্ত্রাসীরা। পরে রাতে আমার লোকজনের বাড়িঘরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।’
মুন্সিগঞ্জ সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
prothom alo