বাংলাদেশ ক্রনিক্যাল ডেস্ক: ইসরায়েল এবং তার একনিষ্ঠ মদতদাতা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের সেনাঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি হামলা হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস-সমর্থিত সংগঠনগুলো এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলতে থাকায় নিজেদেরকে এই যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন নতুন ফ্রন্ট যুদ্ধে সম্পৃক্ত হওয়ায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পরিধি ও ভয়াবহতা আরও বিস্তৃত হতে যাচ্ছে। বহির্বিশ^ ছাড়াও নিজ দেশের জনগণের ক্ষোভের আগুনে পুড়ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
রয়টার্স জানিয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে বড় ধরনের হামলা হয়েছে। ড্রোন, রকেট ও ক্রুজ মিসাইলের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার এসব হামলা চালানো হয়। হামলাগুলোর দায় স্বীকার করেছে ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ ফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার সিরিয়ার আল-তানাফ ও কুনিকো মার্কিন সেনাঘাঁটিতে রকেট ও ড্রোন হামলা হয়। গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা এবং এই বর্বরতায় মার্কিন সমর্থনের প্রতিবাদে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এই ফ্রন্ট। এর মধ্যদিয়ে তারা গাজা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করল বলেও দাবি করেছেন।
ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ ফ্রন্ট বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা তিনটি ড্রোনের সাহায্যে সিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আল-তানাফ ঘাঁটিতে হামলা চালান। এটি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। এ-দিন ইরাকের প্রতিরোধ ফ্রন্ট ইরাকের আল-আনবার প্রদেশের আইন আল-আসাদ সামরিক ঘাঁটি এবং উত্তরাঞ্চলীয় আল-হারির সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায়। এরপর তারা এক বিবৃতিতে সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলার দায় স্বীকার করেন। ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ ফ্রন্ট কয়েকদিন ধরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল, গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধ না হলে তারাও নিজেদেরকে এই যুদ্ধে সম্পৃক্ত করবে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, লোহিত সাগরে থাকা মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া বেশকিছু ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন প্রতিহত করেছে। হামলার কারনে এই অঞ্চলে যুদ্ধবিমানসহ আরও শক্তি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। আরও হামলার আশঙ্কায় সতর্কাবস্থায় রয়েছেন তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা এবং হামলাকে কেন্দ্র করে নেওয়া মার্কিন পদক্ষেপ থেকে মনে হচ্ছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পরিধি ও ভয়াবহতা আরও বিস্তৃত হচ্ছে যাচ্ছে।
২.
লেবাননের নাহার নিউজ শুক্রবার জানিয়েছে, হামাসের সামরিক শাখা কাস্সাম ব্রিগেডস বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলে ৩০টি রকেট ছুড়েছে। এই হামলার লক্ষ্য ছিল নাহারিয়া এবং শ্লোমি-র শহরগুলো। হামলায় উত্তর ইসরায়েলের একটি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে; হতাহত হয়েছেন অনেকে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র সীমান্ত বরাবর কয়েকটি ইসরায়েলি সেনা অবস্থান এবং একটি ইহুদি বসতিতে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলও এর জবাবে সীমান্তের কয়েকটি এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছে।
সীমান্ত এলাকা থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। নিজেদের নাগরিকদের অবিলম্বে লেবানন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। তাছাড়া, অধিকৃত পশ্চিমতীরের কুলকারাম শহরের কাছে নূর শামস উদ্বাস্তু শিবিরে বৃহস্পতিবার ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বিস্ফোরণে ১০ ইসরাইলি সেনা আহত হয়েছেন।
৩.
