- তারেকুল ইসলাম
- ২৬ জুন ২০২৩, ১৯:৪৩
বাংলাদেশ বর্তমানে এক ঐতিহাসিক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঐক্য খুব জরুরি। কারণ জাতির এই দুর্দিনে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী দলগুলোর বলিষ্ঠ ভ‚মিকা সাধারণ মানুষ আশা করে। চলমান ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ জাতীয় রাজনীতিতে তাদের আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে সন্দেহ নেই। কিন্তু ফ্যাসিস্টদের প্রলোভনে পা দেয়া হবে আত্মহত্যার শামিল। ইতোমধ্যে বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী মুফতি ফয়জুল করীমের ওপর আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের হামলার খবর পত্র-পত্রিকায় এসেছে। প্রতিবাদে দলটি ভোট বর্জন করে। ভোট চলাকালীন যেকোনো প্রার্থীর ওপর হামলা অগণতান্ত্রিক ও অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। অপরদিকে, দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব বিরোধীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ এমন নির্বাচন কমিশনের ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি’ বিশ্বাস করেছিলেন, যা তাদের রাজনৈতিক অপরিপক্বতার পরিচায়ক বললে ভুল হবে না। কেননা, বর্তমান সিইসি দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারেননি। দলীয় সরকারের অধীনে যা হুদা কমিশন, তা-ই আউয়াল কমিশন।
যাই হোক, মুফতি ফয়জুল করীমের ওপর হামলা থেকে যে শিক্ষাটা আমরা নিতে পারি, তা হলো- ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে এককভাবে কেউ সফল হতে পারে না এবং সেই লড়াইয়ের ক্ষেত্রটাও (নির্বাচনী মাঠ) যদি ফ্যাসিস্টদের অনুকূলে থাকে, তাহলে সেই লড়াইয়ে টিকে থাকাও সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্য, সংঘবদ্ধতা, সমন্বয় ও দূরদর্শী কৌশলের কোনো বিকল্প নেই। অন্যথায়, বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলনরত বিরোধীদের একের পর এক কৌশলগত ভুল ও ব্যর্থতা ফ্যাসিবাদের টিকে থাকাকে দীর্ঘায়িত করবে, যা গত এক যুগেরই চিত্র। তবে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাংলাদেশনীতির প্রভাবে এখনকার পরিস্থিতি ইসলামী দলগুলোর কাজে লাগাতে হবে। ঐক্যের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে অভিযোগ আছে, ইসলামী দলগুলোর কোনো কোনোটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তি রয়েছেন, যারা নতুন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেয়া কিংবা ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধভাবে কিছু করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন (১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, নয়া দিগন্ত)। এখন সময় এসেছে এ ধরনের অভিযুক্ত সন্দেহভাজনদের ব্যাপারেও দলের অভ্যন্তরে পদক্ষেপ নেয়ার।
এবার একটি অভূতপূর্ব ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ করা গেছে, তা হলো, জামায়াতে ইসলামীসহ মোটামুটি সব ইসলামী দলের প্রতিনিধি আহত মুফতি ফয়জুল করীমকে দেখতে গিয়েছেন। আগের সব বিভেদ ফেলে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন। এটিই ভ্রাতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। পারস্পরিক রেষারেষি ও দূরত্ব ইসলামী দলগুলোকে তাদের মূল অভিন্ন লক্ষ্যে কখনোই এগোতে দেবে না; বরং এই সুযোগে অন্যরা তাদেরকে একেক সময় যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করে নিচ্ছে।
সাধারণত লক্ষণীয়, মুসলমানদের সঙ্কটকালে প্রায়ই অভিযোগ করা হয়, সব ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র। দুই ভাগ হয়ে যাওয়া তাবলিগের ক্ষেত্রেও আমরা এই অজুহাতটা দেখেছি। সব অভিযোগ ইহুদি-নাসারাদের ওপর দেয়ার কারণে নিজেদের ব্যর্থতা, আত্মকলহ, অনৈক্য ও অসচেতনতা যে ঢাকা পড়ে যায়, সেই হুঁশ আর থাকে না। ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র কোনোকালেই বন্ধ ছিল না। নানা রূপে নানা পন্থায় সেটি তো আছেই। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা সে বিষয়ে আমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্কবার্তাও দিয়ে রেখেছেন। ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র করার যোগ্যতা আছে, কিন্তু ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করার যোগ্যতা কি মুসলিম বিশ্বের নেই? যোগ্যতা তো থাকার বিষয় নয়, অর্জনের বিষয়। কূটনৈতিক দক্ষতা, যোগাযোগ কৌশল, সাংগঠনিক কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা এবং নেতৃত্বের গুণাবলির উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এ ছাড়াও ইসলামী দলগুলোর উচিত, পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে উদ্যোগী হওয়া এবং তাদের নিজেদের ভিশনকে আরো যুগোপযোগী ও দূরদর্শী করে জনগণের সামনে হাজির করা।
