১৯ জুন ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। ভারতের পাশে আমরা গণতন্ত্রবিহীন। এই গণতন্ত্রবিহীন অবস্থার জন্য বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে দায়ী করে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার যারা এখানে আছেন, তারা দিল্লিতে খবর পাঠান, জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন।
সোমবার (১৯শে জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। গত ১৪ই মে তারুণ্যের সমাবেশে থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামে ‘ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে ছাত্রলীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীদের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ এর আয়োজন করা হয়।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আপনাদের ভারত সরকার, ভারতের রাজনীতিবিদদের বলেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সাথে করবেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সাথে করবেন; নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের সাথে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সাথে যদি ভারতের বন্ধুত্ব হয়, সেটা হলো প্রকৃত বন্ধুত্ব, সেটা মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই হবে। নতুবা একজনের সাথে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, বন্ধুত্ব চাই। একটা রাষ্ট্রের সাথে আরেকটা রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু এই সরকার তো বন্ধুত্বে বিশ্বাস করে না। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলে দিয়েছে, প্রতিবেশীর সাথে তাদের বন্ধুত্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাও তো ভারতের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব আমাদের দরকার, ঝগড়াঝাঁটি আমাদের চলে না। আমাদের যদি প্রভুত্ব বা স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা দেয়, সেই বন্ধুত্ব তো কাম্য নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আপনাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক- এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। সঠিক তথ্য আপনাদের জানাতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা আমাদের নির্বাচনে পাশ করিয়ে দেবেন তা নয়; গণতন্ত্রের প্রশ্নে সুস্পষ্ট অবস্থান নেবেন কিনা- তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায় ।
মানববন্ধন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন, বলেন জনগণের ১০ দফা মেনে নেবেন, সংসদ বিলুপ্ত করবেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ করবেন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিলে কাল থেকে আপনাকে কিছু বলব না। শুধুমাত্র অপেক্ষা করব। কখন বঙ্গভবনে গিয়ে আপনার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তিনি আরে বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে সরকার গঠন করবে।
গয়েশ্বর বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। হ্যাঁ, বিএনপি নির্বাচনে যাবে; তবে কোনো ভোট ডাকাত এবং ভোট চোরদের ক্ষমতায় রেখে নয়।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে এই সরকারের আমলে গুম, খুন, নির্যাতনসহ সকল অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে।
সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরীন সুলতানা প্রমুখ।