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, গাজায় ইসরায়েল যেভাবে নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে, তা গর্হিত অপরাধ। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের বিস্তার ঘটলে তার পরিণতি বিপজ্জনক হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রিয়াদে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে এক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন যুবরাজ। ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সমর্থনের অংশ হিসেবে একইদিন তেলআবিব সফরে গিয়ে ইসরায়েলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর সৌদি আরব সফরে যান ঋষি সুনাক।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যুবরাজ বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করে ইসরায়েলের বোমা বর্ষণকে সৌদি আরব পাশবিক হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে। একইসঙ্গে সংঘাতের বিস্তার ঠেকাতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সৌদি যুবরাজ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজায় পানি, খাদ্য ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্য পৌঁছানোর ওপর জোর দিয়েছেন সুনাক ও সৌদি যুবরাজ। শুক্রবার ঋষি সুনাক মিসরে গেছেন; সেখানে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা।
বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী যখন ইসরায়েলকে সমর্থন জানাতে মধ্যপ্রাচ্য সফরে, তখন ব্রিটেনভিত্তিক সংগঠন ‘ইউগভ’ পরিচালিত এক জনমত জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান সঙ্ঘাতের দ্রুত অবসান চান। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৬ শতাংশ মানুষ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত দিয়েছেন। জনগণের এই মতামত দেশটির বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত।
৪.
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কঠোর অবস্থানের কারণে ইসরায়েল ও তুরস্কের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। তুরস্কে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইরিত লিলিয়ান-সহ ইসরায়েলের সব কূটনীতিক তুরস্ক ত্যাগ করেছেন। এএফপি জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ থেকে কূটনীতিক সরিয়ে নিতে যাচ্ছে ইসরায়েল।
মরক্কো, বাহরাইন ও জর্ডান থেকেও রাষ্ট্রদূতসহ দুতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারিকে ফিরিয়ে এনেছে তেলআবিব। খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ মঙ্গলবার তুরস্ক থেকে সব কূটনীতিককে যত দ্রুত সম্ভব ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। বুধবার ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেট জানায়, ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে তারা নিজেদের নিরাপত্তার কারণে চলে যাচ্ছেন।
হামলার ভয়ে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় আদানা শহরের কনসুলেট অফিস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় পাঁচ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টায় ইসরায়েলের পক্ষে সাফাই গাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তুরস্কের নাগরিকদের ক্ষোভ তীব্র হয়। এরপর তুরস্কের মার্কিন দূতাবাস এই কনসুলেট বন্ধের ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় বলা হয়, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত আদানা কনসুলেট বন্ধ থাকবে। একইসাথে ওই এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য মার্কিন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
৫.
টাইমস অব ইসরায়েল শুক্রবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি জনগণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। ডেইলি মারিভের এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ ইসরায়েলি মনে করেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় বিপুল ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পেছনে নেতানিয়াহুর ব্যর্থতাই দায়ী। মাত্র ৮ শতাংশ বলেছেন, এই ঘটনায় নেতানিয়াহু দায়ী নন। জরিপে দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ ইসরায়েলি গাজায় স্থল-হামলার পক্ষে; এর বিপক্ষে ২১ শতাংশ।
ইসরায়েলি শহর উম্মে আল-ফাহমের অধিবাসীরা বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন। গাজায় ইসরায়েলি বোমাহামলার বিরুদ্ধে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে স্লোগান দেন তারা। শহরটি দখলকৃত পশ্চিমতীরের জেনিন শহরের উত্তর-পশ্চিমে এবং ইসরায়েল ও পশ্চিমতীরকে বিভাজনকারী প্রাচীরের কাছে অবস্থিত।
দেশে-বিদেশে প্রচ- চাপের মধ্যে খেই হারিয়ে ফেলা নেতানিয়াহুর নির্দেশে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গাজার শতাধিক অবস্থানে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হামলা থেকে বাদ পড়েনি গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ-ও। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানায়, গাজার আল-জয়তুন এলাকার সেন্ট পরফিরাস চার্চে বৃহস্পতিবার হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। হামলায় কাউন্সিল অব চার্চ স্টেওয়ার্ডসের ভবনটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। অব্যাহত বিমান হামলার মুখে খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আলজাজিরা জানায়, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের অভিযানের পর থেকে গাজায় বিমানহামলায় এ-পর্যন্ত তিন হাজার ৭৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসের হাতে নির্মূল হয়েছেন এক হাজার ৪০০ ইসরায়েলি।
৬.
