- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ০৬ জানুয়ারি ২০২১
‘শাসনতন্ত্র আসমানি কিতাব নয়’ বলেছিলেন তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের শেষ প্রান্তে জনগণের দাবিকে স্বীকার করে তিনি শাসনতন্ত্র তথা সংবিধান সংশোধন করতে সম্মত হন। কারণ তিনি যে সংবিধান দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে জনগণের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছিল। ওই সংবিধান জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়। তবে তিনি দেশকে উন্নয়ন দিয়েছিলেন। গর্ব করে পালন করেছিলেন ‘উন্নয়নের এক দশক’। তার কথিত উন্নয়নের গণতন্ত্রের নাম দিয়েছিলেন ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ অর্থাৎ আদি আসল নির্ভেজাল গণতন্ত্র। যখনই খাঁটি দুধ বলা হবে, তখনই বুঝতে হয় যেন দুধে ভেজাল আছে। আইয়ুব খান সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রবর্তন করেছিলেন অসাধারণ তন্ত্র। তখন মাত্র কিছু মানুষের ভোট ছিল। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার ছিল না। এখন যেটা গায়ের জোরে চলছে তখন তার সাংবিধানিক বৈধতা ছিল। যখন আইয়ুব সংবিধান সংস্কার করে জনগণের ভোট ফিরিয়ে দিতে চাইলেন তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্ন’-এ পৌঁছে গেছে রাজনীতি। যদি অতি বুদ্ধিমান আইয়ুব খান জনগণের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করতেন আরো কিছুকাল হয়তো তিনি ক্ষমতায় থাকতেন। আর তার দেশের ভাঙনও অত ত্বরান্বিত হতো না।
বিজ্ঞজনরা বলেন, জনগণ যখন এগিয়ে চলেছে তার সাথে তাল মিলিয়ে সংবিধান যদি চলতে না পারে ‘বিপ্লব হয়ে পড়ে অনিবার্য’। সময়োপযোগী সংস্কার বিপ্লবকে আত্মস্থ করে। বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তন হয়েছে বা সংশোধন হয়েছে ১৭ বার। কিন্তু জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সাথে সঙ্গতি রেখে তা করা হয়েছে খুব কমই। বরং শাসক শ্রেণীর স্বার্থে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার মানসেই তা করা হয়েছে। এতদ্দেশীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে সঙ্গতভাবেই সংবিধান ‘দুষ্পরিবর্তনীয়’ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের দশম ভাগের অনুচ্ছেদ ১৪২ (আ) বলা হয়েছে, ‘সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত না হইলে অনুরূপ কোন বিলে সম্মতি দানের জন্য তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইবে না।’ সংবিধানপ্রণেতারা ‘দুই-তৃতীয়াংশ’কে কঠিন মনে করেছেন। কিন্তু দেশের জনগণের মনস্তত্ত্ব হচ্ছে- যে রাজনৈতিক দল বা জোটকে তারা ভোট দেয়, উজাড় করেই দেয়। তাই সবসময়ই সংশোধনী আনতে দলগুলোকে বেগ পেতে হয়নি। অবশ্য এই সময়ে শাসকদলের জয় পেতে জনগণের ভোটের দরকার হয়নি। ‘আমার ভোট আমি দেবো; যাকে খুশি তাকে দেবো’ এর বিপরীত ‘আমার ভোট আমি দেবো, তোমার ভোটও আমিই দেবো, যত খুশি দলকে দেবো’- এ নীতির বাস্তব প্রয়োগের কারণে সংবিধানের যখন তখন পরিবর্তনে শাসকদলের অসুবিধা হয়নি।
ভোট থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে শুধু কর্তৃত্ববাদী নয়, বরং সর্বাত্মকতাবাদী প্রবণতার কারণে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে। শাসকদলের বিগত এক যুগের বিভিন্ন পর্যায়ে এ অনুভবের প্রকাশ দেখা গেছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের ব্যানারে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়। বলা হয়েছিল, ‘ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে সংবিধান সংশোধন জরুরি’ (প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১৫)। তারা একটি সংবিধান সংশোধন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন। এর আগে ২০১৩ সালে