- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৪ জুলাই ২০২৩, ২৩:০৯
দেশে এখন ডেমোক্রেসির পরিবর্তে আওয়ামীক্রেসি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) এমপি।
তিনি বলেন, সরকারি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বেছে বেছে আওয়ামী লীগের লোক বসানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ হচ্ছে সরকারি দলের দুর্নীতিবাজদের সার্টিফিকেট দেয়া। তারা কোনো দুর্নীতি করেননি। সকল জায়গায় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে, এটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। ফলে গরীব আরো গরীব হচ্ছে, ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে লুটপাট চলছে। দেশের মানুষের খোঁজ রাখা হচ্ছে না। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষে হতে পারে কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি নয়।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুমহুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তৃতায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, সকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচন করতে হবে নির্বাচিত সরকারের অধীনে, আমরাও চাই। নির্বাচিত সরকার যদি নির্বাচন কমিশনসহ সকল কিছু প্রভাবিত করতে পারে তাকে সমর্থন করা যায় না। সংবিধানে বলা হয়েছে গণতন্ত্রের কথা। জনগণ যদি মনে করে আমার ভোটে সরকার গঠন হয়েছে, তাকেই বলা যায় নির্বাচিত সরকার। নির্বাচন কমিশন যেন সরকারের প্রভাবের বাইরে থাকে। যদি আমার কথায় নির্বাচন কমিশন চলে, তাহলে আমি কী হেরে যাবো এমন সিদ্ধান্ত নেবো? সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নামে ও বেনামে সরকার হয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের সরকারের জন্য কাজ করছে। তারা কাজ করছে তাদের সরকারের জন্য। কিছু মানুষ প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে, সরকারি বিভিন্ন বিভাগে আছে, তারা আগ বাড়িয়ে বলেন, আমরা আওয়ামী পরিবার। আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি। তারা আওয়ামী লীগের সভায় যায়, শ্লোগান দেয় এবং আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলে। এরা হচ্ছে বেনামে আওয়ামী লীগ। এখন ডেমক্রেসির পরিবর্তে আওয়ামীক্রেসি চলছে। যেখানে গর্ভমেন্ট অব দ্যা আওয়ামী লীগ, গর্ভমেন্ট বাই দ্যা আওয়ামী লীগ এবং গর্ভমেন্ট ফর দ্যা আওয়ামী লীগ। এটা কথনোই ডেমেক্রেসি হতে পারে না। আমরা চাই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সেই সরকার নির্বাচিত হতে হবে। যে সরকার নিজেই নিজের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে তাকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না।
এর আগে গতকাল সকাল ৯টায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন নেতারা। বাদ জুমা মসজিদের মসজিদে তার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। এছাড়াও জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় পার্টির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এরশাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম এমপি, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মীর আব্দুস সবুর আসুদ প্রমুখ।