লক্ষণীয়, ইহুদি-নাসারাদের মধ্যেও বিভক্তি কম ছিল না; কিন্তু তারা ঠিকই নিজেদের সভ্যতার সুরক্ষা, সামরিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যু, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সহাবস্থান এবং রাষ্ট্রনৈতিক বিষয়াবলিতে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্যের পরিচয় দিয়েছে। ১৬৪৮ সালের অক্টোবরে ঐতিহাসিক ওয়েস্টফেলিয়া শান্তিচুক্তির মাধ্যমে ইউরোপ তার অভ্যন্তরীণ তিন দশকের ধর্মীয় ফেঁকড়াগত যুদ্ধ ও হানাহানির অবসান ঘটিয়ে নিজেদের মধ্যে ধর্মীয় সহাবস্থান নিশ্চিত করেছিল।
দুর্ভাগ্য হলো- গত শতাব্দীর প্রথম ভাগে খেলাফত ধ্বংস হয়ে মুসলিম বিশ্ব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল; আর দ্বিতীয় ভাগে ইউরোপ সুসংগঠিত ও সুসংহত হয়ে উঠল। আজকে মুসলমানদের মানবাধিকার হরণ হলে আমরা পশ্চিমাদের দিকে চেয়ে থাকি এবং অভিযোগ করি, তারা চুপ বা নিষ্ক্রিয় কেন। আবার কখনো কখনো পশ্চিমা মিডিয়ার পক্ষপাতিত্বের সমালোচনা করি; তাদের ইসলামোফোবিক আচরণের নিন্দা করি। তারা মুসলমানদের মানবাধিকার হরণ নিয়ে মাথা না ঘামালেও নিজেদের মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের নীতিতে অটল। অপ্রিয় সত্য হলেও বলতে হচ্ছে, আমাদের অনৈক্য ও দুর্বলতা এখনো আমাদেরকে ‘সব ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগের মধ্যেই আটকে রেখেছে।
সম্প্রতি প্রায় এক যুগ পর জামায়াতে ইসলামী দেশে সমাবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। কোনো কোনো মহল জল্পনা-কল্পনা থেকে প্রশ্ন তুলেছে- গত ১০ বছরে জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি, তাহলে এবার কেন অনুমতি দেয়া হলো? দলটি সরকারের সাথে ‘আঁতাত’ করেছে এমনটি কেউ কেউ সন্দেহ করছেন। এ সন্দেহের খুব একটা ভিত্তি নেই। কারণ, গত ১০ বছরের পরিস্থিতি আর আজকের পরিস্থিতি এক নয়। তা ছাড়া এত সহজে তারা অনুমতি পেয়েছেন তা-ও নয়; বরং অনুমতির আবেদন নিয়ে ডিএমপি কার্যালয়ে গেলে তাদের চার নেতাকে আটক করা হয়। অবশ্য আটকের প্রায় দুই ঘণ্টা পর মুক্তিও দেয়া হয়। অবশেষে জামায়াতকে একটি মিলনায়তনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়। জামায়াত বিবিসি বাংলাকে বলেছে, ‘অনুমতি দিতে সরকার বাধ্য হয়েছে’। বস্তুতপক্ষে, যেখানে বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশ করার অধিকারের ব্যাপারে সরকারের ওপর পশ্চিমা চাপ রয়েছে, সেখানে জামায়াতকে অনুমতি না দিয়ে সরকারের উপায় ছিল না। তা ছাড়া নতুন মার্কিন ভিসানীতিতে শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনই নয়, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বাধা দিলেও এটি প্রযোজ্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফলে জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি না দিলে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার অভিযোগ আরো জোরালো হতো।
ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি থেকে জামায়াতকে দূরে রাখতে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা বাজারে ছাড়া হচ্ছে। জামায়াতের সাথে দূরত্বের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘জামায়াতের সাথে আমাদের তো দূরত্ব হওয়ার কোনো দরকার নাই। আমি মনে করি, দেশের স্বার্থে আমাদের; বরং ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে দেশের মানুষের অধিকার ফেরত আনাই এখন সবার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত’ (১৬ জুন ২০২৩)।
অন্য দিকে, জামায়াতের সমাবেশ নিয়ে ক্ষমতাসীন মহল রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার চেষ্টা করবে এটি খুবই স্বাভাবিক। যেমন কেউ কেউ এমনটি বলেছেন, জামায়াতের সমাবেশ দেখিয়ে ভারতকে এই বলে চাপ দেয়া হতে পারে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে ‘মৌলবাদী’রা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে; যাতে আওয়ামী লীগের হয়ে পশ্চিমাদের সাথে দেনদরবার করতে ভারত চাপে পড়ে। এ দেশে ইসলামপন্থীদের ব্যাপারে ভারতের নীতি যতই আগ্রাসী হোক, বাইডেন প্রশাসনের নতুন ফরেন পলিসি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত ভূ-কৌশলগত (Geo-strategical) হিসাব-নিকাশের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ভারতীয় হেজিমনি যে এখন সঙ্কটে পড়েছে তা বলাবাহুল্য। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক দ্য আটলান্টিক কাউন্সিলে গত ১৫ জুন অধ্যাপক আলী রিয়াজ এক প্রবন্ধে খোলাখুলি লিখেছেন,‘Considering the high-stake geopolitical contestation between United States and China in the Asia-Pacific region and the increasing importance of Bangladesh in this tug-of-war, India is grudgingly accepting that it is becoming a secondary external actor in Bangladeshi politics as the United States no longer considers India a strong player.’ (অর্থাৎ, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ঝুঁকিপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক বিরোধ এবং এই দড়ি টানাটানির প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারতকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেনে নিতে হচ্ছে যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেশটি এখন কম গুরুত্বপূর্ণ বহিরাগত অনুঘটকে পরিণত হচ্ছে, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে আর শক্তিশালী খেলোয়াড় হিসেবে দেখছে না)।
উল্লেখ্য, কথিত কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে ওয়াশিংটনে মোদি তার সদ্যসমাপ্ত রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাইডেনের সাথে কথা বলবেন বলে একশ্রেণীর মিডিয়া হাইপ তুললেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এখন জানা যাচ্ছে, খোদ বাংলাদেশই নাকি ভারতের কাছে মিনতি করেছিল যাতে বাইডেনের সাথে বৈঠককালে মোদি বাংলাদেশ বিষয়ে কথা বলেন (২১ জুন ২০২৩, হিন্দুস্তান টাইমস)। এমনকি ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের ব্রিফিংয়ে মোদির সফরের যে এজেন্ডা তুলে ধরা হয়েছিল, তাতেও বাংলাদেশ ইস্যু ছিল না (২১ জুন ২০২৩, ডেইলি স্টার)। তা ছাড়া মোদির সফরের প্রাক্কালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার নিশ্চিতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে থাকবে কি না জানতে চাইলে হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা-বিষয়ক মুখপাত্র জন কার্বি বিষয়টিকে ভারতের নিজস্ব ব্যাপার উল্লেখ করে বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিভিন্ন ভারতীয় মিডিয়ায় প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে যে, পশ্চিমা চাপের ফলে বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারে এবং তাতে করে ‘জঙ্গিবাদ’ আবার চাঙা হবে। এই যুক্তিকে ভারতীয় মিডিয়ার ‘মূর্খতা’ আখ্যা দিয়ে আলী রিয়াজ একই প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘এই যুক্তি প্রদানকারীরা বিশ্বজুড়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের উত্থানের প্রেক্ষাপট ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে আমলে নিচ্ছেন না। এটি বলা অত্যুক্তি হবে না যে, এ ধরনের যুক্তির মানে ইসলামপন্থীদের জুজু দেখিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণকে ন্যায্যতা দেয়া।’ এ ছাড়া আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপসহ নানা বৈষম্যমূলক ও আধিপত্যবাদী আচরণের কারণে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর প্রতি দেশের জনগণ চরম ক্ষুব্ধ। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অজানা নয়। সে কারণে ভারতের হীন স্বার্থের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার নতুন বাংলাদেশনীতি থেকে সরে গিয়ে নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জনগণের বিরাগভাজন হতে চাইবে না; বরং বাংলাদেশে যদি একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার থাকে, তাহলে সেটি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের কর্তৃত্ববাদী শাসকদের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সুবিধাজনক পর্যায়ে থাকার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
যাই হোক, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এক ঐতিহাসিক সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। জাতি ও উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে এ সুযোগ তাদের কাজে লাগাতে হবে। এ ছাড়া কথিত ‘জঙ্গিবাদ’ ও ‘সন্ত্রাসবাদ’-এর জিগির তুলে প্রতিবাদী আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের ওপর রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে উত্তরণ ঘটছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বৈশ্বিক নীতি থেকে সরে এসেছে বাইডেন প্রশাসন। বাইডেনের ফরেন পলিসির কেন্দ্রবিন্দু এখন মানবাধিকার ও গণতন্ত্র। সে কারণে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ওপর রাষ্ট্রীয় অত্যাচার-নিপীড়নের বিষয়টি উঠে এসেছে। সুতরাং, এখন আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের উচিত, এতদিন ধরে তাদের ওপর হওয়া রাষ্ট্রীয় জুলুম-নির্যাতনের বর্ণনা ও নির্যাতনকারীদের নাম ও পরিচয়সহ যাবতীয় ঘটনাবলির ডকুমেন্টেশন করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সাথে যোগাযোগ তৈরি করা। এসব তাদের ঐক্যবদ্ধভাবেই করতে হবে।
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
[email protected]