গণতান্ত্রিক আইন ও সংবিধান আন্দোলন নামের ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামক গ্রুপটির বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রচলিত সংবিধানের খোলনলচে পাল্টে দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন (প্রথম আলো, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬)। দেশের শীর্ষস্থানীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মরহুম প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ সংবিধান সংশোধনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করেন (নয়া দিগন্ত, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের তিনটি শাখার মধ্যে সাম্যাবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ভাবতে হবে’। প্রফেসর এমাজউদ্দীন সাতটি কার্যব্যবস্থার সুপারিশ করেন। এগুলো হচ্ছে- ১. একই ব্যক্তি একই সাথে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনে বিরত থাকা; ২. রাষ্ট্রপতির নামে যেসব কর্মকর্তার নিয়োগ ও পদচ্যুতি ঘটে, সে পদগুলোর পুরো দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রপতিকে দেয়া। এ পদগুলো হচ্ছে- নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান-সদস্য ও উপাচার্যবৃন্দ। এতে কিছুটা হলেও ক্ষমতার ভারসাম্য অনুভূত হতে পারে। প্রফেসর এমাজউদ্দীনের এই প্রস্তাবের সাথে আরেকটু যোগ করতে চাই। যেহেতু রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর হিসেবে কাজ করেন, তাই পুরো উচ্চশিক্ষা বিভাগকে তার অধীনে ন্যস্ত করা; ৩. সংবিধানের ৭০ ধারাকে নমনীয় করা। ‘অনাস্থা প্রস্তাব ব্যতীত’ অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা; ৪. রাষ্ট্রপতির প্রথাগত ভাষণ তিনিই লিখবেন, ক্ষমতাসীন দল নয়; ৫. ‘জনগণই ক্ষমতার উৎস’ এর প্রায়োগিক যথার্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রেফারেন্ডাম বা গণভোট গ্রহণ; ৬. সংবিধানের ৪৮(৫) অনুচ্ছেদকে পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি যেন জাতীয় সঙ্কটকালে প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারকে পরামর্শ দিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা। প্রফেসর এমাজউদ্দীনের ওই প্রস্তাব কার্যকর হলে ৪৮(৩) ধারার এই অংশ রহিত করতে হবে, যেখানে বলা হয়েছে- ‘তবে শর্ত থাকে যে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোন পরামর্শ দান করিয়াছেন কি না এবং করিয়া থাকিলে কি পরামর্শ দান করিয়াছেন কোন আদালত সেই সম্পর্কে কোন প্রশ্নের তদন্ত করতে পারিবেন না।’ এ ছাড়া রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতায়িত করতে ৪৮(৫) ধারার শেষ অংশ সংশোধন করতে হবে। এখানে বলা হয়েছে- ‘এবং রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করিলে যেকোনো বিষয়ে মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য পেশ করিবেন।’ বিষয়টি ঐচ্ছিকের পরিবর্তে আবশ্যিক করলে এই সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে আরো ক্ষমতায়িত করা যায়; ৭. সপ্তম প্রস্তাবে প্রফেসর এমাজউদ্দীন মূলত ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’-এর উন্নয়নের কথা বলেছেন। বিষয়টি সংবিধানে কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা পর্যালোচনার বিষয়। কারণ রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও কার্যাবলি- ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ নির্মাণ করে থাকে। আর তা প্রায়োগিকভাবে নির্ণয় করা সহজ নয়।
আমরা আগেই বলেছি, বাংলাদেশের সংবিধান সুস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট ও লিখিত উৎকৃষ্ট সংবিধানগুলোর একটি। কিন্তু এর প্রায়োগিক কার্যকারিতা শূন্য। গরু ‘খাতায় আছে, গোয়ালে নেই’। এরকম অবস্থা কেন?
এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ : তাত্ত্বিক ও বাস্তবিক- উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণের অবকাশ রয়েছে। অনেকে নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি, সমাজ বৈশিষ্ট্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আস্থা-বিশ্বাসের অভাব ও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। দেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলই ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের সুযোগ পেয়েও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বিএনপি ১৯৯৬ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে। একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান সংবিধানে সংযোজন করে। অপর দিকে নিজেদের আন্দোলনের ফলপ্রসূ ওই সংযোজনকে রায়ের দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগ বাতিল করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ শুধু এবং শুধু ক্ষমতার সোপানকে নির্বিঘ্ন করার জন্য এই একক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশের বিগত ৫০ বছরের ইতিহাসে এরকম বিপর্যয়কারি পদক্ষেপ ও সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আর কোনো ক্ষেত্রেই ঘটেনি।
বিগত ৫০ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আলোচিত-সমালোচিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব ছিল- ১. বিসমিল্লাহ সংযোজন বিতর্ক; ২. রাষ্ট্রধর্ম; ৩. নাগরিকত্ব; ৪. সংশোধনের অযোগ্য বিষয়াবলি; ৫. রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিসমূহ; ৬. উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ইত্যাদি বিষয়; ৭. গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ; ৮. দায়মুক্তির ক্ষমতা; ৯. প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা; ১০. স্থানীয় শাসন; ১১. সংবিধানের ৭০ ধারা- ‘রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোট দানের বিষয়’; ১২. সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী; ১৩. বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন; ১৪. সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ; ১৫. নির্বাচনব্যবস্থাপনা- এ বিষয়গুলো কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বা সংস্কার প্রয়াসের অন্তর্ভূক্ত নয়। যে বিষয়গুলো রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত ও বিতর্কিত হয়েছে- সেগুলোই এখানে উল্লেøখ করা হলো।
এ ক্ষেত্রে এ পরিসরে বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ সীমিত। তবে দু-একটি বহুলালোচিত সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যে মতামত প্রকাশিত হয়েছে তা উল্লেখ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ : রাষ্ট্রপতি সর্বসাধারণ কর্তৃক নির্বাচনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে প্রয়াত প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ তার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্ষমতা ও ব্যক্তিত্বের সঙ্ঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ২০১৫ সালে উত্থাপিত, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ালে রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হবে’। তখন এ কথাও বলা হয় যে, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে তা রাজনীতিতে সামরিক হস্তক্ষেপের সহায়ক হতে পারে। ওই সময়ে বিবিসি সংলাপে অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মন্তব্য করেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্র না থাকলে শুধু সংবিধান সংশোধন করে লাভ হবে না।’ সংবিধানের আরেকটি আলোচিত ধারা ৭০। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতারা সম্ভবত অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে এটি সংযোজন করেছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের পরে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ রীতিমতো ‘হর্স ট্রেডিং সেন্টার’-এ পরিণত হয়। এতে সকাল-বিকেল মন্ত্রিসভার উত্থান-পতন হতে থাকে। ১৯৪৭ থেকে ৫৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের গণপরিষদ এবং জাতীয় পরিষদেও একই প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার শাসন পরিষদে একই দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছিল। অভিজ্ঞতার আলোকে বেশির ভাগ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ৭০ ধারার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। তবে প্রফেসর এমাজউদ্দীন শুধু সরকার পতনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭০ ধারার কার্যকারিতার কথা বলেছিলেন।
এ কথা অনস্বীকার্য, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কমপক্ষে রাষ্ট্রপতির পদকে অর্থপূর্ণ ও মর্যাদামণ্ডিত করা প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট কর্তৃক পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার ক্ষমতার অপপ্রয়োগ পাকিস্তানে এবং বর্তমানের এই সময়ে নেপালে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। ভারসাম্য সৃষ্টির জন্য আলোচিত প্রস্তাবাবলি বিবেচনায় নেয়া যায়। ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণের সাথে সাথে আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে বিভাজন রেখা নিশ্চিত হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বহুল কথিত ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ বা ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত হতে পারে। সংবিধানের যেকোনো সংশোধনী হতে হবে জনগণের স্বার্থে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থে। কাউকে ক্ষমতায় আরোহণ বা অবরোহণের জন্য সংবিধান সংশোধন কাম্য নয়। জনগণের কল্যাণ ও ন্যায়বিচারের স্বার্থেই সংবিধান সংশোধনী বা সংস্কার ঈপ্সিত। ইতঃপূর্বে ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞান গ্রুপ’-এর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঔপনিবেশিক কাঠামোর ওপর নির্মিত এই সংবিধান। ধনিক-বণিক শ্রেণীর স্বার্থ ও সুবিধার জন্য এর ব্যবহার। এ ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন ব্যতীত নেই কোনো গত্যন্তর। জনগণের আশা, সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত হোক সব সংস্কার।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]