গতকাল মঙ্গলবার আরএডিপি অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-এনইসি। এনইসি চেয়ারপারসন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা অংশ নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা এবং এনইসির বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব) আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার।
জানা গেছে, এডিপি সংশোধনের ক্ষেত্রে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার এবং উন্নয়নে মূলধারায় জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্তর্ভুক্ত করার নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার শেষ বছরের লক্ষ্যমাত্রাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ নীতি অনুসরণে সংশোধন প্রস্তাব দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে গত ১০ ডিসেম্বর সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিগত বছরগুলোর সংশোধিত এডিপি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাস্তবতা আমলে না নিয়ে অনেক সময় বড় অঙ্কের এডিপি অনুমোদন করা হয়। বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে অর্থবছরের সাত-আট মাসের মাথায় বড় অঙ্কের সংশোধনীতে যেতে হয়। এ ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও এডিপি ছোট করা হলো। গত দুই অর্থবছরের মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছর মূল এডিপি থেকে সংশোধিত এডিপি কমানো হয় ১৯ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপি থেকে কমানো হয় ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সক্ষমতার অভাবে যখন বাস্তবায়ন কম হয় তখন বরাদ্দ কমাতে হয়। এ ছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে হয়। সে কারণেও কোনো কোনো প্রকল্পের বরাদ্দ হ্রাস পেয়ে থাকে। তিনি জানান, কীভাবে সক্ষমতা বাড়ানো যায়– এ ব্যাপারে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এ সংক্রান্ত একটি সুপারিশমালা প্রস্তাব করবে। তার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন কৌশল উন্নত করা হবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমেও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও দক্ষতা উন্নয়নের চেষ্টা করছে সরকার।
চলতি অর্থবছরের গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ১৪ বছরের একই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ছিল। কারও কারও মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নে তার প্রতিফলন হয়তো দেখা গেছে। এখন সব শঙ্কা কেটে গেছে। শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। অর্থনীতি মজবুত হয়েছে। রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স বাড়ছে। ফলে এখন আর প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হবে না। মন্ত্রী বলেন, আগামীতে এডিপি প্রণয়নেও কিছু পরিবর্তন দেখা যাবে।
সমকাল