- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐতিহ্য এ রকম যে, আন্দোলন ছাড়া কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। ১৯৪৭-এর দেশ বিভাগ থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এই অপ্রিয় সত্যটি বেরিয়ে আসে। এখন ফেব্রুয়ারি মাস চলছে। সে দিনের সেই ভাষা আন্দোলনের কথাই মনে করুন না কেন? যেটি ছিল সহজ-সরল ও স্বাভাবিক বিষয় সেই রাষ্ট্রভাষা অর্জন করতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিতে হলো। অথচ শাসকগোষ্ঠীর সুমতি হলে এই দুর্যোগ-দুর্ভোগ হতো না। সেই শাসকগোষ্ঠী ১৯৫৪ সালে নিজেদের ভরাডুবির ভবিষ্যৎ বুঝতে পারেনি। ১৯৫৬ সালে একটি শাসনতন্ত্র দিতে পারলেও তা মেনে জাতীয় ঐক্য গড়তে পারেনি; বরং প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে নিমজ্জিত হয়েছে শাসককুল।
১৯৫৮ সালে অযাচিতভাবে সামরিক আইন জারি করা হয়। ১৯৬২ সালে তথাকথিত আদি ও আসল ‘মৌলিক গণতন্ত্রের’ নামে গণতন্ত্র হরণ করা হয়। আর এসব অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবারই জনগণকে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের বিজয় ঘোষিত হয়েছে। ১৯৭০ সালের নিরঙ্কুশ বিজয়কে অস্বীকার করার ফলে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। এই জাতির দুর্ভাগ্য ‘যথা পূর্বং তথা পরং’ প্রবাদবাক্যে আমাদের জনজীবন বিধৃত হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের পর আমরা ভেবে ছিলাম দুর্ভাগ্যের অবসান হবে। পাকিস্তানি ধনিক-বণিক শ্রেণীর শোসনমুক্ত হয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু একটি ভালো সংবিধান প্রণয়নের অল্প দিনের মধ্যেই ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে’ নাগরিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্রেফতার হয়েছে।
যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য লড়াই-যুদ্ধ হয়েছে তাদের কণ্ঠ রোধ করার জন্য ‘প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স অর্ডিন্যান্স’ জারি হয়েছে। জাসদের দাবি অনুযায়ী ৪০ হাজার নেতাকর্মী গুম ও খুন হয়েছে। দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। অবশেষে বাকশাল সব কিছু ছিনিয়ে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে জনগণকে রক্ত দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি স্বৈরতন্ত্রের ভূত বাংলাদেশের নেতা-নেত্রীদের কাঁধে চেপেছে। এখনো সেই ভূতের আঁচড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে আমাদের রাজনীতি। এ যেন নতুন করে পুরোনো ঘটনা।
ক্ষমতাশীন সরকার কর্তৃত্ববাদ, ফেসিবাদ ও স্বৈরাচার অভিধায় অভিযুক্ত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে যাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে পেশিশক্তির তোড়ে পেরে উঠছে না তারা। সরকারের ষড়যন্ত্র ও কলাকৌশলের কাছে পরাজিত হচ্ছে তারা। এই সময়ে তাদের চলমান আন্দোলন সরকারের সব ধরনের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার বিরুদ্ধে। আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও বিরোধী পক্ষ কৌশলে শাণ দিচ্ছে। এর মধ্যে এখন যে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম তা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন গঠন। সরকার চতুরতার সাথে ইলেকশন কমিশন আইন করেছে। আগে যে অনানুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে কমিশন গঠিত হতো, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
সরকারের লাভ হলো ভবিষ্যতে দৈব দুর্ঘটনাক্রমে তাদের যদি পতন ঘটে, তবে এই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে তারা লাভবান হতে পারবে। আইনটি পাস করার পরে নাগরিক সাধারণ আশা করেছিল কমিশন গঠন প্রক্রিয়াটি আর না হোক আনুষ্ঠানিক হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম ইসি গঠনের নামে আরেক তেলেসমাতি। অবশেষে জানা গেল প্রায় সাড়ে ৩০০ লোকের নাম জমা হয়েছে। হাসির ব্যাপার এই যে, লোকজন নিজেরা হাজির হয়ে নিজের নাম নিজেই প্রস্তাব করেছে। পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী, এদের মধ্যে বড় বড় লোকজন রয়েছে। ছোট সময়ে মায়ের কাছে শিখেছিলাম ‘আপনাকে বড় বলে, বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়’।
এখন দিনকাল পাল্টে গেছে। তারপরও কিছু লোক আছে যারা আত্মসম্মান জ্ঞান রাখেন। নির্বাচন কমিশন যে একটি লোভনীয় জায়গা নয়, বরং বড় ধরনের দায়িত্ব সেটি বিজ্ঞ নাগরিকরা বোঝেন। প্রবাদবাক্যটি এ রকম ‘বিজ্ঞজনরা যেখানে ভয় পান, বোকারা সেখানে দৌড়ে যায়’। বিগত হুদা কমিশন অবশ্য প্রমাণ করেছে, এটি সুখ-সুবিধা ও তল্পিবাহকের জায়গা। সরকারের উমেদারি করতে পারলে সোনাদানার অভাব নেই। এত চাপের মধ্য দিয়ে এত প্রক্রিয়ার পরে যে কমিশন গঠিত হচ্ছে তা ঠুঁটোজগন্নাথ হবে এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, এ সবই ভোজবাজি। যারা দায়িত্বে আসবেন তাদের নামধাম আগেই ঠিক করা আছে।
যেকোনো প্রক্রিয়ার দু’টি দিক আছে- একটি তাত্ত্বিক, অপরটি ব্যবহারিক। এখানে তাত্ত্বিক দিকটি হচ্ছে- সংবিধান ও বিধিবদ্ধ আইন। অপর দিকে, ব্যবহারিক দিকটি হচ্ছে- ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সরকারপ্রধানের ভূমিকা। আজকাল এ বিষয়টি অতিমাত্রায় আলোচিত হচ্ছে যে, বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী সরকারপ্রধান অপরিসীম ক্ষমতার মালিক। সংসদীয় ভাষায় বলা হয়- সংসদীয় একনায়কতন্ত্র। অপর দিকে ব্যবহারিক দিকটিও উপেক্ষণীয় নয়। বলা হয়, গণতন্ত্র একটি শাসন ব্যবস্থাই নয়, এটি একটি জীবনপদ্ধতি। সংবিধানে শক্ত করে লেখা থাকলেও যারা ব্যবহারিকভাবে এটি বাস্তবে প্রয়োগ করবেন- তারা যদি মনে গণতান্ত্রিক না হন তাহলে গণতন্ত্রের আচরণ কাক্সিক্ষত হতে পারে না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় ইলেকশন কমিশনকে সংবিধানিকভাবে স্বাধীন বলা হলেও আসলে যে তা অধীন অতীতের দু’টি কমিশন তা প্রমাণ করেছে। এখানে ব্যক্তির গণতান্ত্রিক মানস, সৎসাহস ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা যুদ্ধ হওয়ার আগেই আত্মসমর্পণের মানসিকতা রাখেন তাদের দিয়ে যুদ্ধ সম্ভব নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায়- ‘অধোস্তনের সংস্কৃতি’। অনেকে একে ‘প্যাট্রন ক্লায়েন্ট রিলেশন’ বা পোষ্যপোষক সম্পর্ক বলে ব্যাখ্যা করেন। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনতা দিলেও ব্যক্তির অধীনতা প্রদত্ত স্বাধীনতাকে অকার্যকর করে তোলে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন যে কায়দায় বা আদলে স্থাপিত হোক তা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকে নিশ্চিত করবে না।
আসলে রোগের চিকিৎসা হেথা নয়, হোথা নয়- অন্য কোথাও। বিগত বছরগুলোতে প্রমাণিত হয়েছে, রাজনৈতিক সরকারের সদিচ্ছা না হলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তৃতীয় বিশ্বের মাত্রায় এ সরকারগুলো কারসাজি করে এবং শক্তির মদমত্ততায় পার পেয়েও যায়। বাংলাদেশের উদাহরণ এ রকম যে, একজন এরশাদ তার প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে বোগাস ইলেকশন করতে পারেন। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সাংবিধানিক রূপ দেয়ার জন্য একটি কৃত্রিম নির্বাচন করা সম্ভব। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রদর্শন সম্ভব ছিল। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দেয়া আরেকটি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি।
২০১৮ সালে নিশীথ রাতের নির্বাচন ঠেকানো যায়নি। বলা হয়েছিল- আমায় বিশ্বাস করুন। ক্ষমতার প্রয়োজনে বিশ্বাস রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচন কেমন হবে অতীত থেকে তা অনুমান করা যায়। একেকবার তারা একেক কৌশল অবলম্বন করে। এ নিয়ে তাদের নাকি গবেষণা-পরিকল্পনা রয়েছে। একটি কথা খুব ভাইরাল হচ্ছে- তাদের পরিকল্পনা অনুমান করা অসাধ্য। যদি অভূতপূর্ব, অস্বাভাবিক মন্দ কৌশল বা প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় তাহলে পেরে ওঠা কঠিন। কথায় বলে, ন্যাংটার নাই বাটপাড়ের ভয়। বামরা বলেন, সর্বহারার হারানোর কিছু নেই। যাদের ন্যায়-নীতি কিছু নেই তারা সবকিছু করতে পারে। এখন কেউ যদি আপনার সামনে কাপড় খুলে ফেলে তা অনুমান করা যেমন কঠিন, তেমনি বাংলাদেশের ২৩ সালের নির্বাচন কৌশল নির্ণয় করা কঠিন।
ক্ষমাতাসীন রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র দাবি করছে, আগামী নির্বাচনে তারা চমক দেখাবে। ওবায়দুল কাদের এই সে দিনও বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তারা অবশ্যই জয়লাভ করবেন। এরশাদ আমলের একটি গল্প মনে পড়ছে। কথা হচ্ছিল নির্বাচনের প্রকারভেদ নিয়ে। এরশাদের একজন বড় চামচা নির্বাচনকে ব্যাখ্যা করেছিলেন চার রকমে- ১. ইলেকশন বাই ইলেকশন- প্রকৃত নির্বাচন; ২. ইলেকশন বাই কালেকশন- সন্ত্রাস ও মাস্তানির মাধ্যমে সংগ্রহীত ভোট; ৩. ইলেকশন বাই ডিক্লারেশন- ভোট যা-ই হোক না কেন অবশেষে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ফলাফল পাল্টে দেয়া; ৪. ইলেকশন বাই নমিনেশন- কোনো কিছুরই দরকার নেই, যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তিনিই নির্বাচিত ঘোষিত হবেন।