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাজা-সীমান্তে জড়ো হওয়া সেনাদের বলেছেন, তারা শিগগির অবরুদ্ধ ছিটমহলটিকে ভেতর থেকে দেখতে পাবেন। এর মাধ্যমে তিনি গাজায় আসন্ন স্থল অভিযানের আভাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
এই অবস্থায় ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্র যাতে অস্ত্র সরবরাহ করতে না পারে, এ-লক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সামরিক প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি। কাতারের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী খালিদ বিন মোহাম্মদ আল-আতাইয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপে বাকেরি এই আহ্বান জানান। এ-সময় তারা গাজায় জরুরি ত্রাণ পাঠানোর বিষয়ে দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হামাস ও রাশিয়া উভয়ই একই রকমের। তারা প্রতিবেশী দেশের গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। কিন্তু কাউকেই জিততে দেওয়া হবে না। হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে তেলআবিব সফর করেন বাইডেন। সেখান থেকে ফিরে ওয়াশিংটনের ওভাল অফিস থেকে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। বাইডেন বলেন, একটি মহান জাতি হিসেবে আমরা হামাসের মতো সন্ত্রাসী এবং পুতিনের মতো একজন স্বৈরাচারী শাসককে জয়ী হতে দিতে পারি না। তিনি বলেন, হামাসের হাতে আটক মার্কিন বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনাই এখন অগ্রাধিকার।
৭.
মার্কিন সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্ট জানিয়েছে, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার পরও ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের অন্ধ সমর্থনের কারণে দেশটির প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। এই অবস্থায় ইহুদি ও মুসলিমের সমন্বয়ে চার শতাধিক কংগ্রেসনাল কর্মী একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অমানবিক পদক্ষেপে তীব্র বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এক মার্কিন কর্মকর্তা হাফপোস্টকে নিশ্চিত করেছেন, গাজা যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপের সমালোচনা করা এই অভ্যন্তরীণ নথিটি পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে। দেশটিতে বুধবার হাজার হাজার ইহুদি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবাজ ঘোষণা করে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার দাবিতে কংগ্রেস ভবন ঘেরাও করেন। কয়েকশ ইহুদি কংগ্রেস ভবনে ঢুকে ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এর মধ্যেই ইসরায়েলকে সহায়তার জন্য ১৪ বিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজ কংগ্রেসে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রাশিয়া আশঙ্কা করছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত বিশ^যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, এই যুদ্ধ গোটা অঞ্চল এমনকি গোটা বিশে^ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, এটি এমন একটি যুদ্ধ, যেখানে বেসামরিক মানুষদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশে^ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার নামে যুদ্ধবিগ্রহ ও অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
৮.
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস বলেছেন, গাজায় যাওয়ার জন্য ত্রাণের ট্রাকগুলো এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। ত্রাণ যাওয়ার জন্য শুক্রবার গাজা ও মিসরের মধ্যকার রাফাহ ক্রসিং খোলার কথা থাকলেও সেটি এ-দিন খোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে আভাস দিয়েছে কিছু সংবাদমাধ্যম।
একটি সূত্র সিএনএন-এর কাছে ব্যাখ্যা করেছে, বাফার জোনের মিসরীয় অংশে সড়ক মেরামত এখনও সম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া, এই ত্রাণের প্রবাহ অক্ষুণœ থাকবে, নাকি একদফা সরবরাহের পর বন্ধ হয়ে যাবে, তা নিশ্চিত হতে আরও অনেক বিষয় বাকি।
আলজাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিশ^বাসী ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং মুসলিম দেশগুলো তো বটেই, পশ্চিমা দেশগুলো এবং অন্যান্য স্থানেও ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পাঠাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। নামাজ শেষে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং ফিলিস্তিনিদের রক্ষার জন্য বিশেষ মুনাজাত করা হয়।