তুর্কমেনিস্তানের দারভাজা নামের একটি এলাকায় রয়েছে বিশাল গর্ত। সেই গর্ত থেকে দিন–রাত জ্বলে আগুন। ‘দারভাজা গ্যাস ক্র্যাটার’নামের স্থানটি ‘নরকের দরজা’ নামে ব্যাপক পরিচিত। পর্যটকদের কাছে স্থানটি দারুণ জনপ্রিয়। কিন্তু স্থানটি চিরদিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বেরদিমুখামেদভ। তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির বুকে গর্তের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা ওই আগুন নিভিয়ে ফেলারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট বেরদিমুখামেদভ বলেন, তিনি দারভাজার প্রাকৃতিক গ্যাসের আগুনের মুখ বন্ধ করতে চান। স্থানীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হারাচ্ছি। এই সম্পদ থেকে আমরা উল্লেখযোগ্য মুনাফা অর্জন করে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারি।’ প্রেসিডেন্ট বলেন, এ আগুনের কারণে, পরিবেশ ও এর আশপাশে বসবাস করা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মধ্য এশিয়ার দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। গ্যাস থেকেই দেশটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় হয়।
জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নরকের দরজা’খ্যাত এ জায়গাটি তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। গর্তটি ১৯০ ফুট প্রশস্ত এবং ৭০ ফুট গভীর।
তুর্কমেনিস্তানের স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলে বলেছে, গর্তটি প্রথম ১৯৭১ সালে সৃষ্টি হয়েছিল। সোভিয়েত ভূতাত্ত্বিকেরা বিশাল কারাকুম মরুভূমিতে একটি প্রাকৃতিক গ্যাসের গর্ত খনন অভিযানের সময় এটি সৃষ্টি হয় বলে অনেকের বিশ্বাস। পরে তাঁরা দাবি করেন, ভুলবশত এটি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারেননি। স্থানীয় ভূতাত্ত্বিকদের ধারণা, ১৯৬০ সালের দিকে এই গর্ত তৈরি হয় এবং ১৯৮০ সাল থেকে এখানে আগুন জ্বলতে শুরু করে।
এর আগে ২০১০ সালেও এই গর্তের আগুন নেভানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বেরদিমুখামেদভ। ২০০৬ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি।
তুর্কমেনিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীকে আগুন নেভাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগুন নেভাতে বিজ্ঞানীদের একত্র করতে বলা হয়েছে তাঁকে। প্রয়োজনে বিদেশি পরামর্শকদের সাহায্য নিয়ে এর সমাধান বের করতে বলা হয়েছে।