এখন ২০২৩ সালে কী কেরামতি দেখা যাবে তা অবশ্যই গবেষণার বিষয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল দাবি করছে- অতীতের নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন কৌশল ছিল। এবার প্রকৃত রাজনৈতিক দলগুলোকে অংশগ্রহণ করতে না দেয়ার কৌশল অবলম্বন করা হতে পারে। ছলে বলে কলে কৌশলে নিবন্ধনভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে দূরে রাখা হবে। নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন হতে থাকবে। তাদের দিয়ে খালি মাঠ পূর্ণ করা হতে পারে। অথবা এই সংসদের শেষ সময়ে বাকশাল জাতীয় কোনো ঘোষণা আসতে পারে। শাহরিয়ার কবিরদের এই কয়েক দিনের আলোচনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির নাম দিয়ে রাজনীতিকে আরো সঙ্কুচিত করা হতে পারে। আরেকটি অভাবনীয় ঘটনা ঘটতে পারে, আর তা হচ্ছে- সংসদের শেষ অধিবেশনে এর মেয়াদকাল আরো চার বছর বাড়িয়ে নেয়া হতে পারে। এটা হবে তখনই যখন নির্বাচন করা অসম্ভব করে তুলবে বিরোধী দল ও সিভিল সোসাইটি। তাদের জন্য এটি হবে শেষ অস্ত্র। অবশেষে এটি তাদের জন্য বুমেরাংও হতে পারে। উল্লেখ্য যে, মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো দেশে এ রকম উদাহরণ রয়েছে।
আগামী নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে হলে সরকার পরিবর্তন ব্যতীত তা যে সম্ভব নয় তা বোধ হয় স্পষ্ট হয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনে কে এলো-গেল সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা। এ সরকারটি যে নামেই পরিচিত হোক- তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জাতীয় সরকার অথবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাতে দোষ নেই। ক্ষমতাসীনদের প্রতিনিধিত্বও থাকতে পারে। তবে সরকারের নেতৃত্ব থাকতে হবে অন্য কারো হাতে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আরো ধারণা করে, আন্দোলনের মাধ্যমে যদি পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে ওঠে তাহলে তাদের বুদ্ধিজীবীরাই জাতীয় সঙ্কট উত্তরণের কথা বলে জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা দেবে। জাতীয় সরকারটি সংসদীয় কাঠামোর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা সম্ভব। অপর দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে আবারো প্রস্তাবনাটি সংযোজিত হতে হবে। আর নির্বাচনকালীন সরকারের ফর্মুলা জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে গৃহীত হতে পারে।
কথা বলা যতটা সহজ কাজ ততটা সহজ নয়। নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আন্দোলন ব্যতীত আর কোনো উপায় নেই। বিরোধী দলগুলোকে স্লো বাট স্টেডি অর্থাৎ ধীর অথচ গতিশীল নীতি অবলম্বন করতে হবে। প্রথমত, নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিটি ক্রমেই জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিশেষজ্ঞ দিয়ে এর কাঠামো ও প্রক্রিয়া পরিষ্কার করতে হবে। তৃতীয়ত, তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজধানী পর্যন্ত আন্দোলন বেগবান করতে হবে। চতুর্থত, দল ও মত নির্বিশেষে সিভিল সোসাইটিকে সক্রিয় করতে হবে। পঞ্চমত, ডান-বাম পূর্ব-পশ্চিম সব রাজনৈতিক দল ও জোটকে এই দাবির সপক্ষে অভিন্ন কর্মসূচি ও আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন একটি মডেল হতে পারে। শতধাবিভক্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যের’ সূত্র নিশ্চিত করতে হবে। পেশাজীবী সম্প্রদায়কে একত্রে পেতে হবে। এভাবে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করতে পারলে নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা কঠিন কিছু হবে না বলে রাজনৈতিক মহলের বিশ্বাস। সরকার ঘরে ও বাইরে যে চাপের মুখে আছে তাতে উত্থিত কোনো গণ-আন্দোলনকে অবদমন সম্ভব না-ও হতে পারে। আগামী দু’বছর সময়কে কুশলতার সাথে ব্যবহার করে সফলতার প্রান্তসীমায় পৌঁছে দিতে হবে। শিগগিরই একটি বৃহত্তর ঐক্যের সূচনা হবে বলে আশা করা যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি সচেতন নাগরিককে যার যার অবস্থান থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]