মিয়ানমারের নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দাবি করেছে যে তারা রাখাইনের একটি বন্দর নগরীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বাহিনীটি বলছে, জান্তা বাহিনীর সাথে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে লড়াই করে তারা এর নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে।
আরাকান আর্মির যোদ্ধারা গত বছরের নভেম্বরে পাকতোয়া শহর আংশিক দখলে নিয়েছিল। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে যে যুদ্ধবিরতি হয়, এ ঘটনায় তা ভেঙে যায়। মিয়ানমার জান্তা বাহিনী তখন থেকে প্রায় প্রতিদিনই শহরটিতে বোমাবর্ষণ শুরু করে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
নিউ গুগল আর্থের ছবিতে দেখা গেছে, পাকতোয়া শহরের শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি ব্লক প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর পোতাশ্রয়ের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি ভবনের ক্ষতি হয়েছে।
তবে এএফপি আরাকান আর্মির এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
আরকান আর্মির একটি ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এই সপ্তাহের শুরুতে এএফপিকে বলেছিল, তাদের যোদ্ধারা শহরে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালাচ্ছে। এরপর মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) তারা জানায়, শহরে তীব্র সংঘর্ষ চলছে।
পাকতোয়াতে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়ে মিয়ানমার সেনা কোনো মন্তব্য করেনি।
যুদ্ধের কারণে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ এই এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জাতিসঙ্ঘ নভেম্বরে জানিয়েছিল।
রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী পাকতোয়া বন্দর শহরটিতে রয়েছে ভারতেরও কিছু বিনিয়োগ। মিয়ানমারের সাথে অর্থনৈতিক সংযোগ বাড়ানোর অংশ হিসেবেই ভারত এ বন্দরে বিনিয়োগ করেছে।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া আরাকান আর্মি রাজ্যের জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর আরো অধিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য বছরের পর বছর ধরে সম্মুখ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে কয়েক ডজন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি তাদেরই মতো একটি।
কিছু গোষ্ঠী অধিক স্বায়ত্তশাসন চায় আর কিছু চায় তাদের অঞ্চলে অবাধে খনিজ দ্রব্য রত্ন পাথর, মাদক ও কাঠের ব্যবসার সুযোগ।
রাখাইনে এ সংঘর্ষের ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জান্তা সেনা একে অপরের বিরুদ্ধে চীনের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য অভিযোগ আনছে।
সূত্র : এএফপি/ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার