- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ জানুয়ারি ২০২১
বিএনপি নেতাদের নেতিবাচক কথা এবং রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড: হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা প্রতি বছরের শুরুতেই আমাদেরকে হটিয়ে বাংলাদেশে তারা ক্ষমতায় আসবেন-এ কথাটি বলেন। আসলে উদ্দেশ্য তা নয়, সবসময় দেশে গণ্ডগোল পাকানোর উদ্দেশ্য তাদের থাকে এবং ওই গণ্ডগোলের মধ্যে তারা পানি ঘোলা করে মাছ শিকার করার অপচেষ্টা করে আসছে। তাদের এই হুমকি-ধামকি, অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে।’
হাছান মাহমুদ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শেখ রাসেল অনূর্ধ্ব-১১ চ্যালেঞ্জ কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য সম্পর্কিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
ইংরেজি ২০২১ সালের প্রথম দিনে দেশবাসীর পাশাপাশি বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা পৃথিবীর মানুষ স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারিনি, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা হচ্ছে নতুন বছরে যাতে খুব সহসা আমরা স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারি, আবার আগের পৃথিবীতে ফেরত যেতে পারি।’
ড: হাছান বলেন, ‘নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা থাকবে বিএনপি এতো দিন ধরে যে নেতিবাচক এবং মানুষকে জিম্মি করার রাজনীতি এবং মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করাসহ ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে এসেছে, তা থেকে বেরিয়ে এসে তারা ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফেরত আসবে।’
অনুষ্ঠানে খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিশু-কিশোররা যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত আসক্তির মধ্যে নিমজ্জিত হচ্ছে, এটি তাদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিশু-কিশোররা যাতে সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে, তাদের মনন ও মেধা বিকশিত হতে পারে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা হতে পারে সে জন্য কিন্তু খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখন খেলাধুলা সীমিত হয়ে গেছে, কারণ মাঠও সীমিত হয়ে গেছে। আমাদের আরো খেলাধুলার মাঠ বাড়াতে হবে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুরোধ জানাবো কিছু মাঠ বাড়ানোর জন্য। সম্ভব হলে ওয়ার্ডভিত্তিক মাঠ তৈরি করা গেলে ছেলে-মেয়েদের খেলার সুযোগ তৈরি হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার ক্রীড়ামোদী ও সংস্কৃতিমনা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছেন। তার হাত ধরেই আমাদের নারী যুব ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নিজেও খেলোয়াড় ছিলেন, তিনি ফুটবল খেলতেন। বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলে পড়তেন তখন তার বাবার নেতৃত্বে টিম আর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে টিমের মধ্যে খেলা হয়েছিল, ওই খেলায় বঙ্গবন্ধুর টিম তার বাবার টিমকে হারিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দুই ছেলে শেখ কামাল ও শেখ জামাল খেলোয়াড় ছিলেন। শেখ কামালের নবপরিণীতা বধু সুলতানা কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা নারী ক্রীড়াবিদ ও অ্যাথলেট ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহেশখালি কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আলী আব্বাস।
শেখ রাসেলের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অনূর্ধ্ব-১১ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। টুর্নামেন্টে ১০টি টিম অংশ নেয়। প্রত্যেকটি টিমের নামকরণ করা হয় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে নিহতদের নামানুসারে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় সুলতানা কামাল ক্রিকেট একাডেমি ও শেখ ফজলুল হক মণি ক্রিকেট একাদশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এতে শেখ ফজলুল হক মণি ক্রিকেট একাদশ চ্যাম্পিয়ন ও সুলতানা কামাল ক্রিকেট একাডেমি রানার্স আপ হন।
সূত্র : বাসস