১৭ জানুয়ারী ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগের নেতা তিনি। আওয়ামী সংসদের সদস্য। তাই দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু আওয়ামী সুপ্রিমকোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছে। জামিনে মুক্ত হয়েছেন তিনি। এই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হলেন পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ নেতা গডফাদারখ্যাত হাজী সেলিম। অথচ, বানোয়াট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জেলাজজ আদালতের ফরমায়েশি রায়ের দণ্ড দ্বিগুণ করেছে আওয়ামী হাইকোর্টের আওয়ামী বিচারকরা। তাঁর জামিন মিলেনি চরম অসুস্থ অবস্থায়ও।
মঙ্গলবার (১৭ই জানুয়ারি) দুপুরে শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন হাজি সেলিম।
হাজী সেলিমের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম সাঈদ আহমেদ রাজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি টিম হাজী সেলিমের জামিনের কাগজপত্র নিয়ে বিএসএমএমইউতে প্রবেশ করে। পরে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কাছে তা বুঝিয়ে দেন। এরপরই সরিয়ে নেওয়া হয় কারা পুলিশের নিরাপত্তা।
গত ৬ই ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চ দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দেন। একইসঙ্গে ১০ বছর দণ্ডের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
জরুরী আইনের সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৪শে অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছিল হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে।
২০০৮ সালের ২৭শে এপ্রিল পৃথক ওই মামলায় দুটি ধারায় হাজী সেলিমকে ১০ বছর ও তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। এরপর হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। হাইকোর্ট ৩ বছরের দণ্ড থেকে খালাস দিয়ে ১০ বছর চূড়ান্ত করেছে।
উল্লেখ্য, জরুরী আইনের আমলে দুদকের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে শেখ হাসিনার চাচাত ভাই শেখ হেলাল পলাতক ছিলেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর শেখ হেলালকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে হাইকোর্টের তৎকালীন আওয়ামী বিচারক পরবর্তীতে আপিল বিভাগে নিয়োগ পেয়ে প্রধান বিচারপতি হওয়া মোজাম্মেল হোসেন জামিন দিয়েছিলেন। এই বিশেষ সুবিধা নিয়ে তখন দৈনিক আমার দেশ শীর্ষ নিউজ প্রকাশ করলে পরের দিনই শেখ হেলাল ঢাকার জেলাজজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। আত্মসমর্পণের পর কারাগারে পাঠানো হলেও তাঁকে তখন কারাগারে রাখা হয়নি। কারাফটক থেকেই সরারি আরেকটি বিশেষ সুবিধা দিয়ে তৎকালীন অ্যাপলো হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে গিয়ে কারা কতৃপক্ষের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করলে দ্রুততার সাথে জামিন মঞ্জুর হয়েছিল শেখ হেলালের।
গডফাদার হাজী সেলিমের ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল শেখ হাসিনার অনুগত আদালত।