কলকারখানাগুলোতে শ্রমিক সংগঠন করার বিধান আরও সহজ করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের দুই প্রতিনিধি এই বার্তা দিয়েছেন। বৈঠকে শ্রমিক অধিকার নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিক সংগঠন করার ক্ষেত্রে ১০ ভাগ শ্রমিকের সম্মতির বিধান চায় যুক্তরাষ্ট্র। দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি ম্যাথিউ বে ও লেবার অ্যাটাচে লীনা খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম শিল্পে ‘থ্রেস হোল্ড’ (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার) কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র পার্টনার হিসেবে কাজ করতে চায় জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন, এটা তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। এটা বাংলাদেশ সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়টি নিজের হাতে রেখেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের সম্মতি বা স্বাক্ষর নেয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, শ্রমিক অধিকার নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাসে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা গত বছর থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং আরও কোনো অগ্রগতি সম্ভব কিনা, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিল, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
কারণটা আগেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। সেই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছে। আনিসুল হক বলেন, আমি এটাও বলেছি, আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসবো। আইএলওর গভর্নিং বডির মিটিং হচ্ছে মার্চ মাসে, আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য এবং দু’একটা বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন, সেই মিটিং এরপরে তাদের আমরা জানাবো। আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি বা এমন কিছু তোলেনি।
থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য কী, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য আছে, এটা সব সময়ই ছিল। থ্রেস হোল্ডের ব্যাপারে আমি বলেছি, এটা আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে একটা কন্ডিশন আছে, এটা শুধু এপ্লিক্যাবল হবে যে ফ্যাক্টরিতে তিন হাজার বা এর বেশি শ্রমিক আছে সেখানে। সেটার ব্যাপারে একটা আলোচনা হতে পারে। তারা এটাও বলেছেন, তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে এমন কারখানা অনেক কম। এই ব্যাপারে যখন প্রশ্ন এসেছে তখন আমি বলেছি, এটা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
তারা কী শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার ১০ শতাংশ চাইছে কিনা এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, এটা জেনারেল ইয়ে যে ১০ শতাংশ, আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের ইমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কার্স ফেডারেশন যেগুলো আছে তারা সব সময় বলে আসছে আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশ শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট অনুযায়ী এটা কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা আস্তে আস্তে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেবো।
মানব জমিন