বিশ্বকাপ দেখার জন্য বিক্রি করেন নিজের বাড়ি, কে এই পাকিস্তানের ‘ক্রিকেট চাচা’?

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩২, আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩৮
কে এই পাকিস্তানের ‘ক্রিকেট চাচা’? – ছবি : সংগৃহীত

শুরু হয়েছে ক্রিকেটের বিশ্বযুদ্ধ। আর সেই উন্মাদনায় ফুটছে গোটা বিশ্বের ক্রিকেটমহল। চলতি বছরে খেলার আসর বসেছে ভারতে। সেই উপলক্ষে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেখানে হাজির হয়েছেন ক্রিকেট ফ্যানরা। এই আবহে চর্চায় উঠে এসেছে পাকিস্তানের এক ‘জাবরা ফ্যান’।

তার বয়স ৭৩ বছর, কিন্তু তাতে কী! এখনো তাকে দেখলে বোঝার উপায় নেই বয়সের এই হিসাব। নেশা বলতে ক্রিকেট দেখা। তবে তা গ্যালারিতে বসে। দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে গ্যালারি মাতিয়ে আসছেন বিগত কয়েক দশক ধরে। টিভির স্ক্রিনে অনেকেই হয়তো তাকে দেখেছেনও।

বিশেষ করে কেউ যদি ১৯৮৬ সালের ভারত-পাকিস্তানের বিখ্যাত ম্যাচটি দেখে থাকেন। সেখানে পাকিস্তানি খেলোয়াড় মিয়াঁদাদের উইনিং সিক্স গ্যালারিতে এসে পড়েছিল এই ফ্যানের কোলেই। তারপর থেকেই রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে যান চৌধুরি আব্দুল জালিল।

খেলা দেখা শুরু করেছিলেন, ১৯৬৯ সালে। মাত্র ১৯ বছর বয়স থেকেই গ্যালারিতে গিয়ে দেশের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। প্রায় ৫০০-এরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ গ্যালারিতে বসে দেখেছেন তিনি। আর সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটা পোশাকেই দেখা গেছে তাকে।

দেশের পতাকার সাথে মিল রেখে সবুজ রঙের কুর্তা, সেইসাথে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা টুপি। একসময় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কাছেও পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন আব্দুল। যদিও তাকে সকলেই ‘চাচা’ হিসেবে চেনেন।

এইসময় তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে গেলে, কোনো না কোনো সংস্থা খরচের ভার নিত। বিনিময়ে সেই সংস্থার লোগো থাকত তার জামায়। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকেও বেশ কিছু সুবিধা পেতেন তিনি। আর সে দেশের খেলোয়াড়দের কাছে তো তিনি রীতিমতো জনপ্রিয় ছিলেন।

কিন্তু ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তানের এক ম্যাচের জন্য তিনি কোনো স্পনসর পাননি। কোনো এক রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়ে প্রায় একঘরে হয়ে পড়েন আব্দুল। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকেও তার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে দাবি করেছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম।

এদিকে তিনিও ম্যাচ না দেখার পাত্র নন। তাই নিজের সাধের বাড়িটাই বিক্রি করে দেন। দীর্ঘদিনের ম্যাচ দেখার ছবি দেখিয়ে জোগাড় করে ফেলেন ভিসাও। তারপর স্বপ্নপূরণ করতে রওনা দেন ইংল্যান্ডের উদ্দেশে। এই ঘটনা আজীবন মনে রাখতে চান আব্দুল। বিশেষত যে বাড়ি তিনি তখন জলের দরে বেচে দিয়েছিলেন, তার বর্তমান দাম নাকি কয়েক কোটি টাকা। তবে এ নিয়ে কোনো আফসোস তার নেই।

ক্রিকেটের প্রতি তার যে ভালোবাসা, তার সামনে এইসবই ফিকে হয়ে যায়। সেইসাথে এখন দেশ বিদেশের প্রায় সব ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছেই তিনি পরিচিত মুখ। এই ভালোবাসা আগলেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান পাকিস্তানের এই ‘জাবরা ফ্যান’। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন