- ০৮ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৪৪
২০১৫-১৬ সালের মুস্তাফিজকে মনে আছে? সেই মুস্তাফিজ আর এই মুস্তাফিজে অনেক পার্থক্য। চরিত্রেও আছে বৈপরীত্য। ভূমিকাটাও যেন বদলে গেছে। এখন আর মুস্তাফিজে বিশ্ব মুগ্ধ হয় না। যেই মুস্তাফিজে ব্যাটাররা কাঁপতো, সেই মুস্তাফিজের হাতে বল দেখলে যেন এখন তাদের মুখে হাসি ফুঁটে। এখন তার শিল্প কর্দমাক্ত, মুস্তাফিজ এখন যেন নির্বিষ সর্প।
জাদুকরী কাটারের মায়াবী বিভ্রমে একসময় দুনিয়াকে ভড়কে দেয়া মুস্তাফিজে এখন যেন শুধুই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। ভালো মানুষ হবার লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে যেন নিজের পরিচয়টাই ভুলতে বসেছেন। সেরা হয়েই যিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন, তিনিই এখন স্বাভাবিক হওয়ার লড়াই করছেন। শুধুই এখন মিরপুর খানিকটা ধার ধরে রেখেছে, বাকী সব জায়গায়, সব মাঠে মুস্তাফিজ যেন ‘দলের বোঝা।’
গতকাল বল হাতে এসেছিলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। প্রথম ওভারে তাসকিন যেখানে দিয়েছিলেন মোটে এক রান, সেখানে মুস্তাফিজকে পেয়ে যেন তাদের মুখে হাসি ফুঁটে। নিজের প্রথম ওভারেই উপহার দেন ১০ রান। এইটা মাত্র একটা দৃশ্য, তবে এইটাই এখন মুস্তাফিজের নিয়মিত চিত্র। দ্বিতীয় ওভারে ৯, তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে দেন ২৯ রান। যদি এমন হতো সব বোলাররাই খারাপ করেছেন, তবে সান্ত্বনা ছিল। কিন্তু ৪ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে মুস্তাফিজই ছিলেন সব থেকে বেশী গৌণ। উইকেট শূন্য, ইকোনমিও জঘন্য। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বরাবরই ব্যর্থ মুস্তাফিজ, ১৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১ উইকেট ঝুলিতে। ইকোনমিও ১০ ছুঁই ছুঁই করে।
ম্যাচ থেকে ফিরে আসি, সময়ের সাথে কথা বলি। চলতি বছরে ১১ ইনিংসে মুস্তাফিজ বল করেছেন ৩৯ ওভার, ৯ ইকোনমিতে উইকেট মাত্র ৮টি। উইকেট প্রতি রান দিয়েছেন ৪২.৩৭ করে। তবুও কিনা ক্যারিয়ার বোলিং গড় ২১.৪৫! ভাবা যায় কতটা বাজে দিন পার করছেন এই পেসার? সেরা বোলিং ফিগারটাও আরব আমিরাতের বিপক্ষে, ৩১/২।
দেশের বাইরে তিনি বরাবরই সর্বনাশে। দেশসেরার তকমা নিয়ে, প্রতিনিয়তই উপহাস করে চলেছেন দেশের সাথে। মিথ্যে বলিনি, পরিসংখ্যান বলছে বিদেশের মাটিতে শেষ ১৫ ম্যাচে ৪৫ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ৪২৭। ইকোনমি ১০ ছুঁই ছুঁই। নিয়েছেন মাত্র ৯ উইকেট। এক উইকেট পেয়ে খরচ করেছেন ৪৮ রান!
যেই মুস্তাফিজ একটা সময় দলকে টেনে নিতেন, তাকেই যেন আজ দল টেনে নিচ্ছে। গত দুই বছর ধরে যেন তার ভারই বহন করে আসছে। দেখা যাক এভাবে আর কতদিন চলে…