thedailycampus.com ৩০ জুন ২০২৩
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) বিশ্বসেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পায়নি বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। তবে র্যাঙ্কিংয়ে গত বছরের চেয়ে অগ্রগতি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। শুধু তাই নয়, প্রথমবারের মতো বিশ্বসেরা ৭০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে চমকও দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাছাড়া গতবারের মতো এবারও ৮০০-এর পরে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এবার ১০০০-এর মধ্যে বেসরকারি নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। গতবার এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ১০০০-এর বাইরে ছিল।
বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাঙ্কিং মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কিউএস গতকাল মঙ্গলবার তাদের ওয়েবসাইটে এই র্যাঙ্কিংয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে। ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংস ২০২৪: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’ শীর্ষক এই র্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৫০০-এর পরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করা হয় না। এ কারণে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে কত নম্বরে, তা উল্লেখ করেনি কিউএস।
র্যাঙ্কিংয়ে এবার সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ভারতের ১১টি ও পাকিস্তানের ২টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। গত 8 বছরে এই প্রথম কোনও ভারতীয় ইনস্টিটিউট শীর্ষ ১৫০-তে জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্বের ১০৪টি দেশের দেড় হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে এবার র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়েছে।
শীর্ষ ৫০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১১টি ভারতীয়
১১টি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বিশ্বের শীর্ষ ৫০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। আইআইটি বোম্বে (১৪৯), আইআইটি দিল্লি (১৯৭), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (২২৫), আইআইটি খড়গপুর (২৭১), আইআইটি কানপুর (২৭৮), আইআইটি মাদ্রাজ (২৮৫), আইআইটি গুয়াহাটি (৩৬৪), আইআইটি রুরকি (৩৬৯), দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় (৪০৭) ও আন্না বিশ্ববিদ্যালয় (৪২৭)
শীর্ষ ৫০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২টি পাকিস্তানের
কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় ৩১৭তম স্থান অর্জন করেছে এবারের ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংস ২০২৪: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’-এ। এছাড়া শীর্ষ ৫০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি, ইসলামাবাদ। বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩৬৭তম স্থানে রয়েছে।
এদিকে, এই র্যাঙ্কিংয়ে গতবার ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান হলে এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি মোট ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান হয়েছে। এবার র্যাঙ্কিংয়ে ৬৯১-৭০০তম অবস্থান দখল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশসেরা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ৮০১-৮৫০ এর অবস্থান বুয়েটের, তৃতীয় হওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৮৫১-৯০০ এর মধ্যে, চতুর্থ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১০০১-১২০০ এর মধ্যে। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ।
২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র্যাঙ্কিংগুলোর একটি মনে করা হয়। এই র্যাঙ্কিংয়ে এখন আটটি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়। প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর থাকে। সব সূচকের যোগফলের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারিত হয়।
কিউএস র্যাঙ্কিংয়ের সূচকগুলো হলো একাডেমিক খ্যাতি (একাডেমিক রেপুটেশন), চাকরির বাজারে সুনাম (অ্যামপ্লয়ার রেপুটেশন), শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত (ফ্যাকাল্টি-স্টুডেন্ট রেশিও), শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশনস পার ফ্যাকাল্টি), আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি রেশিও), আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রেশিও), আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক (ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ নেটওয়ার্ক) ও কর্মসংস্থান (অ্যাম্প্লয়মেন্ট আউটকামস)।
কিউএসের এবারের র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১ হাজার ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ ১০০-তে ১০০ স্কোর নিয়ে এবারও প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।