দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে হুমকি-ধমকি না দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সরকারের অগ্রাধিকার দ্রব্যমূল্য কমানো উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা চ্যালেঞ্জ। এ সমস্যাগুলো জনগণের নিত্যদিনের। কাজেই প্রথম চ্যালেঞ্জ এখন এটাই।
আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
দ্রব্যমূল্য কমানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা কথা রাখবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কথা রাখবেন, মিষ্টি কথায় তো চিড়া ভিজে না। কথা যেভাবে বলতে হয়, সেভাবেই বলতে হবে আমাদের। যে অ্যাকশনের দরকার, সে অ্যাকশন নিতে হবে।’
একই সঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু হুমকি–ধমকি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে অ্যাকশন নিতে হবে, কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কারণ, আমাদের দেশের যে বাস্তবতা, সবকিছু ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করা যায় না। কিছু কিছু কৌশলেও যেতে হবে এবং সেটা উপলব্ধি করতে হবে। কথায় কথায় কাউকে ধমক দিলে সমস্যা সমাধান হবে না। আমাদের পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে দলীয় প্রতীক সরিয়ে দেওয়া, এটা কি দলীয় কোন্দল নিরসনের জন্য নাকি যারা বিএনপির নির্বাচনে আসতে পারেনি, তাদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি যদি বলি কোন্দল নিরসনের জন্য আমাদের কৌশল নিতে হয়েছে। ইলেকশনে আমরা কৌশল নিয়েছি, স্বতন্ত্রদের ইলেকশন করতে দিয়েছি। যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁরা নির্বাচন করেছেন। সে কৌশলের তো বিজয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নতুন চমকের বিজয় তো হয়েছে।’
লোকজন ভোটকেন্দ্রে আসবেন না—এমন প্রচারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কত ভোটার অংশ নিয়েছে, এটা তো এখন পরিষ্কার। এখানে রাখঢাক করার তো কিছু নেই। এটা আমাদের একটা কৌশল। আমরা এই কৌশলটা নিয়েছি আমাদের দলের ভালোর জন্য এবং কিছুটা জনদাবির মুখে। আমাদের নেতা–কর্মীদের পক্ষ থেকেও এই দাবিটা এসেছে উপজেলা নির্বাচনের প্রতীক না দেওয়ার জন্য। আমাদের ওয়ার্কিং কমিটিরও অনেকে একমত পোষণ করেছেন। সে মোতাবেক আমাদের নেত্রী দাবি পূরণ করেছেন।’
গত নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা সম্পর্কিত তাঁর বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি এত কিছু বুঝি না। আমি বুঝি আমাদের বেশির ভাগ সীমান্ত ভারতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদিকে মিয়ানমারের কিছু অংশ, বাকিটা ভারত দ্বারা বেষ্টিত। ভারত আমাদের চেয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ বহু বিষয়ে এগিয়ে। একটি শক্তিধর দেশ। ভারতের এখন বিশ্বে যে পজিশন, সেটা প্রায় পরাশক্তির পর্যায়ে। ভারতের সঙ্গে ঝগড়া করে আমাদের কোনো লাভ নেই। তাদেরও এখানে ইন্টারেস্ট আছে, আমাদেরও আছে। ক্রস বর্ডার টেররিজম নিয়ে উদ্বেগ তাদেরও আছে, আমাদেরও আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
সূত্র : প্রথম আলো